ভারতসেরা মোহনবাগান।
মোহনবাগান-২ মুম্বই সিটি-১
(লিস্টন, কামিন্স) (ছাংতে)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লিগ শিল্ডের রং সবুজ-মেরুন। যুবভারতী জুড়ে শুধুই মোহনবাগান (Mohun Bagan) আর মোহনবাগান। ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে আবেগের বিস্ফোরণ। তাঁরা গান গাইছেন। হাসছেন। সব পেয়েছির দেশের বাসিন্দা তাঁরা।
প্রথমবার লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হল মোহনবাগান। বাংলার প্রথম ক্লাব হিসেবে ইতিহাসও গড়ল সবুজ-মেরুন। তাদের গর্বের ইতিহাসে আরও একটি পালক যোগ হল। রেফারির শেষ বাঁশির পরে লিস্টন ছুটছেন, সাদিকু গ্যালারির দিকে তাকিয়ে হাত ছুড়ছেন। মোহনবাগান সমর্থকদের চোখে আনন্দশ্রু। হাবাসকে জড়িয়ে ধরেছেন খেলোয়াড়রা। গ্যালারিতে কামিন্স ও সাদিকুর বড় কাট আউট। তাতে লেখা শোলে। মোহনবাগানের জয় আর বীরুর মুখে হাজার ওয়াটের আলো।
সোমবারের মোহনবাগান-মুম্বই সিটি ম্যাচ কাউকো-মনবীরদের কাছে ছিল কার্যত ফাইনাল। আরও ভালো করে বললে, শেষের তিনটি ম্যাচই ছিল মোহনবাগানের কাছে কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল আর ফাইনাল। তিনটি ম্যাচ দাপটের সঙ্গে জিতে মোহনবাগান ভারতসেরা হল। এই ম্যাচের বল গড়ানোর আগে থেকেই আত্মবিশ্বাস খেলা করছিল মনবীরদের মনে। কাউকোরা বলেছিলেন, বাকি তিনটি ম্যাচ জিতলেই আমরা লিগ শিল্ড জিতে নেব। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন হাবাসের ছেলেরা।
যুবভারতীর সবুজ ঘাসে বল গড়ানোর আগে মুম্বই সিটি এফসি দুপয়েন্টে এগিয়ে ছিল মোহনবাগানের থেকে। ড্র করলে মুম্বই-ই লিগ শিল্ড জিতবে। এমন অবস্থায় হাবাসের ছেলেরা উজ্জীবিত ফুটবল খেললেন। অসুস্থতা সারিয়ে স্প্যানিশ কোচ এদিন মোহনবাগানের ডাগ আউটে ছিলেন। তিনি-ই এই দলের আসল চালিকা শক্তি। আরও একবার তা প্রমাণ হয়ে গেল। রেফারির শেষ বাঁশির পরে হাবাস শূন্যে হাত ছুড়লেন।
দিনের শুরু দেখে বোঝা যায় দিনটা কেমন যাবে। খেলার ১৯ মিনিটেই লিস্টন এগিয়ে দিতে পারতেন মোহনবাগানকে। তাঁর হেড মুম্বইয়ের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। সেই যাত্রায় লিস্টন ব্যর্থ হলেও তিনিই এগিয়ে দেন মোহনবাগানকে।
খেলার বয়স তখন ২৮ মিনিট। মুম্বইয়ের পেনাল্টি বক্সের ভিতরে বল ধরে মেহতাব সিংকে নিয়ে ছেলেখেলা করলেন লিস্টন। তার পরে ডান পায়ের শটে মুম্বইয়ের জাল কাঁপান। ম্যাচের রাশ মোহনবাগানের হাতে তখন। বিরতির আগে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন মুম্বইয়ের ছাংতেও। তিনি সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন।
বিরতির পরে মুম্বই ঝাঁপিয়ে পড়বে, এটা অনুমান করেছিলেন হাবাস। তাঁর দল সব ধরনের চ্যালেঞ্জের জন্যই তৈরি ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে সাদিকু ও কাউকোকে তুলে নিয়ে কামিন্স ও হ্যামিলকে নামান হাবাস। সেটাই মাস্টারস্ট্রোক হয়ে যায়। হ্যামিল লাল কার্ড (দ্বিতীয় হলুদ কার্ড) দেখলেও কামিন্সই ২-০ করে যান। পেত্রাতোসের কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ে দুর্দান্ত রিসিভ করেন অজি তারকা। তার পরে ডান পায়ে দুরন্ত ফিনিশ।
দ্বিতীয় গোলের মুভমেন্ট ছিল ছবির মতো। বাঁ দিক থেকে খেলা সম্পূর্ণ ডান দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন পেত্রাতোস। তিনিই এই দলটার হৃৎপিণ্ড। এবারের মরশুমে পেত্রাতোস একাই বহু ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কামিন্সের ওরকম গোল দেখার জন্য কয়েক মাইল পথ হাঁটা যায়।
৮৯ মিনিটে ছাংতে ব্যবধান কমান মুম্বইয়ের হয়ে। কিন্তু এই মোহনবাগানকে রোখে কার সাধ্যি। যুবভারতীতে নামল এক মায়াবী রাত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.