Advertisement
Advertisement
East Bengal

কোন মন্ত্রে ডার্বি জিততে পারে ইস্টবেঙ্গল? এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে অকপট সমর্থকদের প্রিয় আলে ‘স্যর’

আইএসএলে প্রথম ছয়ে থাকতে পারবে ইস্টবেঙ্গল? খুব একটা 'আশাবাদী' নন প্রাক্তন কোচ আলেজান্দ্রো মেনেন্দেজ।

ISL 2024: Former coach Alejandro Menendez opens up about East Bengal before Derby
Published by: Arpan Das
  • Posted:October 17, 2024 9:07 pm
  • Updated:October 17, 2024 9:36 pm  

অর্পণ দাস: ময়দানে কোনও কিছুই স্থায়ী নয়। তবু কিছু জিনিস যেন সেন্টার সার্কেলের মতো বৃত্ত সম্পূর্ণ করে। পছন্দ না হলেও মেনে নিতে হয় এই সত্য। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কাছেও যেন ছবিটা সেরকমই। মরশুম শুরু হতেই টানা ব্যর্থতা। বিদায় নিয়েছেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। যিনি ছিলেন লাল-হলুদ ভক্তদের ‘প্রফেসর’। অথচ কত স্বপ্ন, আশা-ভরসা ছিল তাঁকে ঘিরে। ঠিক সেরকমই ছিল আরেকজনকে নিয়ে। তিনিও এখন প্রাক্তন। কুয়াদ্রাতের স্বদেশি। তিনি আলেজান্দ্রো মেনেন্দেজ গার্সিয়া। আইএসএলের প্রথম ডার্বির আগে তিনি মুখ খুললেন সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের কাছে।

দেশ ছাড়াও দুজনের মধ্যে আরও মিল রয়েছে। দুজনেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কুয়াদ্রাত যদি সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন করেন, তাহলে আলে ‘স্যর’ নিয়ে গিয়েছিলেন আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দোরগোড়ায়। প্রথমজনের হাত ধরে বহু বছর পর ডার্বি জয়। দ্বিতীয়জন আই লিগের দুই লেগেই ডার্বিতে জয় এনে দিয়েছিলেন। আরও একটা মিল রয়েছে। ইস্টবেঙ্গলে দুজনের অধ্যায়ই ভালোভাবে সমাপ্ত হয়নি।

Advertisement

অথচ সামনেই ডার্বি। অতীত ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ইস্টবেঙ্গল। কীভাবে সেটা সম্ভব? পথ খুঁজছেন ভক্তরা। তার আগে আলেজান্দ্রো জানালেন, “সবার আগে দরকার দলের মানসিকতা বদলানো। ক্রমাগত হারতে থাকলে দলের মধ্যে একটা অস্থিরতা তৈরি হয়। ম্যাচ জেতার আত্মবিশ্বাসটা চলে যায়। সবার আগে সেটা কাটানো দরকার।”

কাজটা যে সহজ নয়, সেটা সবাই জানেন। অন্যদিকে মোহনবাগান আগের ম্যাচেই মহামেডানকে হারিয়ে উজ্জীবিত। ধারে-ভারে যে মোলিনার দল কিছুটা এগিয়ে রয়েছে, সেটা মানছেন লাল-হলুদ সমর্থকরাই। তবু ডার্বি সবসময়ই পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। একই কথা বলছেন আলে ‘স্যর’। তিনি জানালেন, “ডার্বি আর পাঁচটা ম্যাচের মতো নয়। এই ম্যাচে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় জয়ের খিদে। প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেব, এই সাহসটা থাকতে হয়। সেই সঙ্গে অবশ্যই ম্যাচের জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও প্র্যাকটিস তো লাগেই। তবে আসল হল ওই মানসিকতাটা।”

কিন্তু কীভাবে? কোন মন্ত্রে ঘুরে দাঁড়াতে পারে ইস্টবেঙ্গল? এমনিতে দলে গোলা-বারুদের অভাব নেই। তবুও তো আইএসএলে টানা চার ম্যাচে হারতে হয়েছে। আলেজান্দ্রোর মতে ইস্টবেঙ্গলকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করতে পারে একটাই শক্তি। সেটা হল সমর্থকদের আবেগ। তাঁর মতে, “এখান থেকে ইস্টবেঙ্গলকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারে সমর্থকদের আবেগ। সেটাই পারে ইস্টবেঙ্গলকে কামব্যাক করাতে। মাঠের মধ্যে তারা যে পরিবেশটা তৈরি করে, সেটা জয়ের খিদে আরও বাড়িয়ে দেয়। টিমকে সেটা বুঝতে হবে। সমর্থকদের জন্য জয়ে ফিরতে হবে।”

আর এই প্রসঙ্গ উঠতেই কি কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন আলেজান্দ্রো? সুদূর স্পেন থেকে তাঁর অনুভূতি টের পাওয়ার উপায় নেই। যে আবেগের স্রোতে এই মরশুমের আগে কুয়াদ্রাত ভেসেছিলেন, চার বছর আগে তার সাক্ষী ছিলেন আলেজান্দ্রো। ‘প্রফেসর’-র আগমনের আগে তিনিই ছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকদের ‘স্যর’। মাঝে অনেকেই এসেছেন। কিন্তু সেই সম্মানটা সম্ভবত কেউই পাননি। আলেজান্দ্রোও ভোলেননি ভক্তদের কথা। তিনি বললেন, “যদি কখনও ভারতে ফিরে আসি, তাহলে সমর্থকদের জন্যই ফিরব। তারাই ইস্টবেঙ্গলের ভিত্তি। আমার দলের আসল শক্তি ছিল তারাই। ফুটবলের ভাষায় বললে ‘নম্বর ১০’। ইস্টবেঙ্গল মানে আমার কাছে সেই সমর্থকরাই।”

তার মানে এই নয় যে, ইস্টবেঙ্গলকে ডার্বিতে এগিয়ে রাখছেন তিনি। আগের মতো এখনও তিনি বাস্তববাদী। ইস্টবেঙ্গল জিতবে, এটা তিনিও চান। আর সেটা সমর্থকদের জন্যই। আলেজান্দ্রো বললেন, “হতে পারে খারাপ সময় চলছে, কিন্তু ডার্বি সবসময় সমান-সমান। জয়ের তাগিদ, সাহস আর ওইদিন কীভাবে পারফর্ম করছে, এগুলোই ফারাক গড়ে দেয়। অবশ্যই চাইব সমর্থকদের জন্য ইস্টবেঙ্গল ডার্বি জিতুক। যাতে তারা খুশি হয়। ইস্টবেঙ্গলের প্রকৃত সম্পদ সমর্থকরাই।”

ডার্বির ফল যাই হোক না কেন, লিগ তো সেখানেই শেষ হয়ে যাবে না। লড়াইটা অনেক বড়। আইএসএলে সেরা ছয়ে থাকতে পারবে ইস্টবেঙ্গল? ‘সমাধান’ দিয়েও তিনি বললেন, “পরিস্থিতি খুবই জটিল। দ্রুত দলের খামতির জায়গাগুলো খুঁজে বের করতে হবে। লড়াইয়ের মানসিকতা জাগিয়ে তুলতে হবে। আইএসএল এমনিতে ছোট লিগ। সেখানে সবসময়ই কামব্যাক করা সম্ভব। তবে আমার মতে, ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ছয়ে থাকার কাজটা খুব কঠিন।”

কঠিন যে সেটা সমর্থকরাও জানেন। তবু আইএসলের প্রথম ডার্বিতে অনেক আশা নিয়েই যাবেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। সব শেষে আলেজান্দ্রো সেই কথাটাই বললেন, যা তাতাতে পারে সমর্থকদেরও, ‘জয় ইস্টবেঙ্গল’।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement