ডেভিড। ফাইল ছবি
দুলাল দে: আই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েও মহামেডান (Mohammedan SC) ছেড়ে ইস্টবেঙ্গলে চলে গিয়েছিলেন ডেভিড। এবার দলকে বাঁচাতে সেই ডেভিডকে ফিরিয়ে আনার জন্য ইস্টবেঙ্গলের শরণাপন্ন হচ্ছে মহামেডান স্পোর্টিং। যতদূর জানা যাচ্ছে, লাল-হলুদ কর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক একটা কথা হয়েও গিয়েছে মহামেডান কর্তাদের। তবে তা এখনও চূড়ান্ত রূপ পায়নি। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে ক্লাবের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে ঘোষণাও করে দেওয়া হবে।
পর পর ম্যাচ হারলে দলের মধ্যে বাক বিতন্ডা শুরু হবে সেটাই স্বাভাবিক। আর মহামেডান স্পোর্টিংয়ে এখন সেটাই শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, কোচ চেরনিশভকে এখনই ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া উচিত। কেউ কেউ বলছেন, কোচ কী করবেন। মহামেডান তো খারপ খেলছে না। কিন্তু দলে গোল করার মতো ফুটবলার না থাকলে কোচের পক্ষে তো ম্যাচ জেতানো সম্ভব নয়। সাম্প্রতিক যা অবস্থা, তাতে শুরুর দিকে কোচের পাশে শুধু ইনভেস্টর শ্রাচি গ্রুপ ছিল। এই মুহূর্তে ক্লাব সচিব ইস্তিয়াক আহমেদ ছাড়া মহামেডানের বাকি কর্তারা চেরনিশভের পাশেই রয়েছেন। ফলে পরের ম্যাচ হারলেও কোচের বিদায় ঘটবে এরকম হলফ করে বলা যায় না। কারণ, সকলেই মনে করছেন, কোচের হাতে আইএসএল খেলার মতো দল তুলে দেওয়া হয়নি। আর আইএসএলে কোচের হাতে দল তুলে দিয়েছে বাঙ্কারহিল। তাই আইএসএল খেলার মতো ভালো ফুটবলার সই না করানোর দায়ভারটা বাঙ্কারহিলকেও নিতে হবে।
খোঁজ খবর নিয়ে যা জানা যাচ্ছে, তাতে মানজোকি-সহ বহু ফুটবলারের সঙ্গেই দু’বছরের চুক্তি করে বসে আছে মহামেডান। ফলে এই মুহূর্তে মানজোকিকে বাদ দিয়ে নতুন কোনও বিদেশি ফুটবলার নিতে গেলেও আর্থিক সমস্যায় পড়তে হবে ইনভেস্টর শ্রাচি স্পোর্টসকে। কারণ, যাঁকেই ছাড়া হবে সেই ফুটবলারই ক্ষতিপূরণ চাইবেন। ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি নতুন ফুটবলারের বেতন, সব দিতে গেলে সমস্যায় পড়তেই হবে।
প্রথম বছরে মহামেডানের সঙ্গে শ্রাচি স্পোর্টসের চুক্তি রয়েছে ৩০ কোটি টাকার। যার মধ্যে এফএসডিএলের ৬ কোটির পাশাপাশি দলের জন্য আরও ৭ কোটি অর্থাৎ মোট ১৩ কোটি টাকা খরচ করে বসে আছে শ্রাচি। ফলে কেন এই মানের ফুটবলার দু’বছরের চুক্তিতে দলে নেওয়া হয়েছে, প্রশ্ন উঠছে শ্রাচির অন্দরেও। ক্লাবের শীর্ষকর্তাদের মধ্যে অনেকে বলছেন, ফুটবলারদের সঙ্গে আর্থিক চুক্তির বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে তদন্ত হওয়া উচিত। তাতে অন্যায় কিছু প্রকাশ হলে ক্লাবের তরফে পদক্ষেপ করা উচিত। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে বাঙ্কারহিলের পক্ষ থেকে সোশাল মিডিয়াতে নিজেদের অফিশিয়াল নোটিস বলে বিবৃতি প্রকাশ করে দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে শ্রাচির কর্নধার রাহুল টোডিও মারাত্মক বিরক্ত। বললেন, “আমরা চেষ্টা করছি, কীভাবে ভালো দল তৈরি করা যায়। এই সময় বাঙ্কারহিল নিয়ে ভেবে আমরা ফোকাস নষ্ট করতে চাই না।” বিদেশি ফুটবলার এই শর্তে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই নজর ভারতীয় ফুটবলারদের দিকেই।
ভারতীয় ফুটবলার খুঁজতে গিয়ে মহামেডান কর্তাদের মনে হয়েছে, গত মরশুমে মহামেডান দারুণ খেলে যাওয়া ডেভিড ইস্টবেঙ্গলের চুক্তিবদ্ধ ফুটবলার হলেও, নিয়মিত খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় ডেভিডকে যদি ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে দেয়, তাহলে মহামেডানে এসে নিয়মিত খেলতে পারবেন তিনি। গত মরশুমে চেরনিশভের কোচিংয়েও ডেভিড খেলেছেন। তাই কোচের সঙ্গে সম্পর্কও ভালো। সেই কারণেই ডেভিডকে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। তবে শুধুই ডেভিড নয়। আরও বেশ কয়েকজন ভারতীয় স্ট্রাইকারের সঙ্গে কথা চলছে মহামেডানের। খুব দ্রুতই সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.