পেত্রাতোস।
মোহনবাগান: ৩ (‘৭ পেত্রাতোস, ‘৬৮ জেসন কামিন্স, ‘৮১ সাদিকু)
জামশেদপুর: ০
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে গত ম্যাচে লড়াই করেও জয় আসেনি। তবে এবার ঘরের মাঠ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ঘুরে দাঁড়াল মোহনবাগান (Mohun Bagan)। ধারেভারে জামশেদপুর এফসি (Jamshedpur FC) একেবারে হেলাফেলা করার মতো দল নয়। তবে তাতে কি! সবুজ-মেরুন বাহিনী ফর্মে থাকলে, তাদের আটকে রাখা খুব কঠিন। সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের (Antonio Lopez Habas) দল। দিমিত্রি পেত্রাতোস (Dimitri Petratos), জেসন কামিন্স (Jason Cummings) ও আর্মান্দো সাদিকুর (Armando Sadiku) গোলে বিপক্ষের বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে জিতে, চলতি আইএসএলে (ISL 2023-24) লিগ টেবিলের দুই নম্বরে চলে গেল মোহনবাগান। বিপক্ষ একের পর এক আক্রমণ করলেও লাভ হল না। কারণ চিমা চুকুর দল যে বারবার ফাইনাল থার্ডে এসে আটকে যাচ্ছিল। সৌজন্যে আনোয়ার আলি-শুভাশিস বোসদের দুরন্ত ডিফেন্স।
মোহনবাগানে নিজের দ্বিতীয় ইনিংসকে ভুলতে পারবেন না জনি কাউকো। হাবাস আবার হটসিটে বসতেই ফিনল্যান্ডের জাতীয় দলের সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারকে ফিরিয়ে আনেন। স্প্যানিশ কোচের যে সিদ্ধান্ত যে সঠিক, সেটা কাউকোর পারফরম্যান্স বলে দিচ্ছে। প্রতি ম্যাচেই দাপট দেখাচ্ছেন সবুজ-মেরুনের ‘কামব্যাক কিং’। অবশ্য মনবীর সিংয়ের প্রশংসায়ও করতেই হবে। গোল করতে না পারলেও, দলের তিনটি গোলেই অবদান রেখেছিলেন পাঞ্জাব তনয়।
শুক্র সন্ধ্যায় প্রথম গোলটার কথা ধরুন। গোলদাতা হিসেবে পেত্রাতোসের নাম লেখা থাকলেও, আসল কাজের কাজটা করেছিলেন কাউকো। তিনিই জামশেদপুরের ডিফেন্সকে প্রথম ধাক্কা দেন। ডিফেন্স ভেঙে বল নিয়ে উপরে ওঠেন। গোলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মনবীর সিং-কে তিনি পাস বাড়ান। মনবীর আবার মুহূর্তের মধ্যে পেত্রাতোসকে বল বাড়ান। অস্ট্রেলিয়ান তারকা বল পেয়ে সোজা গোলে শট নেয়। ফলে অজি স্ট্রাইকারের গোলে সাত মিনিটেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় সবুজ-মেরুন।
৮ থেকে ৮০ 💚♥️
Watch ISL 2023-24 LIVE on Sports 18, VH1 & JioCinema!#MBSG #JoyMohunBagan #আমরাসবুজমেরুন #ISL10 #LetsFootball #ISLonJioCinema #ISLonSports18 pic.twitter.com/anPBGWdaQg
— Mohun Bagan Super Giant (@mohunbagansg) March 1, 2024
এর পর অবশ্য চুপ থাকেনি খালিদ জামিলের ফুটবলাররা। প্রথমার্ধেই চিমা চুকু তিন বার গোলের সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন। প্রথমবার রুখে দাঁড়ালেন আনোয়ার আলি। বিপক্ষের স্ট্রাইকারের ক্রস অনুমান করে, বল ক্লিয়ার করে দেন তরুণ ডিফেন্ডার। কিছুক্ষণ পর ফের আক্রমণ করেন চিমা। তবে সেবারও তাঁকে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছিল। কারণ দারুণ ব্লক করেন শুভাশিস বোস। এবং ৩৫ মিনিটে সবুজ-মেরুনকে বাঁচালেন বিশাল কাইথ। চিমা এবং মানজোরো সুন্দর পাস খেলে উপরে ওঠেন। এবং গোলের বড় সুযোগ পেয়ে যায় জামশেদপুর এফসি। চিমা একটি ব্যাকহিল দিয়ে মানজোরোর জন্য একটি নিখুঁত পাস বাড়িয়ে দেন। এর পর আরও একটি ব্যাকহিল দিয়ে মানজোরো পাস বাড়ান চিমার দিকে। সেই বল গোলে ঠিক করে বল রাখতে পারলেই সমতা ফেরাতে পারত জামশেদপুর। যদিও চিমার গোলার মতো বাঁচিয়ে দেন বিশাল কাইথ।
ডিফেন্ডাররা নিজেদের কাজ করে যাওয়ার মধ্যে, হাবাসের দলের কাছে ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ এসে গিয়েছিল। ১৫ মিনিটে লিস্টন অনবদ্য নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে বলটি নিয়ে আক্রমণে ওঠেন। তবে তাঁর শটে জোর ছিল না। জামশেদপুর গোলকিপার রেহেনেশ সহজেই বলটি সেভ করে দেন। ফলে সবুজ-মেরুনের ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া হয়।
লিড থাকলেও বিপক্ষ বারবার ফিরে আসার চেষ্টা করছিল। ঠিক তখনই অহেতুক হলুদ কার্ড দেখলেন দীপক টাংরি। বিপক্ষের এলসিনহোকে রাফ ট্যাকেল করেন দীপক। কার্ড দেখতেই হাবাস আর ঝুঁকি নিলেন না। বদলি হিসেবে অনিরুদ্ধ থাপাকে মাঠে নামিয়ে দেন। ফল এসেছিল হাতেনাতে। ৬৮ মিনিটে ফের এগিয়ে গেল মোহনবাগান। এবার গোলদাতা জেসন কামিন্স। মনবীর ওপেনিংয়ের জন্য কামিন্সের কাছে বল বাড়ান। কামিন্স বক্সের ভিতরে দুর্দান্ত রান করেন। রেহেনেশ তাঁর জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে এলে কামিন্সের জন্য চ্যালেঞ্জ কঠিন হয়ে যায়। এবং আবারও সেই গোলে বড় ভূমিকা নিলেন কাউকো ও মনবীর।
এখানেই শেষ নয়। ৮১ মিনিটে বিপক্ষের জাল বল ঢুকিয়ে শেষ পেরেক পুঁতে দেন সাদিকু। মনবীর আবার সাদিকুকে একটি দুরন্ত পাস বাড়ান। আর সাদিকু গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেননি। বাগানের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন তিনি। সেখানেই খালিদের দলের সব আশা শেষ হয়ে যায়।
জামশেদপুরকে হারিয়ে প্রবলভাবে রয়েছে লিগ শিল্ড জয়ের দৌড়ে রয়েছে মোহনবাগান। বার দুয়েক আইএসএল ট্রফি জিতলেও লিগ পর্যায়ে সেরা হওয়ার স্বাদ পাননি হাবাস। এবার সেই স্বাদ পাওয়া আরও বেশি জরুরি তাঁর জন্য। কারণ তবেই পাওয়া যাবে এএফসি-র প্রতিযোগিতায় খেলার ছাড়পত্র। সেটা নিয়েই এখন মগ্ন সবুজ-মেরুন বাহিনী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.