মজিদ বিসকার। ফাইল চিত্র।
দুলাল দে: ইজরায়েলকে লক্ষ্য করে ইতিমধ্যেই শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলের তরফে পাল্টা হামলা না হলেও প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি কিন্তু চলে এসেছে। ইরানকে এই হামলার “পরিণাম ভোগ করতে হবে” বলে ইতিমধ্যে হুমকিও দিয়ে রেখেছে ইজরায়েল। এসবের মধ্যেই ইরানের ‘তাবরিজ’-এ এসিএল-টু-তে ট্রাক্টর এফসির বিরুদ্ধে খেলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছে মোহনবাগান। নিজেদের ৩৫জন ফুটবলার চিঠি লিখে জানান, এই পরিস্থিতিতে ইরানে গিয়ে খেলাটা নিরাপদ নয়। সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা যখন চিঠি লিখছেন, তখনও ইজরায়েলের উপর ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়েনি ইরান। ঠিক তার পরের দিনই হামাস, হেজবুল্লাহ এবং ইরানের সিনিয়র কমান্ডারদের হত্যার জবাবে এই মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে। যা নিয়ে উত্তাল বিশ্ব রাজনীতিও।
ইরানের এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই মনে পড়ল, আমাদের একান্ত আপন আশির বাদশা ‘মজিদ বিসকর’ও তো এই মুহূর্তে ইরানে। দেশের এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে কেমন আছেন তিনি? এই ভাবনা এবং দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়েই ইরানে ফোন মজিদকে। ইরানের স্থানীয় সময় তখন সন্ধ্যা। একবার ফোনটা বেজে গেল মজিদের। কিছুক্ষন সময় নিয়ে ফের ফোন। এবার ফোনটা ধরলেন মজিদ। কোথায় তাঁকে জিজ্ঞাসা করব, কেমন আছেন। উল্টে তিনিই জানতে চাইলেন কেমন আছি? কলকাতার খবর কী? খবর তো আপনি বলবেন। এখান থেকে আমরা শুধু দেখছি, ইজরায়েলের আকাশে ইরানের মিসাইল।
খোদ ইরানে বসে মজিদ অবশ্য এই তথ্যগুলিকে গুরুত্বই দিলেন না। অনেকটা অবাক হওয়ার মতো করেই বললেন, ‘এই তো একটু আগে অফিস থেকে এসে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিলাম। কাল শুক্রবার, অফিস বন্ধ। শনিবার ফের অফিস যাব।’
দেশে এই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে অফিস? রাস্তাঘাটে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে?
যাবতীয় বিপদের সম্ভাবনা মোটামুটি উড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘আমাদের এদিকটায় কোনও সমস্যা নেই। আমরা তো দিব্যি রাস্তা ঘাটে ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছি। অফিস করছি। একদম স্বাভাবিক জীবনযাপন। ইরানে কোনও সমস্যাই নেই।’ তাহলে এই যে মোহনবাগান খেলতে গেল না ! তথ্যটি জেনে কিছুটা বিস্মিত হলেন মজিদ। জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইরানের কোনদিকে খেলা ছিল মোহনবাগানের?’ তাবরিজ, শুনে মজিদ বিসকর বললেন, ‘আমি যেখানটায় থাকি, সেটা ইরানের একদম দক্ষিণ দিক, খুরাম। আর তাবরিজ হচ্ছে ইরানের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে। যে অঞ্চল থেকে মিসাইল ছোঁড়া হচ্ছে, উত্তরের সেই জায়গাগুলি তাবরিজের কাছাকাছি। ফলে আমরা যেমন পুরো পরিস্থিতি নিয়ে নিশ্চিন্তে রয়েছি, ইরানের উত্তরের দিকের মানুষরা অতটা নিশ্চিন্তে নেই। তবে সত্যিই আমি জানতাম না, মোহনবাগানের এখানে খেলতে আসার কথা ছিল। ম্যাচটা যদি পরে কখনও হয়, তাহলে নিশ্চয়ই দেখতে যাব।’
মজিদ বিসকার ইরানের যে অঞ্চলে থাকেন, সেই খুরামে যতই শান্তি থাকুক, মজিদ বলছিলেন, ‘দেশের কোনও নাগরিকই চায় না যুদ্ধ হোক। সবাই শান্তি চায়। কিন্তু কোনও কোনও সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তবে এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে যায়নি। আশা করছি, সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.