Advertisement
Advertisement
Portugal

৩ গোলে ৩ পয়েন্ট রোনাল্ডোদের, তুরস্ককে বিধ্বস্ত করে ইউরোর শেষ ষোলোয় পর্তুগাল

নিজে গোল না করে ব্রুনোকে দিয়ে গোল করান রোনাল্ডো। গড়লেন নতুন নজির।

Beating Turkey, Portugal storms into the Knock out stage of Euro Cup

রোনাল্ডো-ব্রুনোর যুগলবন্দিতে গোল। মহানায়কের আদর সতীর্থকে।

Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:June 22, 2024 11:34 pm
  • Updated:June 23, 2024 12:59 am  

পর্তুগাল-৩ তুরস্ক
(বার্নার্দো সিলভা,সামেত-আত্মঘাতী, ব্রুনো)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:
তুরস্ককে উড়িয়ে দিয়ে ইউরো কাপের নকআউট পর্বে পৌঁছে গেল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর (Cristiano Ronaldo) পর্তুগাল। এখনও অবশ্য গ্রুপের আরও একটি ম্যাচ বাকি রয়েছে তাদের। 
সবার নজরে সিআর সেভেন। ইউরো কাপে আসা ইস্তক তিনিই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। প্র্যাকটিসে তাঁকে দেখতে ভিড়, তাঁকে একবার ছুঁয়ে দেখার দারুণ আকুতি ভক্তদের। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো দিনের শেষে হাসছেন। মাঠে ঢুকে যাওয়া এক খুদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন। দিনান্তে তিনিই ছড়িয়ে দিচ্ছেন হাজার হাজার ওয়াটের আলো। এখনও পর্যন্ত এবারের ইউরোয় গোলের খাতা খুলতে না পারলেও মায়াজাল বিছিয়ে যাচ্ছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। 
শনিবার স্কোরলাইনে তাঁর নাম দেখা যেতেই পারত। কিন্তু তিনি তো ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। সব কিছুর মধ্যেই রয়েছে তাঁর নিজস্বতা। তিনিই নিয়ম, তিনিই ব্যতিক্রম।নিজে গোল না করে এদিন ব্রুনো ফার্নান্দেজকে দিয়ে গোল করালেন পর্তুগিজ মহানায়ক। 

হাজার হাজার ওয়াটের আলো ছড়াচ্ছেন রোনাল্ডো।

কে বলেন, তিনি স্বার্থপর! তিনি একা একা গোল করেন! রোনাল্ডো আসলে পুরোদস্তুর একজন টিমম্যান। পর্তুগাল তিন-তিনটি গোলে উড়িয়ে দিল তুরস্ককে। দাপট বজায় রাখল গোটা ম্যাচে। প্রথম ম্যাচের থেকেও দ্বিতীয় ম্যাচে পর্তুগালের জার্সি আরও উজ্জ্বল দেখাল, সবই ঠিক। কিন্তু রোনাল্ডো নিজে গোল না করে ব্রুনোকে দিয়ে গোল করানোর মুহূর্ত চিরকালের ফ্রেমে জায়গা করে নিল। গোল না করেও অন্য এক রেকর্ড গড়ে ফেললেন তিনি। এ নিয়ে ইউরোতে ৭ গোলে অ্যাসিস্ট করলেন মহানায়ক। ছাপিয়ে গেলেন চেক প্রজাতন্ত্রের কারেল পোভরস্কির ৬টি অ্যাসিস্টের রেকর্ডও। রোনাল্ডোর পিছনে এখন রেকর্ড ছুটছে। তিনি সেই মিডাস রাজা। যা ধরছেন তাতেই সোনা ফলাচ্ছেন। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: হার্দিকের দাপট ও কুলদীপের স্পিনে কুপোকাত বাংলার বাঘ! সেমি কার্যত নিশ্চিত রোহিতদের]

রোনাল্ডো-শোয়ের অবশ্য এখনও ঢের সময় পড়ে রয়েছে। যে কোনও দিন তিনি গোল করতে পারেন। যে কোনও সময়ে তিনি ম্যাচের গতিপ্রকৃতি বদলে দিতে পারেন। তিনিই এমনই এক জাদুকর। রোনাল্ডোর আত্মত্যাগের দিনে তাঁর দল উজ্জীবিত ফুটবল খেলল। রবার্তো মার্টিনেজের পর্তুগাল কিন্তু দেখিয়ে দিল তারা কেবল রোনাল্ডো নির্ভর নয়। 

তিনিই প্রাণভোমরা। রোনাল্ডোর আকর্ষণে ছুটে আসছে খুদে ভক্ত।

ক্লাবের জার্সি পরে বার্নার্দো সিলভা দুর্দান্ত। কিন্তু দেশের জার্সিতে তিনি নিষ্প্রভ। এমন একটা বদনাম রয়েছে তাঁর। নিন্দুকরা নখ দাঁত বের করতে শুরু করেছেন ইতিমধ্যেই। সমালোচকদের চুপ করানোর জন্য তুরস্কের বিরুদ্ধে ম্যাচটাই হয়তো বেছে নিলেন বার্নার্দো সিলভা। তাঁর গোলেই পর্তুগাল এগিয়ে যায় প্রথমে।
বাঁ দিক থেকে নুনো গোমেজের গড়ানে সেন্টার তুরস্কের ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে ডিফ্লেকশন হয়। পেনাল্টি বক্সের ভিতরে বার্নার্দো সিলভা তখন অপেক্ষায় ছিলেন। গোলের গন্ধও হয়তো পেয়ে গিয়েছেন। তাঁর কাছে বল পৌঁছতেই বাঁ পায়ের কামান দাগেন। তুরস্কের গোলকিপার শরীর ছুড়েও সেই বলের নাগাল পাননি। খেলার বয়স তখন ২১ মিনিট। পর্তুগাল ততক্ষণে ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে নিয়ে ফেলেছে।
এদিন মার্টিনেজ তাঁর দল সাজিয়েছিলেন ৪-২-৩-১ পদ্ধতিতে। সামনে রোনাল্ডো। দুপ্রান্তে ডানা মেলে ওড়ার দায়িত্ব বার্নার্দো সিলভা আর রাফায়েল লিয়াওয়ের।আর মাঝখান দিয়ে অপারেট করবেন ব্রুনো। বহুযুদ্ধের সৈনিক রোনাল্ডো কখনও প্রান্ত বদল করলেন, কখনও মাঝখান দিয়ে দৌড়ে তুরস্কের ডিফেন্ডারদের বিব্রত করলেন। রোনাল্ডো মানেই সবসময়ে তাঁকে নিয়ে সজাগ থাকতে হয়ে রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের। তিনি থাকা মানেই ভয়-ভীতি ছড়িয়ে পড়ে প্রতিপক্ষের বক্সে। তুরস্ক যে দ্বিতীয় গোলটি হজম করল, সেটি এই ভয়-ভীতিরই ফসল।
পর্তুগালের জোয়াও ক্যানসেলো মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে এগোচ্ছিলেন। রোনাল্ডো তখন ফাঁকা জায়গা তৈরি করার চেষ্টা করছেন। ক্যানসেলো ঠিকমতো বলটা বাড়াতে পারলেন না সিআর সেভেনকে। ক্ষুব্ধ রোনাল্ডো প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে দিয়েছেন ততক্ষণে। ঠিক সেই সময়ে কমেডি অফ এররস তুরস্কের ডিফেন্সে। তাদের গোলকিপার আপাত বিষহীন বলটা ধরার জন্য গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। তুরস্কের ডিফেন্ডার সামেত অন্ধর মতো ব্যাক পাস করে বসেন। গোলকিপার যে নিজের পজিশনেই নেই, তা খেয়ালই করলেন না। সামেতের ব্যাক পাস বিপন্ন করল তুরস্ককে। দ্বিতীয় গোল হজম করতে হল তাদের। 
পর্তুগালের মতো দলের বিরুদ্ধে হাফ টাইমের সময়ে দুগোলে পিছিয়ে থাকা মানে ম্যাচ হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়া। তুরস্ক ম্যাচ থেকে হারিয়ে গিয়েছিল আগেই। দ্বিতীয়ার্ধে গোলের ব্যবধান কমিয়ে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করাই যেত। কিন্তু ৫৫ মিনিটে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। রোনাল্ডো গোল করালেন ব্রুনোকে দিয়ে। পর্তুগাল এগিয়ে যায় ৩-০-এ। ধরাছোঁয়ার বাইরের এক কক্ষপথে চলে গেল তারা।
তুরস্ককে বেরঙিন লাগল এদিন। ততটা বর্ণহীন কি আসলে তারা? গোড়ার দিকে বিক্ষিপ্ত কিছু আক্রমণ শানিয়েছিল তুরস্ক। সেগুলো থেকে অবশ্য গোল হয়নি কারণ বারের নীচে পর্তুগিজ গোলকিপার দিয়েগো কোস্তা সজাগ ছিলেন। শেষ আধ ঘণ্টায় পর্তুগালের দাপট বজায় থাকলেও গোলসংখ্যা আর বাড়েনি। পর্তুগাল জিতে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেল। গোল না করেও আলো ছড়িয়ে গেলেন রোনাল্ডো। তাঁকে নিয়েই চর্চা। তাঁকে ঘিরেই উদযাপন। 

[আরও পড়ুন: NEET বিতর্কের মাঝেই কড়া পদক্ষেপ, NTA-এর ডিজিকে সরাল শিক্ষামন্ত্রক]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement