হাবাসের হাতে পড়ে বদলে গিয়েছে মোহনবাগান।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তোনিও লোপেজ হাবাসকে (Antonio Habas) জাদুকর বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। তাঁর হাত ধরেই প্রথমবার লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন সবুজ-মেরুন। তিনিই এই জয়ের রূপকার।
শৃঙ্খলাপরায়ন কোচ হিসেবে পরিচিত স্প্যানিশ মায়েস্ত্রো। আবেগ খুব একটা দেখান না। বলেন, ”এক গোল করলেও তিন পয়েন্ট। ছগোল করলেও তাই।” সেই হাবাস দলের দায়িত্ব নিয়ে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছিলেন। কাকপক্ষীকে জানতে না দিয়ে হুগো বুমোকে সরিয়ে জনি কাউকোকে নথিভুক্ত করেন। তার পরের ঘটনা ইতিহাস।
জুয়ান ফেরান্দোকে সরিয়ে হাবাসের হাতে মরশুমের মাঝপথে তুলে দেওয়া হয়েছিল রিমোট কন্ট্রোল। সেই সময়ে তাঁর কাজ ছিল খুবই কঠিন। কিন্তু তিনি তো হাবাস। তাঁর ম্যাচ রিডিং, সঠিক সময়ে প্লেয়ার পরিবর্তনের তারিফ না করে পারা যায় না। হাবাসের হাতে পড়ে অশ্বমেধের ঘোড়ার মতো ছুটতে শুরু করে দিয়েছিল সবুজ-মেরুন।
মাঝে ছন্দপতন হয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়েন স্প্যানিশ কোচ। চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন না মোহনবাগানের ডাগ আউটে। সেই ম্যাচেই হার হজম করতে হয় মোহনবাগানকে। এদিকে মুম্বই সিটি এফসি লিগ শিল্ড জয়ের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। সবুজ-মেরুনের বাকি ছিল তিনটি ম্যাচ। পাঞ্জাব এফসি, বেঙ্গালুরু এবং মুম্বই সিটি। দিল্লিতে গিয়ে পাঞ্জাব এফসিকে হারায় সবুজ-মেরুন। সেই ম্যাচে ডাগ আউটে ছিলেন না হাবাস। ম্যাচের আগে বলা হয়েছিল, শরীর সুস্থ থাকলে আপকালীন ভিত্তিতে হাবাসকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে রাজধানীতে। হাবাস-হীন মোহনবাগান পাঞ্জাবকে হারায় দিল্লিতে।
বেঙ্গালুরুতেও সবুজ-মেরুনের ডাগ আউটে ছিলেন না হাবাস। মোহনবাগান বিধ্বস্ত করে বেঙ্গালুরুকে। দুটো জয়ের পিছনেই ছিলেন ‘চাণক্য’ হাবাস। যুবভারতীতে মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে মেগা ম্যাচের আগে দলের সঙ্গে যোগ দেন বহু যুদ্ধের সৈনিক। তিনিই এই দলের আসল চালিকা শক্তি। সেটা বোঝা গিয়েছে বারংবার। দলের সহকারী কোচ ম্যানুয়েল পেরেজ প্রেস কনফারেন্সে বলছেন, ”হাবাসের পরামর্শ মতো আমরা দল সাজাচ্ছি। উনি যা বলছেন মাঠেও সেই ভাবেই আমরা খেলছি।”
সোমবার মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে মোক্ষম সময়ে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন। দল তখন লিস্টনের গোলে এগিয়ে। গোলসংখ্যা বাড়িয়ে ম্যাচ নিজেদের সাজঘরে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন হাবাস। পরিবর্ত হিসেবে নামা কামিন্স সেই কাজটি করেন।
রেফারি যখন আট মিনিট অতিরিক্ত সময় দিয়েছেন, তখন হাবাসের শরীরী ভাষায় খেলা করছিল উত্তেজনা। বারবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিলেন। রেফারির শেষ বাঁশির পরে সেই হাবাসই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন। শূন্যে ছুড়লেন মুষ্টিবদ্ধ হাত। তাঁর হাত ধরেই ইতিহাস তৈরি করল মোহনবাগান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.