স্টাফ রিপোর্টার: কলকাতা তখন ব্যস্ত পুজোর শেষ নির্যাসটুকু নিতে। দশমীর নিশিতে গঙ্গার ঘাটে তখন বিসর্জনের বিষাদ। একই সময় নিঃশব্দে ভুবনেশ্বরের এএফসি কাপে বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে নিজেদের জেতা ম্যাচ ড্র করে দু’পয়েন্ট বিসর্জন দিয়ে এল মোহনবাগান। আর ম্যাচ শেষে এতটাই হতাশ ছিলেন কোচ জুয়ান ফেরান্দো যে প্রতিপক্ষের ফুটবলার বিশ্বনাথ ঘোষের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। যদিও দু’দলের ফুটবলাররা দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেন।
ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট যেন ৬৮ মিনিটে আশিস রাইয়ের নিজেদের বক্সের মধ্যে করা ফাউলটাই। যার খেসারত দিতে হল মোহনবাগানকে। এই সময়ে নিজেদের বক্সে বসুন্ধরার রবসন রবিনহোকে আশিস ফাউল করলে রেফারি পেনাল্টি দিতে ভুল করেননি। তখন ১-২ গোলে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশের দলটি। এই পেনাল্টি থেকেই গোল করে দলকে ২-২ করে দিলেন বসুন্ধরা অধিনায়ক রবসন। আবার এই আশিস রাইয়ের গোলেই দ্বিতীয়ার্ধে এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। আর কিছু সময়ের মধ্যে তাঁর ফাউলেরই খেসারত দিতে হল সবুজ-মেরুন শিবিরকে।
ম্যাচের প্রথম পনেরো মিনিটের মধ্যে দু’বার প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে গিয়েছিলেন জেসন কামিংস। কিন্তু সেই সময় তৎপর ছিলেন বসুন্ধরার রক্ষণের ফুটবলাররা। ম্যাচের ১৯ মিনিটে বক্সের বাঁ দিক থেকে পেত্রাতোসের ক্রসকে ফলো করে গোল করে দিয়েছিলেন লিস্টন কোলাসো। কিন্তু অফসাইডের জন্য সেই গোল বাতিল করে দেন রেফারি। ২৭ মিনিটেও একটি গোলের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বক্সের জটলার মধ্যে থেকে গোলকিপারকে সামনে পেয়েও গোল করতে পারেননি মোহনবাগান ফুটবলাররা। বসুন্ধরা রক্ষণ ভেদ করতে এরপর খুব বেশি সময় নেননি কামিংসরা। ম্যাচের ২৯ মিনিটে কামিংসের পাস থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। হুগো বুমোসের পাস বক্সের মধ্যে পেয়ে যান কামিংস। সেখান থেকে তিনি দিমিত্রির উদ্দেশে পাস বাড়ালে সেই পাস থেকে গোল করতে ভুল করেননি পেত্রাতোস।
কিন্তু এই গোল বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি মোহনবাগান। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে মাঝমাঠের একটু উপর থেকে রবসনের ডিফেন্স চেরা থ্রু ধরে আগুয়ান হেক্টর ইউস্তেকে বোকা বানিয়ে গোল করে যান বসুন্ধরার ডোরিএলটন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বসুন্ধরার অধিনায়ক রবসনের একটি শট বারে লেগে বাইরে চলে যায়। এই গোলটি হলে তখনই চাপে পড়ে যেত ফেরান্দো ব্রিগেড। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে ফের বক্সের জটলার মধ্যে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন লিস্টন কোলাসো আর আশিস রাই। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ফের ডোরিএলটনের একটি শট বারে লাগে। এবারও হেক্টর ইউস্তে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হওয়ায় গোল করার পরিস্থিতিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন ডোরি। ভাগ্য সহায় না হওয়ায় বারে লেগে বল বাইরে চলে যায়। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে পেত্রোতাসের সাজানো বল থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন আশিস রাই। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে ডোরিএলটনের একটি শট সেভ করেন মোহনবাগান গোলকিপার বিশাল কাইথ। তবে রবসনের পেনাল্টি শটের হদিশ পাননি তিনি। সেটাই ম্যাচের চূড়ান্ত ফলাফল হয়ে গেল। এদিন কোচ ফেরান্দোর চিন্তা বাড়াল আনোয়ার আলির চোট। দ্বিতীয়ার্ধে চোট নিয়েই মাঠ ছাড়েন সবুজ-মেরুন ডিফেন্ডার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.