শিলাজিৎ সরকার: প্রায় অচেনা প্রতিপক্ষ। তাই রক্ষণ সামলে আক্রমণের চেনা পথেই হাঁটতে চলেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন না হলে বুধবার এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২ (ACL 2) -এর ম্যাচে শুরু থেকে খেলবেন প্রভসুখন গিল, মহম্মদ রাকিপ, লালচুংনুঙ্গা, হিজাজি মাহের, মার্ক জোথানপুইয়া, শৌভিক চক্রবর্তী, সল ক্রেসপো, নাওরেম মহেশ সিং, ডেভিড লালহানসাঙ্গা, মাদিহ তালাল এবং নন্দকুমার। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন মহেশ। তাঁকে অনেকটাই লেফট উইং ব্যাক হিসাবে খেলাতে চলেছেন কুয়াদ্রাত। অর্থাৎ আক্রমণে সাহায্যের পাশাপাশি নিচে নেমে পঞ্চম ডিফেন্ডারের কাজটাও করবেন মহেশ। অবশ্য এই ছকে যাওয়ার আরও একটা কারণ হিজাজি। এদিনও ডান হাঁটুতে স্ট্র্যাপ বেঁধে প্র্যাকটিস করেন তিনি। জর্ডনের এই ডিফেন্ডারের চাপ কমাতেই মার্ককে একটু ভিতরের দিকে ব্যবহার করতে চাইছেন কুয়াদ্রাত।
আসলে মরশুমের শুরু থেকেই চোটে জর্জরিত ইস্টবেঙ্গল। সেখানে পাঁচদিনের মধ্যে দু’টো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। বুধবার এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর যোগ্যতা অর্জন পর্বের লড়াই, রবিবার ডুরান্ড কাপে ডার্বি। বিশেষত আনোয়ার আলির দলবদল ইস্যু এবং ডুরান্ডে টিকে থাকার সাপেক্ষে ডার্বির গুরুত্ব বেড়েছে অনেকটাই। ফলে আলটিন আসিরের বিরুদ্ধে এএফসির ম্যাচে অলআউট যাওয়ার সুযোগ অনেকটাই কম লাল-হলুদ কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের কাছে। যিনি ছ’বছর আগে দু’বার হেরেছেন তুর্কমেনিস্তানের এই ক্লাবের কাছে। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কুয়াদ্রাত বলছিলেন, “আমি ওদের বিরুদ্ধে দু’বার হেরেছি। ফলে প্রতিপক্ষ অচেনা নয়। যা-ই হোক, ওদের খেলার সাম্প্রতিক কিছু ভিডিও দেখেছি। ভালো দল। তবে আমরা নিজেদের এসিএল ম্যাপে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এই ম্যাচ জিতলে এসিএল ২-এর গ্রুপ পর্বে খেলতে পারব। না হলে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলব। পরিস্থিতি যা-ই হোক, আমরা ট্রফির জন্য লড়ব।” তবে এই ম্যাচকে বদলার লড়াই হিসাবে দেখছেন না কুয়াদ্রাত। বরং মহাদেশীয় আসরে ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে ভালো খেলাই লক্ষ্য তাঁর। “কাল আমরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করব। প্রতিপক্ষ ভালো। ধারাবাহিক ভাবে ভালো খেলছে। ফলে আমাদের অগ্নিপরীক্ষা হতে চলেছে,” বার্তা কুয়াদ্রাতের।
একদা এএফসি কাপ রানার্স অলটিন মহাদেশীয় লড়াইয়ের মঞ্চে নিয়মিত মুখ। দীর্ঘদিন একই দল ধরে রেখেছে। সেখানে ইস্টবেঙ্গলের অনেকেই প্রথমবার খেলবেন এএফসি-র আসরে। যেমন নন্দকুমার। চোট সারিয়ে বুধবারই মরশুম শুরু করতে চলেছেন যিনি। বলছিলেন, “এটাই আমার প্রথম এএফসি ম্যাচ হতে চলেছে। ফলে ভালো খেলতে হবে। দলের বাকিরাও মুখিয়ে আছে। সবাই তৈরি। আশা করছি ভালো ম্যাচ হবে।” পাঁচ দিনে দু’টো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলা নিয়ে চাপে নেই কুয়াদ্রাত। বললেন, “আমার কঠিন ম্যাচ খেলতে ভালো লাগে। দলের প্লেয়াররা ভালো অবস্থায় আছে।” সাংবাদিক সম্মেলনে কোচের দাবি, নিশু কুমার ছাড়া দলের সকলেই খেলার মতো অবস্থায় আছেন। জিকসন সিং-সহ বাকিদের চোটের প্রসঙ্গে কুয়াদ্রাতের বার্তা, সকলেই দলের সঙ্গে পুরোদমে অনুশীলন করছেন। তবে দলের অনভিজ্ঞতা নিয়ে চিন্তা গোপন করছেন না কুয়াদ্রাত, “ঘরের মাঠে খেলছি বলে আমরা ফেভারিট, এমন নয়। আমরা ন’বছর পর এএফসি-র ম্যাচ খেলব। সেখানে আমাদের প্রতিপক্ষ নিয়মিত এএফসি খেলেছে।” সমর্থকদের উপস্থিতি যে অ্যাডভান্টেজ ইস্টবেঙ্গলের জন্য, মেনে নিয়েছেন তিনি।
আরও একটা বিষয়ে অ্যাডভান্টেজ পেতে পারে ইস্টবেঙ্গল। মাঝ-মরশুমের বিরতির পর প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচটা বুধবারই খেলতে চলেছে আলটিন। যা নিয়ে তাদের কোচ ইয়াসগুলি হোজাগেলদিয়েভ বলছিলেন, “আমরা অনেকদিন পর ম্যাচ খেলব। এখানে আসার আগে অবশ্য কয়েকটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি।” তবে ইস্টবেঙ্গল নিয়ে ভালোই খোঁজখবর নিয়েছেন তিনি, “ইস্টবেঙ্গলের কয়েকটা ম্যাচের ভিডিও দেখেছি। ওদের রক্ষণ বেশ ভালো। এবছর ২-৩ জন ভালো ফুটবলার নিয়েছে।”
আজ এসিএল ২-এ
ইস্টবেঙ্গল বনাম আলটিন আসার
সন্ধ্যা ৭.০০, যুবভারতী
জি ২৪ ঘণ্টা নেটওয়ার্কে
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.