Advertisement
Advertisement
Durga Puja 2024

লুচির গন্ধ যেদিন বাড়িতে সেদিনই আসলে পুজো

সাদা লুচি ও আলুর তরকারির জুটি শরতের আকাশ ও শিউলি ফুলের মতোই সুপারহিট।

Durga Puja 2024: Memories of Durga Puja festival by Madhumita Ray
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:September 25, 2024 5:39 pm
  • Updated:October 3, 2024 7:45 pm  

মধুমিতা রায়: আশ্বিন মাস পড়তে না পড়তেই আকাশে বাতাসে কেমন যেন পুজো পুজো গন্ধ (Durga Puja 2024)! শিউলি, ছাতিম আর সন্ধ্যা নামলেই ধুনো। এত সবের মধ্যে আমার ছোটবেলায় পুজোর দিনগুলো জুড়ে থাকত মা-দিদিমার হেঁশেলের গন্ধ। পুজোর সকালে বাগানের ঘাসে বিছিয়ে থাকতো শিউলি ফুল। অমন চোখ জুড়নো সাদা রং বড় একটা দেখা যায় না। তবে জলখাবারের পাতে ফুলকো সাদা লুচির সঙ্গে সাদা আলুর তরকারির জুটি ওই শরতের আকাশ আর শিউলি ফুলের জুটির মতন সুপার হিট।

আজকাল রোগে পড়লে ডাক্তারের প্রথম কথাই হল ময়দা বর্জন করুন। ভাবখানা এমন যেন ময়দা মহিষাসুর প্রজাতির কেউ। আরে বাবা! ওরকম নিষ্পাপ বেদাগ জিনিস আর আছে, বলুন তো? ভাবুন সন্ধিক্ষণে উপোসী মন কি শুধুই একশো আট প্রদীপের দিকে থাকে? থালায় থরে থরে যে ঘিয়ে ভাজা লুচি, চাকা চাকা আলুভাজা, আর সুজির সঙ্গে গা জড়াজড়ি করে পড়ে থাকে, তাকে কি অগ্রাহ্য করা যায় কখনও?

Advertisement

প্রথম প্রেমের মতন আমার পুজো যাপনে এই ফুলকো সাদা লুচি কিন্তু ছিল কনস্ট্যান্ট। জীবনের অন্য অনেক বিচিত্র অভিজ্ঞতার মতো লুচির সঙ্গে সঙ্গত দিতে বিভিন্ন পদের জোগাড় হত। অষ্টমীর দুপুরে সম্পূর্ণ নিরামিষ ঘটিবাড়ির নারকেল কুচি আর কিসমিস দিয়ে মিষ্টি ছোলার ডাল আর অবশ্যই কুমড়োর ছক্কা। কোনও কোনওবার কষা আলুর দম। বেশ মাখোমাখো ব্যাপার হতে হবে। আর শেষপাতে পায়েস। নবমীতে কিন্তু ঘোর আমিষ। কোলেস্টেরলের চোখ রাঙানিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তেল রগরগে লাল ঝোলের খাসির মাংস একবাটি। জামবাটির ওপরে বড় আলুটা উঁকি দিচ্ছে যেন। পাতে সেই চেনা মানুষের মতনই আরামদায়ক বস্তু। লুচিটা মাংসের ঝোলে ডুবিয়ে মুখে দেবেন, সঙ্গে একটু আলু। চোখ আপনিই বুজে আসবে আবেশে।

আর বিজয়া দশমীর রাতে যখন অন্ধকারে ফাঁকা মন্ডপ দেখে মনটা হুহু করে উঠত, মনে হত সব শেষ হয়ে এল, ঠিক তখনই পাশের বাড়ির রান্নাঘর থেকে ভেসে আসা গন্ধে তিনি জানান দিয়ে বলে যেতেন, “আমি আছি।” সত্যি তিনি হাত ধরে থাকতেন। বিজয়া দশমীর প্রণাম শেষে কখনও সখনও ওঁর দেখা মিলত কিমার ঘুগনির সঙ্গে। আর পাঁচদিন পর কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে যে চাঁদ উঠত সেও তো পুজোর পর ধরা দিত প্রসাদের প্লেটে, নাড়ু-মুড়কি সহযোগে। উৎসবের দিন ফুরলেও লুচির সঙ্গে সখ্য ছিল অটুট। ব্যাকগ্রাউন্ডে ঢাকের বাদ্যি থাকুক বা না থাকুক, প্যান্ডেল হোক বা না হোক, লুচির গন্ধ যেদিন বাড়িতে, সেদিনই আসলে পুজো।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement