Advertisement
Advertisement
KIFF 2024

পাগল ‘জগন’ এর আপন জগৎ, অভিনয়ে মুগ্ধ করলেন সুব্রত, পড়ুন রিভিউ

কেমন হল কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালে প্রদর্শিত 'জগন' ছবিটি?

KIFF 2024: Subrata Dutta starrer Jagan Film review
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:December 9, 2024 1:33 pm
  • Updated:December 9, 2024 2:21 pm  

ইন্দ্রনীল শুক্লা: সঞ্জীব দে পরিচালিত ছবিতে নানা প্রান্তিক মানুষের কথা থাকে। দেখা যায় বিষম পরিস্থিতির মধ্যে জড়িয়ে পড়া মানুষদের। এর আগে তাঁর ‘থ্রি স্মোকিং ব্যারেলস’ ছবিতে দেখা গিয়েছিল পরিস্থিতির শিকার হয়ে অপরাধচক্রে জড়িয়ে পড়া এক সাধারণ মানুষকে। দেখা গিয়েছিল, জঙ্গিরা কেমন করে এক শিশুকে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে। আবার কখনও দেখা মিলেছে হাতির দাঁতের পাচার চক্রে জড়িয়ে পড়া এক চোরাশিকারির। সেই ‘পোচার’-এর ভূমিকায় ভালো অভিনয় করেছিলেন সুব্রত দত্ত। আর সেই কারণেই ‘জগন’ ছবিতে সঞ্জীব-সুব্রত জুটির কাজ আরও একবার দেখার আলাদা আকর্ষণ ছিলই। বিফল হয়নি সেই প্রত্যাশা।

এখানে ছবির নাম ভূমিকাতেই সুব্রত। গল্পটা মূলত তাঁকেই কেন্দ্র করে। গ্রামে বাপ মরা, মায়ের আশ্রয়ে পালিত এক পাগলের দিনযাপনই এ ছবির উপজীব্য। পাশাপাশি চলে এই পাগলের এক ভাইয়ের গল্প। সাইকেল সারাইয়ের এক দোকান চালিয়ে বাড়ির খরচ সে-ই টানে। আর সে জন্যই সে বিরক্ত। পাগল ভাইকে মাঝেমধ্যেই পেটায় সে। এই ভূমিকায় দেবাশিস মন্ডল ভাল অভিনয় করেছেন। চলে আসা যাক জগনের কথাতে। পাগলের মন, বৃন্দাবন! শহরে, মফস্বলে, গ্রামে জগনের মতো এমন পাগল আমরা সকলেই কোনও না কোনও সময়ে দেখেছি। সে পা টেনে টেনে একটা অস্বাভাবিকভাবে চলে। মাঝেমধ্যেই পাজামার দড়ি খুলে অস্বস্তিতে পড়ে। মন্দিরে কীর্তন শুনতে ভীষণ ভালোবাসে। উবু হয়ে বসে খিচুড়ি খায়। খাতা-পেন্সিল হাতে নিয়ে আঁকাবাঁকা কী যে লেখে তা সেইই জানে। মিষ্টির দোকানে ঘুর ঘুর করে একটা সিঙারা আর এক গ্লাস চায়ের জন্য। কখনও বা বসে থাকে টেলারিংয়ের দোকানে। বাতিল কাপড়ের মধ্যে যা যা পছন্দ যত্নে ভাঁজ করে ব্যাগে রাখে। বাড়ি এসে জমা করে বাক্সে। এতো বহু পাগলেরই দিনযাপন। কিন্তু এই যাপনকে অদ্ভুত ডিটেলিংয়ে পর্দায় রেখেছেন সঞ্জীব। তার চেয়েও বেশি অবাক করেছেন সুব্রত দত্ত।

Advertisement

কেমন করে তিনি পাগলের চলন এমন নিখুঁত ভাবে তুলে আনলেন তা সত্যিই বিস্ময়ের। চাহনিতে অদ্ভুত একটা ইনোসেন্স! নিজের খাবার বা সাধের জিনিসে গোলমাল হলে ধুন্ধুমার বাধানো! কিংবা চোর সন্দেহে গণধোলাইয়ের মুখে অমন অসহায় চাহনি। সুব্রত দত্ত-র অভিনয়ের জন্যই ছবিটা একবার দেখা যায়। গ্রাম গঞ্জের লোকেশনে পাগলকে যেন খোলা ছেড়ে দিয়েছেন পরিচালক, যেখানে সে আকাশ দেখে- মজা পানায় ব্যাঙাচি দেখে-আপন মনেই হাসে। ভালোবাসার স্পর্শ সে বোঝে বিলক্ষণ। কীর্তনের তালে উদ্বাহু হয়ে যেন হারিয়ে যায় সে। মা যখন মাথায় তেল মাখিয়ে চান করিয়ে দেয়, আদর করে দেয় একটা ভারি সুন্দর শিশুর মতো হাসি ছড়িয়ে পড়ে তার মুখে। কীর্তনকারী পূজারী মারা যাওয়ার পর, মা মারা যাওয়ার পরেও কীর্তন থেকে সে দূরে থাকতে পারে না। আকাশের দিকে তাকিয়ে ঘর ছেড়ে ছুটে চলে ‘হরিবোল’-এর তালে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement