সুলয়া সিংহ: তিনি এলেন। দেখলেন। মন জয়ও করলেন। কিন্তু শুধুই সলমন খান হিসেবে। কারণ তাঁর ছবির গল্প ভক্তদের মন জয় করতে ব্যর্থ। স্টারডম, পর্দায় লার্জার দ্যান লাইফ, মারকাটারি অ্যাকশন দেখতে দর্শকরা নিঃসন্দেহে ভালোবাসেন। কিন্তু ওই যে, আসল নায়ক তো ছবির গল্পই। সেখানেই দুর্বল ‘সিকন্দর’।
টাইগার ৩-এর প্রায় দু’বছর পর ফের ভাইজানকে বড়পর্দায় দেখার আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। সলমনের সিনেমায় আবার উপরি পাওনা ছিল রশ্মিকা মন্দানার উপস্থিতি। প্রথমবার সলমন-রশ্মিকার অনস্ক্রিন রোম্যান্সের জন্য উদগ্রীব ছিলেন অনুরাগীরা। পরিচালক এ আর মুরুগাদোস এক্কেবারে চেনা অ্যাকশন ছকেই শুরু ছবি করেছেন। আকাশপথে মন্ত্রীর ছেলে প্রতীক বব্বরকে ‘সবক’ শেখানোর দৃশ্য দিয়ে পর্দায় সল্লু মিঞার এন্ট্রি। মাল্টিপ্লেক্সেও তখন প্রিয় নায়কের জন্য সিটি পড়ছে। তারপরই আগমন রাজকোটের ‘রানি’ রশ্মিকার। তিনি রাজকোটের শেষ রাজা সঞ্জয় রাজকোট, অর্থাৎ সলমনের স্ত্রী। নায়ক-নায়িকার বয়সের ফারাক নিয়ে নিন্দুকরা যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন, তার উত্তরও ছবিতে বেশ স্পষ্টই দিয়েছেন পরিচালক। অরিজিৎ সিংয়ের ‘হাম আপকে বিনা’ গানে সলমন-রশ্মিকার কেমিস্ট্রি বেশ ভালো লাগে।
গল্পের এক এবং একমাত্র টুইস্ট রশ্মিকার মৃত্যু। আর এখান থেকেই ঘুরে যায় গল্পের মোড়। রশ্মিকা মৃত্য়ুর আগে ফুসফুস, হার্ট এবং চক্ষুদান করে গিয়েছিল। পত্নী বিয়োগের পর স্ত্রীকে ‘ফিরে পেতে’ সেই মানুষগুলির সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে ভেঙে পড়া ‘রাজা সাহেব’। তাতেই নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। মন্ত্রীর ব়্যাডারেও চলে আসে সিকন্দর। চোখের জল মুখে দুষ্টের দমনে নেমে আবারও ভরপুর অ্যাকশন হিরো হয়ে ওঠে ভাইজান। স্ত্রীকে হারিয়ে স্বামীর বিলাপ, সমাজের অসুরদের বিনাশ করতে নানা হীতকর কাজের মধ্যে দিয়ে সিকন্দর শুধু রাজকোটের রাজা না, মানুষের মনেরও রাজা হয়ে ওঠে।
গানের আধিক্য দিয়ে ছবির তাল কাটেননি পরিচালক। সলমনের মুখে ‘কায়দে মে রহো, তো ফায়দে মে রহোগে, ওয়ারনা শমশান ইয়া কবরস্থান মে রহোগে’র মতো সংলাপে জমে ওঠে প্রেক্ষাগৃহ। সর্বোপরি রাজার ভূমিকায় বেশ মানিয়েছে সলমনকে। তাহলে কোথায় পিছিয়ে পড়ছে এই ছবি? সমস্যা হল, গল্পের বুনন বড়ই সাদামাটা। পাঞ্চ কিংবা টুইস্টের অভাবে ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে পড়ে চিত্রনাট্য। সত্যরাজের মতো অভিনেতা কিছু করার সুযোগই পেলেন না। রাজার ‘সাগরেদ’ শরমন যোশীকে এমন গুরুত্বহীন ভূমিকায় দেখে খারাপই লাগে। তাই এ আর মুরুগাদোস সমাজের অসুর সাফ করার ছবি ‘কিক’-এর থেকে অনেকাংশেই পিছিয়ে পড়ে ‘সিকন্দর’। অ্যাকশন, রোম্যান্স, দৌড়-ঝাঁপ, কান্নাকাটি, নাচ, গান করলেও সলমনের এই ছবি মনে দাগ কাটতে পারল না। তবে আপনি ভাইজানভক্ত হলে অন্তত একবার দেখতেই পারেন ‘সিকন্দর’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.