সন্দীপ্তা ভঞ্জ: দাম্পত্যের বয়স বাড়ার সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণও বদলে যায়। ফেলে আসা দিনগুলো স্মৃতির ফ্রেমে বন্দি হয়ে থাকে। কিন্তু কতটা টান থাকলে জীবনের পঞ্চাশটা বসন্ত একসঙ্গে পার করা যায়? ‘এই রাত তোমার আমার’ ছবিতে সম্পর্কের সেই সমীকরণের গল্প দেখালেন পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।
সারাজীবন একছাদের তলায় থাকার পরও অনেক না বলা কথা রয়ে যায় মনের গহীনে। জমাট বাঁধা মান-অভিমানের পাথর, অভিযোগ-অনুযোগ আর একরাশ অনুভূতির জলীয় বাষ্প। তার পর জীবনপাট অস্তাচলে যাওয়ার আগে কোনও এক রাতে যদি হঠাৎ মনে হয়, আজ সব কথা বলা দরকার। নইলে এতগুলো বছরের সংসারযাপনে শঠতা হবে। সেই রাতে যদি সমস্ত আগল খুলে সঙ্গীর কাছে মনকে উলঙ্গ করে দেওয়া যায়, এমনই এক নিশিযাপনের কাহিনি ‘এই রাত তোমার আমার’। দম্পতির ভূমিকায় বাংলা সিনেমার দুই মহীরূহ অপর্ণা সেন এবং অঞ্জন দত্ত। বৃদ্ধ বয়সে দাম্পত্যযাপনের কাঠামো ঠিক কেমন হয়? এই সিনেমার গল্পের সঙ্গে অনেকেই বাস্তবের সাযুজ্য খুঁজে পাবেন।
পরিচালক হিসেবে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় কমেডি, হরর, প্রায় সব জঁর এক্সপ্লোর করে ফেলেছেন। এবার সম্পর্কের জড়িয়ে যাওয়া সুতোয় টান দিলেন তিনি। এক নিঃসঙ্গ দম্পতি। তাঁদের বিয়ের পঞ্চাশ বছরের জন্মদিনের রাতকে কেন্দ্র করেই ‘এই রাত তোমার আমার’ সিনেমার গল্প। খুব একটা অচেনা নয়। ডুয়ার্সের চা বাগানে শেষ বয়সে ব্যবসা নিয়ে ধুঁকতে থাকা ব্যক্তি। ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রীয়ের চিকিৎসার জন্য দৌড়োদৌড়ি। কর্মসূত্রে সন্তানের বাইরে থাকা। কাজ-কেরিয়ার নিয়ে বাবা-ছেলের মান-অভিমান। সমান্তরালে প্লটগুলো স্তরে স্তরে দক্ষতার সঙ্গে সাজিয়েছেন পরমব্রত।
পঞ্চাশতম বিবাহবার্ষিকী। মারণরোগে আক্রান্ত স্ত্রীয়ের আবদারে ঝড়-জলের রাতে একান্তযাপনে ফেলে আসা দিনগুলোর সুখস্মৃতির জাবর কাটা। এ যেন চারপাশের চেনা-কাহন। ‘স্লাইস অফ লাইফ গল্পের শেষেই ট্যুইস্ট রেখেছেন পরিচালক! মেদহীন ঝরঝরে চিত্রনাট্য। অঞ্জন দত্ত, অপর্ণা সেন দুজনেই বাঘা অভিনেতা। গোটা সিনেমাজুড়ে কোনও অংশ তাঁদের অভিনয় জীবনের সঙ্গে ‘ভনিতা’ বলে মনে হয় না। পরিচালনার পাশাপাশি নাতিদীর্ঘ ছবিতে ছেলের ভূমিকাতেও নজর কাড়লেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.