Advertisement
Advertisement
Bengali Ghost

‘পরকীয়া? কভি নেহি কিয়া’, লালপাড়-সাদা শাড়ির আড়াল থেকে বলল শাঁকচুন্নি

ভূত চতুর্দশী স্পেশাল: পরকীয়ার চেয়ে মাছভাজা অনেক বেশি... ওই কী যেন বলে... স্পাইসি!

A funny write up on Bengali ghost Shankhchunni

অঙ্কন: অর্ঘ্য চৌধুরী।

Published by: Biswadip Dey
  • Posted:October 27, 2024 6:37 pm
  • Updated:October 27, 2024 6:50 pm  

বামুন সমাজের ঢিলে হালে মনখারাপ ব্রহ্মদত্যির! ডেকে ডেকেও সাড়া পাচ্ছে না বেচারা নিশি! বাকিদের অবস্থাও তথৈবচ। ভূত চতুর্দশীতে মনের কথা থুড়ি ‘আত্মাকথা’ জানালেন বাংলার ভূতেরা। আজ শাঁকচুন্নি পালা। ভূতের ভাষাকে মনুষ্য পাঠযোগ্য করলেন বিশ্বদীপ দে

আমার কথা বলব। আগে বলুন দিকি, পেনেটির শিবু ভটাচার্য আপনাদের পাঠিয়েছে নাকি? ওই হতভাগা বহুদিন ধরে, সেই ভূশণ্ডীর মাঠ থেকে আমার পিছনে ঘুরপাক খাচ্ছে। আমি গোবর ছড়া দিচ্ছিলুম, একটা গামছা পরা, একটা মাথায় চাপানো… শিবু দেখি বদ রসিকতা করছে। গেল মাথা গরম হয়ে। এমন ফ্যাঁচ করে উঠলুম পালাল ল্যাজ গুটিয়ে। সে নিয়ে তো একটা গপ্পোও কেউ লিখেছিল শুনতে পেয়েছিলাম। কিন্তু শিবু এর পরও অনেকবার কায়দা করতে চেয়েছে। পরে তো ওর বউ নেত্য ব্যাপারটা ধরেও ফেলে। তাতেও কি মিনসের শিক্ষে হয়? কী করে বোঝাই, আমরা শাঁকচুন্নিরা ওসব পরকীয়া-টিয়ায় বিশ্বাসী নই। কত্তাকে রেখেই সংসার সাগর ছেড়ে পাড়ি দিয়েছি এই অন্ধকারের রাজত্বে, তবু ফেলে আসা জীবন বড় টানে! নতুন করে আর সম্পক্কো করতে ইচ্ছে যায় না। কাজেই শিবুর লোক হলে সরে পড়ুন, নইলে ঘাড়টা কেমন করে মটকাতে হয় সেটা ভালোই জানা আছে।

Advertisement

একটা জিনিস বুঝি না। শ্যাওড়া গাছে বসে থাকা লাল পাড় সাদা শাড়ি, হাতে শাঁখা পরা মহিলা দেখেও লোকের থুড়ি মিনসে ভূতগুলোর কেন প্রেম পায় কে জানে! একবার এক ব্রহ্মদৈত্যি আমাকে, ওই কী বলে প্রপোজ না কী, করেছিল। তবে লোকটা মন্দ ছিল না। অনেক পড়ালেখা করেছে। জ্ঞানের আলো গা দিয়ে টিউবলাইটের মতো ঝরে পড়ছে। বলছিল, আমাদের যে শাঁকচুন্নি বলা হয়, সেটা নাকি আসলে সংস্কৃতে শঙ্খচূর্ণী। কোন তন্ত্রে নাকি শাকিনী নামের উল্লেখ রয়েছে, তারা আমাদেরই আদি মাতা। তা এত সব জ্ঞান ঝেড়ে শেষে ওই শিবুর মতোই… বিরক্তিকর! তবে এও বুঝি, পুরুষ পুরুষই। সে মানুষই হোক বা ভূত। তা ভূত বলে কি মানুষ নয়? মানে এককালে তো মানুষই ছিল।

জ্যান্ত মানুষ আমাকে দেখলে ভিরমি খায়। এমন সবজে পানা চেহারা, শুকনো ছিরি দেখলে ভয় তো লাগবেই। তার উপর চোঁ-ও-ও করে হাত বাড়িয়ে বহু দূরের কড়াই থেকে ফুটন্ত মাছ বা লেবুগাছ থেকে টপাটপ লেবু-টেবু পাড়ার বদভ্যাসও রয়েছে। কিন্তু ভূতের চোখে দেখলে এসবই কেমন মনোরম ঠেকে। তবে কিনা ঠিকঠাক ভূত কি হতে পেরেছি আমরা? না হলে ফেলে আসা সংসারের কথা মনে পড়ে কেন? কত সময় তো একলা কোনও বউ পেলে ঘাড়েও চড়ে বসি। তবু ঠিক জুত হয় না। এককালে ওঝা-টোঝা আসত। এখন অনেকে ডাক্তার দেখায়। কিন্তু আমরা কাউকেই পাত্তা দিই না। সেরেফ ঘাড়ে বেশিক্ষণ চড়ে থাকতে ভাল্লাগে না বলেই নেমেও পড়ি।

যা বলছিলাম। পরকীয়া ব্যাপারটা আমার পোষায় না। তবু ভূতগুলো ঘুর ঘুর করে। মামদো হোক কিংবা স্কন্ধকাটা, কে আসে না! কিন্তু আমরা ভূতেরা কমিটমেন্ট ব্যাপারটায় জোর দিই। কেমন ইংরেজি বললুম বলুন। হতে পারি, আদ্যিকালের মানুষ থুড়ি শাঁখচুন্নি। তবু কেমন শিখে ফেলেছি! যাক, সেকেলে মন তো, কারও সঙ্গে সম্পর্কে থেকে আরও একটায় যেতে পারি না। মরে না গেলে তো এখনও স্বামীর ঘর করতুম… সত্যিই শিবুর লোক নও তো তোমরা? হলে কেটে পড়ো সটান। আমার ভাজা মাছ উলটে খাওয়ার সময় হল। দেখি তো কাদের বাড়ি রান্না হচ্ছে। আসলে পরকীয়ার চেয়ে মাছভাজা কিংবা মাছের ঝাল-ঝোল অনেক বেশি… ওই কী যেন বলে… স্পাইসি!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement