দেবব্রত দাস, খাতড়া: রুক্ষ মাটি। সেই মাটিতেই ড্রাগন ফলের চাষ করে দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে বিকল্প আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন আদিবাসী যুবক। জঙ্গলমহল রাইপুর ব্লকের সমরপচা গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ টুডু নিজের জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করে এখন বিকল্প আয়ের সংস্থান খুঁজে পেয়েছেন। তাঁর এই সাফল্যের কাহিনি ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়াতে।
প্রথাগত চাষ ছেড়ে হঠাৎ কেন এই ড্রাগন ফলের চাষ? সমরপচা গ্রামের যুবক দিলীপ টুডু বলেন, “ধান বা সবজি চাষ করে সেভাবে বিশেষ লাভ হচ্ছে না। তাই বিকল্প আয়ের খোঁজে ব্রয়লার ফার্ম তৈরি করেছিলাম। কিন্তু সেই ব্যবসায় লাভ হয়নি। তাই রুক্ষ জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করার ঝুঁকি নিয়েছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ড্রাগন ফল চাষের বিষয়টি দেখি। এরপর নিজের এক বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করি।”
তিনি আরও বলেন, “এই চাষের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করি। সেখান থেকে ড্রাগন চারা নিয়ে আসা হয়। এরপর তাদের পরামর্শ মতো শুরু করা হয় ড্রাগন চারার পরিচর্যা।” তিনি জানান, এক বিঘা জমিতে ড্রাগন চারা রোপণ, সার, মজুরি, গাছের জন্য প্রয়োজনীয় খুঁটি লাগাতে লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। গাছ লাগানোর প্রায় দেড় বছর পর থেকে ফলন শুরু হয়েছে। বছরে ৪-৫ বার ফল তোলা যায়। প্রতিবার এক কুইন্টাল করে ড্রাগন ফল তুলে বাজারে বিক্রি করেছেন। এক কুইন্টাল ড্রাগন ফলের দাম ২০ হাজার টাকা। অর্থাৎ বছরে এক লক্ষ টাকার ফল বিক্রি হচ্ছে। তবে এলাকায় এখনও সেভাবে ড্রাগন ফলের চাহিদা না থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২০০ থেকে ২২০ টাকার বেশি প্রতি কেজির দাম পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আগামিদিনে এই ফলের চাহিদা বাড়বে এবং দামও মিলবে বলে তিনি আশাবাদী।
খাতড়া মহকুমা কৃষি আধিকারিক গণেশ সিং সর্দার বলেন, “ধান, সবজি চাষের পাশাপাশি অনেকেই বিকল্প ফসলের চাষ করছেন। রাইপুরে ড্রাগন ফলের চাষ একজন শুরু করেছেন। ঠিকমতো পরিচর্যা করে এই চাষ করলে চাষিরা উপকৃত হবেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.