সুব্রত বিশ্বাস: দীর্ঘদিন ধরে ছত্রাকজনিত রোগে মার খাচ্ছে গম চাষ। মরার উপর খাঁড়ার ঘা-এর মতো এবার করোনার আতঙ্কে লকডাউনের ধাক্কায় গম চাষীরা চরম সংকটের মধ্যে পড়েছেন। চাষ করেও খাবার জুটছে না নদিয়া, মুর্শিদাবাদের গম চাষীদের। এহেন পরিস্থিতিতে চাষীদের আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি চাষের সরঞ্জাম দেওয়ায় দাবি জানিয়ে কৃষি দপ্তরের কাছে আবেদন জানালো রাজ্য কিষাণ কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, ‘Magnaporthe oryzae Triticum pathotype’ ছত্রাকের দ্বারা “Wheat Blast” নামক রোগে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গম চাষ। ফলে ২০১৭ সাল থেকে রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলা নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকায় গম চাষ বন্ধ। এই রোগ প্রতিরোধে অবিলম্বে সকল কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা কেন্দ্রগুলিকে কাজে লাগানোর দাবি উঠেছে। ভুক্তভোগী গম চাষীদের জন্য আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি রবি মরশুমে তাঁরা যেন বিকল্প কোনও শস্যের চাষ করতে পারেন তা সুনিশ্চিত করা। বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদানের দাবি জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষি দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল চিফ সেক্রেটারিকে ই-মেলের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কিষাণ কংগ্রেস কমিটি। দলের চেয়ারম্যান তপন দাস জানান, হাজার হাজার গম চাষী আজ বিপন্ন। ঘরে খাবার নেই। কাজ নেই। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সাহায্য না পেলে মানুষগুলো মারা পড়বেন।
উল্লেখ্য, শুধু গম চাষ নয়, লকডাউনের জেরে প্রভাব পড়েছে ফুল ও পান চাষীদের উপরও| পান বাজার বন্ধ যেমন, তেমনি ট্রেন বন্ধ থাকে ভিন রাজ্যেও রপ্তানি করা যাচ্ছে না পণ্যটি। হাওড়ার আমতা, উলুবেড়িয়া, শ্যামপুরের ত্রিশ শতাংশ জমিতে পান চাষ হয়। পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সোনারপুর ও উত্তর দিনাজপুরের একটা অংশ পান চাষের উপর নির্ভরশীল। লকডাউনে এই চাষীদের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে বেঁচে থাকলেও পরবর্তী সময়ে অর্থের অভাবে আর চাষ করতে পারবেন না বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.