Advertisement
Advertisement
West Bengal govt mulls Hilsa farming in villages

এবার পুকুর থেকেই মিলবে ইলিশ, গ্রামগঞ্জে রুপোলি শস্য চাষের নয়া উদ্যোগ নবান্নের

ইলিশ চাষ বাবদ পুকুরপিছু ৫০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ হবে।

West Bengal govt mulls Hilsa farming in villages । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:June 3, 2022 2:16 pm
  • Updated:June 3, 2022 3:22 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: যখন খুশি জাল ফেললেই হল। পুকুরপাড়ে ছটফটিয়ে উঠবে সাগরের রুপোলি শস্য। মন আলো করে পাতে পড়বে ইলিশের হরেক পদ। রূপকথা নয়, সত্যি। বারো মাস যাতে গ্রামগঞ্জের পুকুরেও ইলিশ চাষ করা যায়, সে জন্য এবার উদ্যোগী নবান্ন। এ ব্যাপারে মৎস্য দপ্তর গাঁটছড়া বেঁধেছে স্যামন চাষে সাফল্য পাওয়া ‘নরওয়েন ইনস্টিটিউট অফ ফুড, ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার রিসার্চ’ (নোফিমা)-এর সঙ্গে।

স্বনামধন্য ওই মৎস্য গবেষণা সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে চলতি মাসেই ভিডিও কনফারেন্সে বসবেন মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকরা। রূপরেখা ছকে নেবেন। তারপর বাংলায় এসে সরেজমিনে সবটা দেখবেন। এমনটাই জানালেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। তাঁর বক্তব্য, ইলিশের পোনা সংগ্রহ থেকে প্রতিপালন, সব কিছুতেই নোফিমা প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে। অখিলবাবুর পর্যবেক্ষণ, “ইলিশ নিছক মাছ নয়, বাঙালির আবেগ। কিন্তু আবহাওয়া ও নদীর ভূ-বৈচিত্র্য বদলে যাওয়ায় গঙ্গায় এখন ইলিশ সেভাবে পাওয়া যায় না। ভাল ইলিশের জন্যে সেই বাংলাদেশের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়। তাই এবার পুকুরে ইলিশ চাষের চেষ্টা শুরু হল।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহেই উচ্চমাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ, দিনক্ষণ ঘোষণা সংসদের]

অখিলবাবু আরও জানিয়েছেন, প্রকল্পের‌ জন্য প্রাথমিকভাবে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার কাছে গঙ্গাপাড়ের কয়েকটি পুকুরকে বাছাই করা হয়েছে। ইলিশ চাষ বাবদ পুকুরপিছু ৫০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ হবে। দপ্তরের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, আগামী তিন বছর ধরে নোফিমার সহযোগিতায় ইলিশ চাষের চেষ্টা হবে বঙ্গে। মাসখানেকের মধ্যেই সবটা চূড়ান্ত হবে। নোফিমার বিশেষজ্ঞরা বাংলায় এসে ইলিশ মাছের প্রজনন সংক্রান্ত যাবতীয় আচরণ, ইলিশের খাদ্য, ইলিশ পরিযানের পথ-সবই পর্যবেক্ষণ করবেন। প্রয়োজনে সমুদ্র এবং গঙ্গার মধ্যে বড়ো বড়ো খাঁচাও পরীক্ষামূলক ইলিশ চাষের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। উদ্দেশ্য একটাই, ইলিশ চাষকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে যত ইচ্ছা উৎপাদন সম্ভব।

ঘটনা হল, পুকুরে ইলিশ চাষের চেষ্টা বাংলায় আগেও হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি দু’তরফেই। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর)-এর তত্ত্বাবধানে বারাকপুরের ‘সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিসারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সফল হয়নি। ১০০ গ্রামের বেশি বড় করা যায়নি ইলিশের পোনাকে। এবার তাই আটঘাট বেঁধে নামছে মৎস্য দপ্তর। মাছ চাষে বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রগণ্য সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।

দপ্তরের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, “কাজটা কঠিন। কিন্তু সফল হলে ইতিহাস তৈরি হবে। তাই খুঁজে খুঁজে নরওয়ের সংস্থার সঙ্গে মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে।” স্রোতহীন বদ্ধ জলাশয়ে স্যামন মাছ চাষে সাফল্য পেয়েছে নোফিমা। ইলিশের মতো স্যামন মাছও সমুদ্রে বাস করে। কিন্তু ডিম পাড়তে এবং বাচ্চা ফুটিয়ে বড় করতে নদীতে যায়। স্যামনের জীবনবৃত্তের সঙ্গে ইলিশের বিস্তর মিল। তাই নোফিমার সঙ্গে বন্ধুত্ব স্বপ্ন দেখাচ্ছে অখিলবাবুদের।

যদিও প্রশ্ন উঠছে, এই ভাবে বড় করে তোলা ইলিশে কি আদৌ বনেদি স্বাদ-গন্ধ থাকবে? গবেষকদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, ইলিশ একমাত্র ডিম পাড়ার সময় ঝাঁক বেঁধে মিষ্টি জলে আসে, বাকি সময় সাগরেই বসবাস। প্রবল স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কেটেই তাদের জীবনধারণ। তাই ইলিশের জীবনচক্রের সঙ্গে মিষ্টি ও নোনা-দু’ধরনের জলস্রোত জড়িত, শুধু পুকুরে তা মিলবে না। ওই ঘাটতি পূরণে মিষ্টি জলের পুকুরে লবণাক্ত জলের কৃত্রিম স্রোত তৈরির চেষ্টা হবে বলে জানা গিয়েছে।

[আরও পড়ুন: ‘প্রত্যেক মসজিদে শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব খোঁজার দরকার কী?’, জ্ঞানবাপী বিতর্কে উলটো সুর RSSপ্রধানের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement