অরূপ বসাক, মালবাজার: শীতের তরকারি হোক কিংবা মিঠে রোদ্দুর গায়ে মেখে মুড়ি খাওয়া, একটি উপকরণ ছাড়া যেন আয়োজনই অসম্পূর্ণ। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। কথা হচ্ছে কড়াইশুঁটি নিয়ে। শিম পরিবারের এই সবজি প্রায় প্রতি গৃহস্থের হেঁশেলেই ঠাঁই পায়। তাই তো কড়াইশুঁটির চাহিদাও বাড়ছে দিনে দিনে। পুষ্টিগুণ যেমন রয়েছে তেমনই আবার অতিরিক্ত লক্ষ্মীলাভের মাধ্যম হিসাবেও কড়াইশুঁটির কোনও বিকল্প নেই। শীতপ্রধান এলাকার সবজি হওয়ায় উত্তরের কৃষকদের মধ্যেও কড়াইশুঁটি চাষের আগ্রহ বাড়ছে।মালবাজার মহকুমার গজলডোবা, ক্রান্তি, চাপাডাঙা, চ্যাংমাড়ি, টাকিমাড়ি এলাকায় ভাল এবং প্রচুর মটরশুঁটির চাষ হয়। কড়াইশুঁটি চলে যাচ্ছে শিলিগুড়ি, ধুপগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির বাজারে। আর এতেই কৃষকেরা আর্থিক দিক থেকে অনেকটাই সাবলম্বী হচ্ছেন। মালবাজার মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের এই চাষের ব্যাপারে সরকারিভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মিলছে আর্থিক সাহায্যও।
জলবায়ু ও মাটি: কড়াইশুঁটি শীত প্রধান ও আংশিক আর্দ্র জলবায়ুর উপযোগী ফসল। কড়াইশুঁটি চাষের সবচেয়ে উপযোগী তাপমাত্রা হল ১০ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। কড়াইশুঁটি চাষের জন্য দোআঁশ মাটি সব থেকে উপযোগী।
চাষের সময়: কড়াইশুঁটি চাষের উপযুক্ত সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। মোটের উপর এই চার মাসই অনুকুল জলবায়ু। তবে নভেম্বর মাস কড়াইশুঁটির বীজ বপনের সবচেয়ে ভাল সময়।
বীজ বপন পদ্ধতি: কড়াইশুঁটির বীজ সারি করে বপন করা উচিত। জমিতে ৪০ সেন্টিমিটার দূরত্বে সারি করে ২০ সেন্টিমিটার পর পর বীজ রোপণ করতে হবে। কড়াইশুঁটি চাষে জোড়া সারি পদ্ধতিতে চাষ করা ভাল।
সার প্রয়োগ: কড়াইশুঁটি চাষের জন্য প্রতি শতক জমিতে ৪০ কিলোগ্রাম গোবর সার, ৪০০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। শেষ চাষে সার প্রয়োগের অন্তত ৭-১০ দিন পরে মটরের বীজ বপন করতে হবে।
জলসেচ: ভাল ফলন পেতে কড়াইশুঁটির জমিতে কমপক্ষে দুই থেকে তিনটি সেচ দিতে হবে। ফল ধরলে অন্তত একবার সেচ দেওয়া জরুরি। জমিতে যেন জল না দাঁড়ায় সেদিকে নজর দিতে হবে। জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
আগাছা ও নিড়ানি: নিড়ানি দিয়ে মাঝে মাঝে সারির দু’পাশের আগাছা তুলে ফেলে আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। সারির মাঝে হালকা কোপ দিয়ে মাঝের আগাছা নষ্ট করে ফেলতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.