বাজার থেকে সবজি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘বিষযুক্ত’ হওয়ার সম্ভাবনা। সার ও কীটনাশক ব্যবহারও এর কারণ। তাই কিচেন গার্ডেনে জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে বিষমুক্ত ফলন পাওয়া যায়। পাশাপাশি, বেশি দামে বাজার থেকে সবজি কেনার প্রয়োজন পড়বে না। সংসার খরচে সাশ্রয় হবে অনেকটাই। বাজারে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে সবজি বাজারজাত করা যেতে পারে। একই সঙ্গে সবজি বাগানে ফলের গাছও লাগানো যায়। লিখেছেন দুর্গাপুরের সহ উদ্যানপালন আধিকারিক ড. দেবাশিস মান্না। পড়ুন প্রথম পর্ব।
বাড়ি সংলগ্ন বা রান্নাঘরের আশেপাশের সবজি বাগান, যেখানে পরিবারের সকল সদস্য বিশেষ করে মহিলাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সারাবছর বিভিন্ন রকমের শাকসবজি ও ফলের চাষ করা হয়। এই বাগানকেই আমরা কিচেন গার্ডেন বলি।
কিচেন গার্ডেনের গুরুত্ব
১) বাজারের বিষযুক্ত সবজি থেকে রেহাই পেতে কিচেন গার্ডেনের সবজি ফলনের প্রয়োজনীয়তা আছে।
২) প্রতিনিয়ত সবজির বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী, ফলে সাধারণ মানুষের ইচ্ছা থাকলেও বাজার থেকে পছন্দ মতো সবজি কেনা হয় না, তাই সেই চাহিদা কিচেন গার্ডেনের মাধ্যমে পুরণ করা সম্ভব।
৩) ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞান পরিষদ (ICMR) অনুযায়ী একজন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ৩০০ গ্রাম শাক-সবজি ও ৮৫ গ্রাম ফল খাওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে ১২৫ গ্রাম সবুজ পাতা জতীয় সবজি, ১০০ গ্রাম আলু বা কন্দ জাতীয় সবজি ও ৭৫ গ্রাম অন্যান্য সবজি খাওয়া দরকার। কিন্তু আমরা ভারতীয়রা গড়ে প্রতিদিন ১০০-১২৫ গ্রাম শাক-সবজি পেয়ে থাকি। কারণ সবজি ও ফলের গুণাগুণ সঠিক ভাবে না জানা এবং প্রয়োজনের তুলনায় কম উৎপাদনই এর জন্য দায়ী। অন্যদিকে, প্রয়োজনীয় ফলের চাহিদা পুরণের জন্য, সবজি বাগানের কোনও অংশে কয়েকটি ফলের গাছ আম, পেঁপে, কলা, লেবু, সজনে গাছ লাগালে সবজির পাশাপাশি ফলের চাহিদাও পূরণ করা যায়।
ঘরোয়া সবজি বাগান বা কিচেন গার্ডেন থেকে আমরা কী কী পেতে পারি
ক) টাটকা সবজি প্রতিদিন পাওয়া যায়। ফলে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজ লবণ পাওয়া যায়।
খ) বাড়ির আশেপাশে খালি জমি কাজে লাগানো যায়।
গ) অপুষ্টিজনিত রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ঘ) বিষমুক্ত সবজি পাওয়া যায়।
ঙ) আর্থিক সাশ্রয় হয়।
চ) উদ্বৃত্ত সবজি বাজারে বিক্রয় করে স্বনির্ভরতা উপার্জনের পথে এগিয়ে যাওয়া যাবে।
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রয়োজনীয় সবজি ফলনের জন্য ১ শতক জমির প্রয়োজন। এই হিসাবে একটি ৫ জনের পরিবারের জন্য কিচেন গার্ডেন করতে হলে নিম্নলিখিত জিনিসগুলি নজর রাখা দরকার:
১) খোলামেলা জমি/ রৌদ্র পড়ে এধরনের উঁচু বা মাঝারি জমির দরকার। মাটি দোঁয়াশ হলে ভাল, না হলে পরিমাণ মতো জৈব সার ও অন্যান্য দ্রব্য মিশিয়ে উর্বর করে নিতে হবে। জমিতে জল নিকাশ ও সেচের ব্যবস্থা অবশ্যই থাকতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.