সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘নারকেলি’ সবেদায় মন ভরেছে জঙ্গলমহলের। এবার সেই সবেদা ভিন জেলায় বাজারজাতকরণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ বা ওয়েস্ট বেঙ্গল
কম্প্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন (সিএডিসি)-র অযোধ্যা পাহাড় প্রকল্প। সবেদার এই ‘নারকেলি’ জাতের ফল বিপুল হারে উৎপাদন করে সামগ্রিকভাবে বাংলার বাজারে নিয়ে আসতে ২৫০টি
ফল গাছের আলাদা বাগান করা হয়েছে পুরুলিয়ার বলরামপুরের কুমারীকাননে সিএডিসির অযোধ্যা পাহাড় প্রকল্পে।
সবেদার এই ‘নারকেলি’ প্রজাতি ঠিক কীরকম? এই ফলের আকৃতি অনেকটাই ডিমের মতো। লম্বাটে। ভীষণই সুস্বাদু, মিষ্টি। যা বাজারে সেভাবে দেখা যায় না। সবেদা বলতে বাজারে যা দেখা যায় তা একেবারে বলের মতো গোল। এই প্রজাতির নাম ‘ক্রিকেট বল’। এই জাতের সবেদাও চাষ হচ্ছে কুমারীকাননে। তবে ‘নারকেলি’-র চাহিদা সবচেয়ে বেশি। চামড়াটা একেবারেই পাতলা। এই জাতের ফলের ওজন হয় ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম। বর্তমানে কুমারীকাননের ফলের বাগানে যে গাছ থেকে এখন এই ফল মিলছে সেই গাছ রয়েছে মাত্র ১০ টি। ওই গাছগুলি থেকেই জঙ্গলমহলের রসনা তৃপ্তি হচ্ছে। গ্রীষ্মের শেষের এই ফলের ‘নারকেলি’-কে
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পাঠাতে সুসংহত পরিকল্পনা নিয়েছে সিএডিসি-র অযোধ্যা পাহাড় প্রকল্প।
ওই প্রকল্পের আধিকারিক সুশান্ত খাটুয়া বলেন, ” আমাদের প্রকল্প এলাকায় সবেদার দুটো প্রজাতির চাষ হয়। একটা ‘ক্রিকেট বল’ আরেকটা ‘নারকেলি’। ‘ক্রিকেট বল’ জাতের সবেদা সকলেরই চেনা। বলের মতো গোল আকৃতি হয়। ছালটা মোটা। সুস্বাদু। কিন্তু লম্বাটে আকারের স্থানীয় জাতির সবেদার নাম ‘নারকেলি’। এটা ভীষণই মিষ্টি। জঙ্গলমহলে এই প্রজাতির সবেদার চাহিদা এতটাই বেশি যে এটা আমরা বাইরের জেলায় পাঠাতে পারি না। তবে আগামী দিনে এই সবেদাকে অন্যান্য জেলায় বাজারজাতকরনের আমরা একটা পরিকল্পনা নিয়েছি। “
কী সেই পরিকল্পনা? এই প্রজাতির যে ২৫০ গাছ লাগানো হয়েছে সেখান থেকে উৎপাদিত ফলই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বাজারে পাঠানো হবে। তবে ওই গাছ থেকে ফল পেতে আরও চার-পাঁচ বছর লেগে যাবে। এই গাছের বয়স এখন প্রায় আট বছর। তাই ‘নারকেলি’ প্রজাতির যে ১০ টি বড় গাছ রয়েছে সেখান থেকেই কিছু ফল আগামী বছরে অন্যান্য জেলায় সিএডিসির ব্র্যান্ডিংয়ে কন্টেনারে প্যাকেটবন্দি করে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিএডিসির অধীনে স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই চাষ করছে। উৎপাদিত সবেদার এই ‘নারকেলি’ ফল বনমহলের স্থানীয় স্তরে বিক্রি করে ফি বছরই আয়ের মুখ দেখছেন স্বনির্ভর দলগুলি। কিন্তু সেই আয় আরও বাড়াতেই ভিন জেলায় পাঠানোর পরিকল্পনা সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের অযোধ্যা পাহাড় প্রকল্পের। তাদের আশা, এই জাতের ফল একটা আলাদা বাজার ধরবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.