টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: সময়মতো বৃষ্টির অভাবে আমন ধানের চাষ মার খেয়েছিল বাঁকুড়ায়। সেই ক্ষতি সামাল দিতে চাষিদের বিনামূল্যে তৈলবীজ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সরকারের দেওয়া সেই সরষে বীজে ফলন না হওয়ায় বিতর্কের ঝড় উঠেছে। ইতিমধ্যেই বড়জোড়া-সহ জেলার বেশ কিছু ব্লক থেকে সেই অভিযোগ এসেছে জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকের কাছে।
এ বিষয়ে রাজ্যের শাসক দলের শাখা সংগঠন বাঁকুড়া জেলা কিষাণ ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের সভাপতি তথা বড়জোড়ার প্রাক্তন বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “আমাদের জেলায় কৃষি দপ্তর থেকে তিন প্রজাতির সরষে বীজ বিলি করা হয়েছিল। সেগুলি হল কেশরী গোল্ড, বি-৯, আর টোরি বি-৫৯। সমস্যা তৈরি হয়েছে টোরি বি-৫৯ প্রজাতির সরষে বীজ ঘিরে। এই প্রজাতির সরষে বীজ বিলির আগে এ সম্পর্কে কৃষকদের কোনও কিছু জানানো হয়নি। ফলে বেশ কিছু এলাকায় ফলন মার খেয়েছে।”
যদিও বাঁকুড়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সুশান্ত মহাপাত্র এই ব্যাপারে পরোক্ষে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। এ ব্যাপারে কৃষি দফতরের পরামর্শ, ফসল ঘরে তোলার পর বিমা কোম্পানির কাছে আবেদন করলেই ক্ষতিপূরণ পাবেন কৃষকরা। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, টেরি বি-৫৯ প্রজাতির সরষে বীজ অসেচ এলাকায় কম জলে চাষের জন্য কৃষকদের মধ্যে বিলি করা হয়েছিল। বাঁকুড়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সুশান্ত মহাপাত্র এ সম্পর্কে বলেন, “বৃষ্টির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্যই সরকারের তরফে এই জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে যে বীজ বিলি করা হয়েছিল তাতেই মূলত সমস্যা দেখা দিয়েছে। জেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে এবার সরষের চাষ হয়েছে। তার মধ্যে এক লক্ষ ২০ হাজার প্যাকেট সরষের বীজ বিলি করেছে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি। আর কৃষি দপ্তরের তরফে বিলি করা হয়েছে মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ হাজার প্যাকেট সরষের বীজ। যা দিয়ে প্রায় ৫২০০ হেক্টর জমিতে চাষ করা সম্ভব।”
তবে কৃষি অধিকর্তা যাই বলুন না কেন, জেলার বেশ কিছু এলাকায় সরষের ফলন কম হওয়ার কারণে কৃষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বাঁকুড়া ওন্দা থানা এলাকার বাসিন্দা পেশায় কৃষিজীবী সৌরভ ঘোষ বলেন, বিভিন্ন প্রজাতি সংক্রান্ত সরষের বীজ বিলি করার আগে কোনও প্রশিক্ষণ না দেওয়ার কারণেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। একই বক্তব্য বড়জোড়ার কৃষক সন্দীপ গুঁইয়ের। তবে জেলা বেশ কিছু এলাকায় সরষের ফলন কমে যাওয়া প্রসঙ্গে কৃষি কর্তাদের পালটা পরামর্শ, ফসল ঘরে তোলার পর বিমা কোম্পানির কাছে আবেদন করুন, ক্ষতিপূরণ পাবেন কৃষকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.