সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: লকডাউনে বন্ধ রপ্তানি। অথচ ফল পেকে পড়ে রয়েছে। বিপুল পরিমাণ ফলন হলেও, নিরুপায় হয়ে তা খেতেই ফেলে রাখতে হচ্ছে। শিলিগুড়িতে প্রধান অর্থকরী ফসল আনারসের চাষিরা করোনার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লকডাউনের জেরে এখন বিপুল ক্ষতির মুখে। প্রাথমিক হিসেবে অন্তত ৪১ কোটি টাকার ফলন নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন আনারস চাষিরা।
শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়া মহকুমার বিধাননগর এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার বিধাননগর লাগোয়া চোপড়া কালাগছ এবং কিছুটা কোচবিহার মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয় উত্তরবঙ্গে। বর্তমানে মাঠে আনারস আছে প্রায় ৫৫৫ হেক্টর জমিতে। দেড় কোটির বেশি আনারস রয়েছে। যার মোট ওজন প্রায় ২০৮১২ টন। বর্তমানে বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৪১ কোটি টাকারও বেশি বলে জানিয়েছেন বিধাননগর পাইনাপেল গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অরুণ মণ্ডল।
বিধাননগর এলাকার একটি আনারস কো-অপারেটিভের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক প্রদীপ সিংহ বলেন, “বিধাননগর এলাকার একটি আনারস কো-অপারেটিভ সোনার বাংলা অ্যাগ্রোর মুখ্যকর্তা প্রদীপ সিংহ জানান, মূলত হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি এলাকায় বিপুল পরিমাণ আনারস জ্যাম, জেলি, জুসের জন্য পাঠানো হয়। মূলত পুরো পাকা আনারসের চেয়ে একটু কাঁচা আনারসই তাঁরা খেত থেকে তুলে নেন। সেটিকে কার্বাইডে পাকিয়ে বাইরের রাজ্যে রপ্তানি করা হয়। যা গত একমাস ধরে পুরোপুরি বন্ধ। সময় মতো আনারস তোলা যায়নি। পাশাপাশি খেতেই আনারস পেকে যাচ্ছে। যা দ্রুত পচতে শুরু করবে।” বিধাননগরের অন্যতম আনারস চাষি সুধীর ঘোষ বলেন, “ফল পেকে খেতেই পড়ে রয়েছে। লকডাউনের আগে কিছু ফল তোলা হয়েছিল বাইরে পাঠানোর জন্য, সেগুলিও পাঠানো যায়নি। গত তিন-চার দিন ধরে সামান্য পরিমাণ আনারস বস্তায় ভরে শিলিগুড়ি, ইসলামপুর, জলপাইগুড়ি-সহ আশপাশের বাজারগুলিতে বিক্রির জন্য কিছু লোক নিয়ে যাচ্ছে। তবে তা সামান্য পরিমাণে।
যদিও এই উদ্বৃত্ত ফলনের সুবিধা খুচরো ক্রেতারা পাচ্ছেন না। শিলিগুড়ির বাজারে একটি আনারস পনেরো থেকে কুড়ি টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ খেতে ফসল পড়ে রয়েছে অঢেল। শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায় জানিয়েছেন, চাষিরা যদি সরাসরি বিক্রি করতে চায়, তাহলে তাঁদের সম্পূর্ণ সহায়তা করবে মহকুমা এবং ব্লক প্রশাসন। ফল বিক্রি করতে গাড়ির সমস্যা হলে সেক্ষেত্রে যোগাযোগ করলে ব্লক ও মহকুমা প্রশাসন সম্পূর্ণ সহায়তা করবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.