রঞ্জন মহাপাত্র: রাজ্যে এই প্রথম শুরু হল নতুন প্রজাতির ‘গিফট তেলাপিয়া’ চাষ। পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার দুই মৎস্যচাষির হাত ধরে শুরু হয়েছে নতুন প্রজাতির মাছ চাষ। তামিলনাড়ুর রাজীব গান্ধী সেন্টার ফর একুয়াকালচার (আরজিসিএ) সরকারি সংস্থা থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল এই ‘গিফট তিলাপিয়া’। তেলাপিয়া মিষ্টি জলের মাছ। ‘গিফট তেলাপিয়া’ মাছ নানা রোগ প্রতিরোধী। শরীরে রয়েছে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। যা আদতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি মানব শরীরে হৃদরোগের শঙ্কা অনেকটা কমায়। কোলেস্টেরলের সঠিক মাত্রা ধারণে সাহায্য করে। এমনকী ধমনীতে ব্লকেজ ঠেকাতেও দারুণ কাজ করে।
ভারতবর্ষে ১৯৫২ সালে তেলাপিয়া মাছের চাষ শুরু হলেও, ১৯৫৯ সালে তা নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় সরকার। মশার লার্ভা খায় বলে এক সময় বায়োলজিক্যাল কন্ট্রোলেও ব্যবহার করা হয়েছিল তেলাপিয়া। কয়েক বছরের মধ্যেই দেখা যায়, প্রজনন হার বেশি হওয়ায় পুকুর থেকে খাল, বিলের মতো জলাশয়ে ব্যাপক হারে বাড়ছে তেলাপিয়ার সংখ্যা। যার ফলে জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছিল। তাই, শর্তসাপেক্ষে চাষ শুরু হয় তেলাপিয়া মাছের। পুরুষ ও স্ত্রী তেলাপিয়া একসঙ্গে চাষ করলে বংশ বিস্তার খুব দ্রুত হয়। এতে মাছের সংখ্যা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে এবং ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে যায়। সব পুরুষ তেলাপিয়া মাছের চাষে এ সমস্যা আর থাকে না। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সব পুরুষ তেলাপিয়া মাছের বাচ্চা উৎপাদনের সর্বশেষ লাভজনক প্রযুক্তি হল জেনেটিক্যালি ইমপ্রুভড ফার্ম তেলাপিয়া। এই তেলাপিয়াই ‘গিফট তেলাপিয়া’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
মৎস্যচাষি রঙ্গলাল সামন্ত ও রঞ্জিত ভৌমিককে এই প্রকল্পে দু’হাজারটি করে ‘গিফট তেলাপিয়ার’ পোনা তুলে দেওয়া হয়। মাছটি জেলার আবহাওয়ার সঙ্গে দারুণভাবে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। নতুন ধরনের এই মাছগুলি দারুনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই মাছ চাষ খুবই লাভজনক বলে মনে করছেন মৎস্যচাষিরা। হলদিয়া ব্লকের মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু জানান, ‘গিফট তেলাপিয়া’ চাষের সাফল্য এলাকার মাছ চাষিদের অনুপ্রাণিত করবে। এটি রপ্তনিযোগ্য মাছ। যা চাষিদের আয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.