রাজা দাস, বালুরঘাট: ধান, গম, পাট, সরিষা কিংবা অন্য গতানুগতিক চাষের পাশাপাশি এবার গাঁদা ফুল চাষে নতুন দিগন্ত খুলে দিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের কৃষকরা। গঙ্গারামপুরে কিছু দিন আগে এই চাষ শুরু হয়। ধীরে ধীরে গোটা জেলা জুড়ে ছোট-বড় সমস্ত প্রান্তের কৃষকদের গাঁদা চাষে উৎসাহিত করতে জেলা কৃষি দপ্তরে তৎপরতা শুরু হয়েছে।
প্রথম অবস্থায়, গাঁদা ফুলের চাষ করে সফল হয়েছেন বেশ কয়েকজন কৃষক। আগামী দিনেও তাঁরা এই ফুল চাষ করতে চান বলে জানিয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের শিববাড়ি এলাকার কৃষকরা আগে মূলত ধান, পাট, গম ও সরিষা চাষ করতেন। দিন দিন এই সব উৎপাদিত ফসলের দাম কমায় ও কৃষি সামগ্রীর দাম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিকল্প চাষের চিন্তাভাবনা শুরু করেন।
কৃষি দপ্তরের পরামর্শে এই অঞ্চলের কৃষকরা গতানুগতিক চাষের পাশাপাশি গাঁদা ফুল চাষ করতে উৎসাহী হন। অবশেষে এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক গাঁদা ফুল চাষের প্রক্রিয়া শুরু করেন। প্রথমে অল্প জমিতে এই চাষ শুরু করেন। দক্ষিণবঙ্গের রানাঘাট থেকে গাঁদা ফুলের চারা নিয়ে আসেন স্থানীয় কৃষকরা। আশ্বিন মাসে জমি তৈরি করে তাতে গাঁদা ফুলের চাষ শুরু করেন। সব মিলিয়ে এক বিঘে জমিতে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। ভাল ফলন হলে ফুল বিক্রি হয় দ্বিগুণ দামে বিক্রি সম্ভব। এতে ধান, গম, পাট বা ভুট্টা চাষ থেকে লাভের হার অনেকটাই বেশি হয়।
কৃষক বিষ্ণুপদ সরকার জানান, সারাবছর তো বটেই, শীতের মরশুমেও নানা অনুষ্ঠানে গাঁদা ফুলের চাহিদাও অনেক বেশি থাকে। তাই এই চাষে উৎসাহী হন তাঁরা। নিজের সামান্য কিছু জমি থাকলেও অন্যের জমি লিজ নিয়ে তাতে গাঁদা ফুল লাগিয়েছেন। গত আশ্বিন মাসে দক্ষিণবঙ্গের রানাঘাট থেকে ২৫ পয়সা দরে গাঁদার চারা এনে জমিতে লাগান। অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে তিনি বাজারে ফুল বিক্রি শুরু করেন। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই টাকা এক মাসেই উঠে গিয়েছে বলে দাবি বিষ্ণুবাবুর। তাঁকে দেখে জেলার আরও অনেক কৃষক গাঁদা ফুল চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.