টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: কেউ দশ হাজার আবার কেউ বারো হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন৷ মাত্র কয়েকবছরে গোলাপ ফুলের চাষ করে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করছেন এ রাজ্যের কৃষকেরা৷ আলুর পাশাপাশি তাই এবার ১০০ দিনের প্রকল্পে গোলাপ ফুল চাষের দিকে ঝুঁকছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন।
ভালবাসার প্রকাশ হোক কিংবা বসন্ত উৎসব৷ বিয়ের অনুষ্ঠান হোক বা একুশে ফেব্রুয়ারি সবেতেই গোলাপ ফুলের চাহিদা রয়েছে৷ চাহিদার কথা মাথায় রেখে এই ফুল চাষ শুরু করেন বাঁকুড়ার কয়েকজন কৃষক৷ বাঁকুড়ার মতো রুখাশুখা জেলায় সেভাবে বাণিজ্যিকভাবে কৃষকরা গোলাপের চাষ করেননি। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাঁকুড়ার জয়পুর, বড়জোড়া, মানাচর, বিষ্ণুপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় ফুলের চাষ করেছেন বেশ কয়েকজন। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েই লাল মাটির দেশে গোলাপ ফুলের চাষ করার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন৷ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা গোলাপ ফুল চাষে হাত লাগিয়েছেন৷ বাঁকুড়া-১, রায়পুর, খাতড়া, শালতোড়া, গঙ্গাজলঘাঁটি, ওন্দা-সহ বেশ কয়েকটি ব্লকে চলছে চাষ। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, ২২-২৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সহজেই গোলাপ ফুল ফোটানো সম্ভব৷ এছাড়া ৮৫ শতাংশ আর্দ্রতা প্রয়োজন৷ ১০০ থেকে ১২৫ সেমি গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত গোলাপ চাষের জন্য উপযোগী। মিন্ডি, পাপা মেলান্ডা, ডাবল ডিলাইট, তাজমহল, প্যারাডাইস, ব্লুমুন, মেন্টেজুমা, টাটা সেন্টার-সহ একাধিক জাতের গোলাপফুল নিয়ে চলতি বছর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে বাঁকুড়ায়।
ওন্দার বিধায়ক অরুপ খাঁ বলেন, ‘‘আমবাগানের মতো গোলাপ ফুলের চাষও পরিবেশবান্ধব। এই চাষে আরও বেশি করে কৃষকদের উৎসাহ জোগাতে হবে৷’’ সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র গলাতেও একই সুর৷ তিনি বলেন, ‘‘বিগত কয়েকবছর ধরে বাঁকুড়ার আলুচাষিরা অতিরিক্ত ফলনের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সেই কারনে বিকল্প হিসাবে গোলাপ ফুল চাষকেই বেচ্ছে নিচ্ছেন কৃষকরা৷’’ জেলার অর্থনৈতিক পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করতে গোলাপ চাষ বাড়াতে হবে বলেও জানান তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.