ধীমান রায়, কাটোয়া: সেচের জন্য ডিভিসির জল পাবেন, এই আশা করে বোরোচাষের জন্য বীজতলা তৈরি করে রেখেছিলেন অনেক কৃষক। কিন্তু জল আসেনি। ফলে শুকিয়ে যাচ্ছে বীজতলা। রোপনে সময়ও অতিক্রান্ত। তাই খরচ করে বীজতলা তৈরি করেও বীজধান গোরু মোষকে খাইয়ে দিচ্ছেন পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের বেশকিছু কৃষক। স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক বাপুচাঁদ ঘোষ, তপন ঘোষরা বলেন, “একবিঘা জমিতে বীজতলা করতে ১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছে। ক্যানেলে জল আসেনি। বীজতলা শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই গোরুকে বীজধান খাইয়ে দিচ্ছি।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর পূর্ব বর্ধমান জেলায় বোরোচাষ ও রবিচাষে ডিভিসির জল বন্টন নিয়ে বর্ধমান সার্কিট হাউসে প্রশাসনিক বৈঠক হয়। জানানো হয় কত পরিমাণ জল দেওয়া হবে। এলাকাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। যদিও মঙ্গলকোটের এইসমস্ত এলাকায় ডিভিসির জল দেওয়ার কথা প্রশাসনিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তা সত্বেও কৃষকরা ঝুঁকি নিয়ে বীজতলা তৈরি করে রেখেছেন। কিন্তু কেন ঝুঁকি নিলেন কৃষকরা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এবিষয়ে মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধক্ষ্য বুদ্ধদেব ভারুই বলেন, “আসলে বিধানসভা ভোট আসছে। কৃষকদের একাংশ ভেবেছিলেন হয়তো এবছর সকলে বোরোচাষে ক্যানেলের জল পাবেন। তাই নিজেরা ঝুঁকি নিয়ে বীজতলা তৈরি করে রেখেছিলেন।” পাশাপাশি বুদ্ধদেববাবু বলেন, “মঙ্গলকোটের কয়েকটি গ্রাম মিলে ১৭৫ – ১৮০ জন কৃষক সেচের সংকটে কারণে সমস্যায় পড়েছেন। তাঁরা আমাদের কাছে এসেছিলেন। সাবমার্সিবল পাম্পের আওতায় যেসব জমি রোয়ানো হয়ে গিয়েছে সেসব জমির কিছুটা অংশেও সেচের সংকট হচ্ছে জলস্তর নেমে যাওয়ায়। আমরা সেইসমস্ত জমি যাতে বাঁচানো যায় তার জন্য প্রশাসনিক মহলে আলোচনা করছি।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোট ব্লকে গতবছর ৯৩০০ হেক্টর জমিতে বোরোচাষ হয়েছিল। এবছরের হিসাবে ৯৩০৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। অর্থাৎ জমি কিছুটা বেড়েছে। তার উপর ভূগর্ভস্থ জলস্তর নামছে। তাই শেষপর্যন্ত সাবমার্সিবল পাম্পের ভরসায় সব জমি সেচ পাবে কিনা তা নিয়েও আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকদের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.