Advertisement
Advertisement
Red spider is affecting tea plantation in North Bengal

উত্তরের চা বলয়ে ‘রেড স্পাইডারে’র হামলা, ৩০% উৎপাদন কমার আশঙ্কা

বিপাকে পড়েছেন ৫০ হাজার ক্ষুদ্র চা চাষি।

Red spider is affecting tea plantation in North Bengal । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:February 17, 2023 6:03 pm
  • Updated:February 22, 2023 5:44 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: আবহাওয়ার খামখেয়ালিতে উত্তরের চা বলয়ে ‘রেড স্পাইডারে’র হামলা শুরু। দোসর হয়েছে রাক্ষুসে ‘সবুজখেকো’ পোকা লুপার। শীতে মাঝারি বৃষ্টি না হওয়ায় এই পরিস্থিতি বলে জানিয়েছেন চা গবেষক মহল। তাদের শঙ্কা তাপমাত্রা বাড়লে সমস্যা জটিল হতে পারে। বড় চা বাগান কর্তৃপক্ষ পোকা মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিলেও বিপাকে পড়েছেন ৫০ হাজার ক্ষুদ্র চা চাষি। তাঁদের কথায়, কৃত্রিম সেচ এবং রাসায়নিক ওষুধ স্প্রে জরুরি হয়েছে। কিন্তু খরচ এতটাই যে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ওই কারণে একদিকে যেমন চা পাতার উৎপাদন ৩০ শতাংশ কমে যাওয়ার শঙ্কা বেড়েছে। তেমনই অন্যদিকে চা পাতার গুণমান তলানিতে পৌঁছনোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরের চা বলয়ে শেষ মাঝারি বৃষ্টি হয় গত বছরের ১০-১২ অক্টোবর। প্রতি বছর ডুয়ার্স ও তরাইয়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়। তবে এবার না মেলায় উদ্বিগ্ন চা গবেষকমহল। তারা জানান, প্রতি বছর ডিসেম্বর থেকে চা গাছ ছেঁটে দেওয়ার কাজ চলে। মাসখানেকের মধ্যে বৃষ্টির জল গাছে লাগে। এবার সেটা হয়নি। কারণ, নভেম্বর মাস থেকে বৃষ্টি নেই। কৃত্রিমভাবে সেচের ব্যবস্থা করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়েছে। পাহাড় ও সমতলের কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে ছিটেফোঁটা যে বৃষ্টি হয়েছে সেটা চা পাতা বৃদ্ধির কাজে লাগেনি। নতুন পাতা ঠিক মতো আসেনি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আমের জেলায় শুরু নয়া ইনিংস, এবার জাপানের ‘মিয়াজাকি’ ফলাবে মালদহ]

অথচ ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চা পাতা তোলার কাজ শুরুর কথা। সেটাই হবে ‘ফার্স্ট ফ্ল্যাশ’। অর্থাৎ মরশুমের প্রথম চা পাতা। দু’মাস পাতা তোলার কাজ চলবে। কিন্তু প্রতিটি বাগানের পক্ষে এই সময় পাতা তোলার কাজ শুরু করা সম্ভব হবে কিনা সন্দেহ আছে। কারণ, কিছু বাগানে পাতা এলেও ‘রেড স্পাইডারে’র মতো পোকা খেয়ে শেষ করছে।  টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের গবেষক তৃণা মণ্ডল বলেন, “এবার শীতে আশানুরূপ বৃষ্টি না মেলায় চা বাগানে রোগ পোকার উপদ্রব বেড়েছে।” চা চাষিদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার একে বৃষ্টি মেলেনি। উলটে কয়েক সপ্তাহজুড়ে ছিল কুয়াশার দাপট। দিনে রোদ ছিল না। এমন প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য চা গাছে নতুন পাতার বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে। এরপর তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করতে বিপদ ঘনিয়েছে।

কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী জানান, বৃষ্টি এবং রোদ না মেলায় চা পাতা উৎপাদনে জটিল সমস্যা দেখা দিয়েছে। একটানা কুয়াশার দাপটের জন্য চা গাছের খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে। পাতার বৃদ্ধি হয়নি। পাশাপাশি গুণগত মানও খারাপ হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে পোকার হামলা। তাপমাত্রার পারদ চড়তে লুপার, লাল পোকা, গ্রিন ফ্লাই অর্থাৎ সবুজ মাছি, চা মশার উপদ্রব বেড়েছে। বিজয়গোপালবাবু বলেন, “লুপারকে রাক্ষুসে সবুজখেকো পোকা বলা হয়। এটা সবুজ চা পাতা চিবিয়ে খেয়ে শেষ করে। ইতিমধ্যে সেটাও চলে এসেছে। লাল পোকা শুষে খাচ্ছে গাছের ডগার রস। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে এখনই বলা যাচ্ছে না।”

ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি,  আলিপুরদুয়ার,  কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর জেলা এবং শিলিগুড়ি মহকুমায় ৫০ হাজার ছোট চা বাগান রয়েছে। সেখান থেকে বছরে গড়ে ১ হাজার ২৫০ মিলিয়ন কেজি কাচা চা পাতা উৎপাদন হয়। ওই সমস্ত বাগানে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য এবার চা পাতার উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

দেখুন ভিডিও:

[আরও পড়ুন: রোগ সারালেই জারবেরা চাষে বিপুল আয়, জেনে নিন রোগমুক্তির দাওয়াই]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement