Advertisement
Advertisement

হারিয়ে যাওয়া ধান ফিরিয়ে সুন্দরবনের দ্বীপে ‘সবুজ বিপ্লব’

গড়ে উঠল ‘বীজ ব্যাঙ্ক’।

Rare types of paddy are being cultivated in Sunderban
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 13, 2017 12:24 pm
  • Updated:September 19, 2019 4:11 pm  

ব্রতীন দাস: সুন্দরবনের মাটি কার্যত অসাধ্য সাধন করলেন স্থানীয় চাষীরা। নিঃশব্দে ঘটিয়ে ফেললেন আরও একটি ‘সবুজ বিপ্লব’! কালের নিয়মে এ বাংলা থেকে হারিয়ে গিয়েছে বহু প্রজাতির ধান। বহু বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ধানের বীজ সংগ্রহ করে ফের ফসল ফলিয়েছেন সুন্দরবনের চাষীরা। শুধু তাই নয়, কালোমোটা, সাদামোটা, কুমারগড়, গোপালভোগ, নিকো, হোগলার মতো বাংলার চিরাচরিত ধানের বীজ সংরক্ষণে ‘বীজ ব্যাঙ্ক’-ও গড়ে তুলেছেন তাঁরা। চাষীদের এই উদ্যোগের তারিফ করেছে রাজ্য কৃষি দপ্তর।

[বাংলার মানবিক মুখ, ভিনরাজ্যের অসহায় ৭ শ্রমিককে ফেরানোর বন্দোবস্ত পুলিশের]

Advertisement

বাঙালির প্রধান খাদ্য ভাত। তাই এ বঙ্গে যে হরেক প্রজাতির ধান চাষ হবে, তাতে আর আশ্চর্যের কি আছে! কিন্তু, ঘটনা হল, কনকচূড়া, কালাভাত, চামড়মণির মতো অনেক প্রকারের ধান হারিয়েও গিয়েছে। দীর্ঘদিনের চেষ্টায় বীজ সংগ্রহ করে সুন্দরবনে  এমনই হারিয়ে যাওয়া ধানের চাষ শুরু করেছেন চাষীরা। সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন ‘বীজ ব্যাঙ্ক’। এই বীজ ব্যাঙ্কে মিলবে হোগলা, ঢেউস, হামাই, পাটনাই, দুধেশ্বর, রানিআকন্দ, চামড়মনি, খাড়ার মতো না না জানা হরেক প্রকারের দেশি ধানের বীজ। মাটির হাঁড়ি, কলসিতে বিশেষ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে বীজ।

RICE2_WEB

সুন্দরবনের গোসাবা, দুলদুলি, হিঙ্গলগঞ্জ এলাকার কৃষকরা জানিয়েছেন, একসময় দুর্বলতা কাটাতে রোগীদের বিশেষ এক ধরনের চালের ভাত খাওয়ার পরামর্শ দিতেন কবিরাজরা। ওই ধানের প্রচুর পরিমাণ আয়রন ও ফাইবার থাকার কারণে, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতেন রোগীরা। এই চালটি কবিরাজশাল নামে পরিচিত ছিল। আবার জয়নগরের মোয়া তৈরির উপকরণ হিসেবে বিখ্যাত ছিল কনকচূড় ধান। কালাভাত ধান ক্যানসার প্রতিরোধক। বিদেশে এই প্রকারের চালের যথেষ্ট চাহিদা আছে। কিন্ত, এ রাজ্যে এখন আর সেভাবে চাষ হয় না। এরকমই নানা প্রকারের ধানের চাষ হচ্ছে সুন্দরবনে।

[নেই জামিনদার, কোর্টের নির্দেশে এক ডজন মোষ পাহারায় পুলিশ]

কিন্তু, হঠাৎ এই অভিনব উদ্যোগ কেন নিলেন সুন্দরবনের চাষীরা? একসময়ে সুন্দরবনে বিভিন্ন প্রকারের দেশি ধানের চাষ হত। সাগরের নোনাজলেও সেইসব ধানের কোনও ক্ষতি হত না। উঁচু-নিচু যেকোনও জমিতে চাষও করা যেত। কিন্তু, পরবর্তীকালে বেশি লাভের আশায় উচ্চফলনশীল হাইব্রিডের ধান চাষের রেওয়াজ চালু হয়। কিন্তু, চাষের মাত্রারিক্ত খরচ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ধাক্কা সামনে সেভাবে লাভের মুখে দেখতে পাচ্ছেন না চাষীরা। তাই বাংলার চিরাচরিত ধান চাষের দিকে ঝুঁকেছেন তাঁরা। বস্তুত, চাষের খরচ কমাতে নিজেরাই ‘বীজ ব্যাঙ্ক’ তৈরি করেছে ফেলেছেন। চুক্তি মোতাবেক, এক বিঘা জমি চাষের জন্য কোনও কৃষক যদি বীজ ব্যাঙ্ক থেকে তিন কেজি বীজ নেন, তা হলে ফসল ওঠার পর তাঁকে ওই বীজ ব্যাঙ্কে এক কেজি বেশি অর্থাৎ চার কেজি বীজ ফেরত দিতে হবে। এভাবেই সংগৃহীত বীজের পরিমাণ বাড়ছে।

RICE3_WEB

[রংটংয়ের জঙ্গলে বাঘের গর্জন! আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দারা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement