দেবব্রত দাস, খাতড়া: উষরডাঙার রুক্ষ মাটি। সেই মাটিতেই ফলছে ড্রাগন ফল (Dragon fruit)। আর এই ফলের চাষ করে দক্ষিণ বাঁকুড়ার (Bankura)জঙ্গলমহলে বিকল্প আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন শিক্ষিত যুবক। জঙ্গলমহলের রাইপুর ব্লকের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা রাহুল কর নিজের বাড়ির পাশের জমিতেই ড্রাগন ফলের চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন। আর এলাকার শিক্ষিত যুবকদের বিকল্প আয়ের দিশাও দিচ্ছেন। রাইপুর ব্লকের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন রাহুল, পেশায় গৃহশিক্ষক। টিউশনের ফাঁকে বাড়ির চাষের কাজেও হাত লাগান। কিন্তু লকডাউনের (Lockdown) সময় নিজেই বাড়ির পাশে ফাঁকা খামারবাড়িতে ড্রাগন ফলের গাছ লাগান। সাফল্যও আসে। ফুলে, ফলে ভরা ড্রাগনের এই বাগান দেখতে চারপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও ভিড় জমাচ্ছেন শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে।
প্রথাগত চাষ ছেড়ে খামারবাড়িতে হঠাৎ কেন এই ড্রাগন ফলের চাষ করতে গেলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে রাহুল বলেন, “জমিতে ধান বা সবজি চাষ করা হয়। কিন্তু বাড়ির পাশে খামারে ধান চাষ সম্ভব নয়। রুক্ষ জমিতে তাই বিকল্প ফসলের চাষ করার পরিকল্পনা নিই। এর সঙ্গে বিকল্প আয়ের খোঁজে তাই রুক্ষ জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করার ঝুঁকি নিয়েছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ড্রাগন ফল চাষের বিষয়টিও দেখেছি। এরপর ঝুঁকি নিয়েই পারিবারিক প্রায় ১২ কাঠা খামারবাড়ির জমিতে ড্রাগন ফল ফলানো শুরু করেছি।” তিনি আরও বলেন, ‘‘ড্রাগন ফল চাষের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জানারজন্য বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট দেখেছি। এরপর বাঁকুড়া থেকে ড্রাগনের চারা নিয়ে এসেছিলাম। স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো ড্রাগন চারার পরিচর্যা শুরু করি।’’
১২ কাঠা জমিতে ড্রাগন চারা রোপণ, সার, মজুরি, গাছের জন্য প্রয়োজনীয় খুঁটি লাগানোর জন্য ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৩০০ টি চারা লাগানো হয়েছে ড্রাগনের। প্রতিটি পিলারের চারিদিকে ৪টি করে চারা লাগানো হয়েছে। গাছ লাগানোর প্রায় দেড় বছর পর থেকে ফলন শুরু হয়েছে। বছরে ৪-৫ বার ফল তোলা যায়। গত দু’বছরে ড্রাগন ফল বিক্রি করে খরচের টাকা উঠে গিয়েছে। প্রথম বছরে বিঘা প্রতি ১২ কুইন্টাল ড্রাগন ফললেও পরবর্তী বছরগুলিতে ফলন প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে। তাই এবার লাভ হচ্ছে। খাতড়া (Khatra) মহকুমা কৃষি আধিকারিক গণেশ সিং সর্দার বলেন, “রুক্ষ জমিতে বিকল্প ফসল হিসাবে ড্রাগন ফলের চাষ কার্যকরী হবে। রাইপুরে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়েছে। আগামী দিনে এতে লাভ হবে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.