ছবি: অমিতলাল সিং দেও।
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: আদিবাসীদের জীবন জীবিকার উন্নতিতে জঙ্গলমহল অযোধ্যা পাহাড়ে ভেষজ ও সুগন্ধিযুক্ত গাছ-গাছালির চাষাবাদের কাজ শুরু করল পুরুলিয়া বনবিভাগ। পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে এই পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে বনদপ্তর। অযোধ্যা পাহাড়ের আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে যৌথ বন পরিচালন সমিতির তত্ত্বাবধানে এই চাষাবাদের কাজ চলছে। এই ভেষজ ও সুগন্ধি গাছগাছালি থেকে উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণেরও ব্যবস্থা করে দেবে পুরুলিয়া বনবিভাগ।
রাজ্যের স্টেট প্ল্যান ও গ্রিন ইন্ডিয়া মিশন প্রকল্পের অর্থে এই চাষাবাদের কাজ শুরু হয়েছে। ভেষজ চাষাবাদে চিয়া বীজ ও কেমোমিল বা কেমোমাইল চাষাবাদের কাজ করে পাহাড়ের আদিবাসী গ্রাম গুলির আর্থ-সামাজিক অবস্থা বদল ঘটাতে চাইছে বনদপ্তর। পুরুলিয়া বিভাগের ডিএফও দেবাশিস শর্মা বলেন, “অযোধ্যা পাহাড়ের গ্রামগুলিতে আদিবাসীদের জীবন জীবিকার উন্নতিসাধনে যৌথ বন পরিচালন সমিতিকে নিয়ে এই চাষাবাদের কাজ করানো হচ্ছে। উৎপাদিত ফসলের বাজারজাতকরণের ব্যবস্থাও করবে বনদপ্তর।” এই কাজের মধ্য দিয়ে তিনটি সুফল মিলবে বলে পুরুলিয়া বনবিভাগ জানিয়েছে। একদিকে যেমন যৌথ বন পরিচালন সমিতির জীবন জীবিকার উন্নয়ন। তেমনই বনাঞ্চলে থাকা বনজ সম্পদের উপর চাপ কমবে। ফলে বনাঞ্চল আরও বাড়বে। বন সন্নিহিত এলাকার মানুষজন জঙ্গলে যাওয়া কমানোর ফলে হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘাত কমে যাবে। হাতির হামলায় প্রাণহানি কমবে।
আগামী তিন মাসের মধ্যেই ভেষজ গাছগাছালি থেকে উৎপাদিত ফসলের মাধ্যমে সুফল পাবেন এলাকার মানুষজন। আপাতত ৩০ বিঘা জমিতে এই চাষাবাদের কাজ শুরু হলেও আগামী দিনে এই চাষাবাদের ক্ষেত্র আরও বাড়বে বলে পুরুলিয়া বন বিভাগ জানিয়েছে। ওয়াইল্ড লাইফ, ন্যাচার অ্যান্ড ইকোলজি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে এই কাজ চলছে। ভেষজ চিয়া বীজ স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। তাই এটিকে ‘সুপার ফুড’ বলা হয়। একইভাবে সুগন্ধি ক্যামোমাইল চা তে ব্যবহার হয়ে থাকে। এই সুগন্ধি ওষুধ শিল্পে ভীষণই প্রয়োজনীয়। ফলে এই চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন যাতে উপযুক্ত দাম পান সেই বিষয়টি এই প্রকল্পে সুনিশ্চিত করবে বনদপ্তর।
এক নজরে ভেষজ ও সুগন্ধির চাষাবাদ
চিয়া বীজ:
পুদিনা পরিবারের একটি প্রজাতি। এই বীজ মূলত মধ্য আমেরিকায় পাওয়া যায়। তবে সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন জায়গায় চাষ হচ্ছে। এই বীজে রয়েছে অনেক পুষ্টিকর উপাদান। এক গ্লাস দুধের চেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম , বাদামের চেয়ে বেশি ওমেগা -থ্রি এবং অনেক পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
কেমোমাইল:
কেমোমাইল চা দূর করে অনিদ্রা। রক্তে শর্করা কমায়। বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। হাড়ের শক্তি বাড়ায়। সংক্রমণ কমায়। মানসিক সমস্যা দূর করে। মহিলাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূরীকরণে
কেমোমাইল চা ভীষণ উপকারী। ওষুধ শিল্পে ভীষণ প্রয়োজনীয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.