সৌরভ মাজি, বর্ধমান: দিনভর মেঘলা আকাশ। শুক্রবার সন্ধের পর থেকে একটানা ঝিরঝিরে বৃষ্টি পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন জায়গায়। বুলবুলের প্রভাব এই জেলায় না পড়ারই সম্ভাবনা। তবে সাবধানের মার নেই, আপ্তবাক্য মেনে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।কেউ যাতে অযথা আতঙ্কিত না হন সেই পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। কয়েক মাস আগে ফণীর প্রভাব না পড়ার সম্ভাবনা থাকলেও ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছিল এই জেলায়। সেই স্মৃতি টাটকা জেলাবাসীর কাছে। তাই বুলবুলের কথা শুনে কিছুটা হলেও সংশয়ে কৃষকরা।
বিশেষ করে আমন ধান চাষিরা। যাঁরা আগে রোপণ করেছিলেন ধান তুলে অন্য ফসল চাষ করবেন বলে তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। অনেকে দ্রুত ধান খামারজাত করে নিতে চাইছেন জমি থেকে। আর স্বাভাবিক সময়ে যাঁরা আমন ধান চাষ করেছিলেন এখন তাতে ফল ধরছে। এই অবস্থায় ভারী বৃষ্টিপাত হলে ধান নষ্টের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই বলে জানাচ্ছেন কৃষি কর্তারা। আবহাওয়া দপ্তরের তরফে নিয়মিতভাবে বুলবুলের অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য জানানো হচ্ছে। রাজ্য সরকার তথা জেলা প্রশাসনের তরফে সাধারণ মানুষের কাছে সেই তথ্য জানানো হচ্ছে। একইসঙ্গে যাতে আতঙ্ক না ছড়ায় সেদিকেও নজর রাখছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। কিন্তু ফণীর মতো এবারও ফসলের ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন ধান চাষিরা। পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল ধান। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আলু। জেলায় এবার প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে খরিফ মরশুমের ধান চাষ হয়েছে। আমন ধান ফলাতে শুরু করেছে। আবার আউশ ধান ওঠার পর অনেক জায়গাতেই এখন আলু চাষের প্রস্তুতি চলছে।
কালীপুজোর সময় নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টিতে আলু চাষ কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছিল। এবার বুলবুলের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হলে আলু চাষ ফের বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বুলবুল নিয়ে এই জেলায় বৃষ্টিপাতের বিষয়ে হাওয়া অফিস এখনও কোনও সতর্কবার্তা দেয়নি। তাই চাষিদের অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি দপ্তর। তবে ভারী বৃষ্টি হলে আমন ধানে ক্ষতি হতে পারে বলে জানাচ্ছে কৃষি দপ্তরের কর্তারা। জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বৃষ্টি কেমন হবে তার উপর নির্ভর করছে ক্ষয়ক্ষতি হবে কি না। তবে ভারী বৃষ্টি হলে অবশ্যই আমনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.