ফাইল ছবি
মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: হাওড়ার আমতা ২ নম্বর ব্লকের দ্বীপাঞ্চলে ধানচাষ ব্যাপক পরিমাণে ছত্রাকঘটিত রোগে আক্রান্ত। ক্ষতির মুখে চাষিরা। প্রায় ৫০ শতাংশ ধান চাষ এই ছত্রাকঘটিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে কৃষিদপ্তরের পক্ষ থেকে পরিদর্শনেও গিয়েছিলেন আধিকারিকরা। তারা ছত্রাকঘটিত রোগ যাতে না ছড়ায় এবং অন্যান্য ভালো ধানে যাতে সেই রোগ ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সুনির্দিষ্ট কিছু ছত্রাকনাশক স্প্রে করার নির্দেশ দিয়েছে কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা।
গত বছর দ্বীপাঞ্চলের মানুষ বন্যার কবলে পড়েছিলেন। বন্যায় বর্ষার ধান তা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে সবজি চাষও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চাষিরা হয়তো ভেবেছিল গরমের ধানে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেবে কিন্তু সেটাও তো হাতছাড়া হচ্ছে। ফলে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত চাষিরা। চাষিরা জানিয়েছেন হঠাৎ করে তাদের জমির ধানের শীষ সাদা হয়ে যায় এবং সেই ধানে আর শস্য আসেনি। ফলে ধানের উৎপাদন ব্যাপক পরিমাণে ব্যাহত হচ্ছে। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে ছত্রাক ঘটিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে ধান চাষ। এই অবস্থায় এই রোগ যাতে আর বেশি ছড়িয়ে না পড়ে সেটাই দেখছে কৃষিদপ্তর।
স্থানীয় চাষিরা জানিয়েছেন, জানুয়ারির দিকে যে চাষ হয়েছিল সেই ধান চাষে মূলত এই ছত্রাক লেগেছে। তবে যারা নাবি ( দেরিতে ) চাষ করেছিল তাদের জমির ধান ছত্রাক আক্রান্ত হয়নি। চিতনান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাবিনা বেগম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জেলা কৃষিদপ্তরের কর্তারা গিয়েছিলেন দীপাঞ্চলে। তারা চাষিদের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে এই রোগ আর অন্য ধানে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য ছত্রাকনাশক স্প্রে করার। চাষিরা আপাতত সেটাই করছেন। আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল বলেন কৃষিদপ্তর পুরো বিষয়টা নজরে রাখছে। চাষিদের ক্ষয়ক্ষতি হলে আগামী দিনেও সরকার যেভাবে তাদের পাশে থেকেছে এবারও তাদের পাশে থাকবে।
চিতনান এলাকার কৃষক খোকন মিদ্যা প্রায় বিঘা ১৫ ধান চাষ করেছিলেন। তারও পঞ্চাশ শতাংশের বেশি জমিতে ধান ছত্রাক আক্রান্ত হয়। ফলে ধান উৎপাদনও তার অনেকটাই ব্যাহত হয়েছে। বর্ষার পর আবার গরমে ধানেও ক্ষতি হওয়ায় ব্যাপক সমস্যায় পড়লেন খোকনবাবু। ভাটোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর ভাটোরার বাসিন্দা পার্থ বেরা বলেন আমাদেরও ৪০ শতাংশের বেশি ধান নষ্ট হয়েছে। বর্ষার পর আবার গরমের ধান নষ্ট হওয়ায় খুবই সমস্যায় পড়লাম। আর এক চাষি জগদীশ মণ্ডলেরও একই বক্তব্য। প্রসঙ্গত, বছরদুয়েক আগেও এই ধরনের ছত্রাকে আক্রান্ত হয়ে দ্বীপাঞ্চলের ধান চাষ কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.