পলাশ সামন্ত, উদ্যান পালন দপ্তর, কালনা মহকুমা: ফি-বছর বাজারে পেঁয়াজের মাত্রাছাড়া দামবৃদ্ধি এখন গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত কয়েক বছর ধরে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষে সাফল্য মিলেছে। কম খরচে বেশি লাভের অঙ্ক ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। তাই এবার বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষের ক্ষেত্র বাড়াতে চাইছে পূর্ব বর্ধমান জেলা উদ্যান পালন দপ্তর। সেজন্য কৃষকদের উৎসাহিত করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে তারা।
গত বছর সারা জেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে এই পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছিল। তার মধ্যে কালনা মহকুমাতেই ৪০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। এ বছর শুধু মাত্র কালনা মহকুমাতেই ৫০ হেক্টরের বেশি জমিতে বর্ষার পেঁয়াজ চাষ করার লক্ষ্য নিয়েছে উদ্যান পালন দপ্তর।শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ হলেও বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষ করে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। চার বছর আগে প্রথম চাষ শুরু হয় কালনা ১ ও ২ নম্বর ব্লকে এবং পূর্বস্থলী-১ ও ২ নম্বর ব্লকের কিছু এলাকায়।
এখন এই মহকুমার মন্তেশ্বর ও পূর্বস্থলীর ২টি ব্লকেও চাষ শুরু হয়েছে। দিন দিন চাহিদা আরও বাড়ছে। সরকারি তরফেও সহায়তা করা হয় কৃষকদের। সরকারি নির্দেশ এলে এ বছরও কৃষকদের সবরকম সহায়তা করা হবে। তার জন্য পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী কৃষকদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিচ্ছে এই দপ্তর।
এই পেঁয়াজ চাষের জন্য শুধু প্রয়োজন উঁচু জমি। যেখানে জল দাঁড়াবে না। তাহলেই জমি প্রস্তুত করে সঠিক বীজ ফেলতে হবে। বর্তমান সময়ই তা করতে হবে। বেশি দেরি করলে চলবে না। সম্পূর্ন প্রক্রিয়ায় বিঘে প্রতি আট থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ। আর ৪৫ থেকে ৫৫ হাজার টাকারও বেশি লাভ করা যায়।
বর্ষাকালীন পেঁয়াজ ‘এগ্রি ফাউন্ড ডার্ক রেড’ নামে পরিচিত। যা খেতেও শীতকালীন পেঁয়াজের তুলনায় অত্যন্ত সুস্বাদু। কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থাতেই এই পেঁয়াজ জমি থেকে তোলা যেতে পারে। ভিন্ন প্রজাতির হওয়ায় বর্ষাকালীন পেঁয়াজে খাদ বা পোকা লাগে কম। এ বছরের বর্ষায় এই পেঁয়াজ চাষ শুরু করতে হলে সেজন্য চলতি মাস থেকেই বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করে দিতে হবে। কালনা ১ নম্বর ব্লকের হাতিপোতা গ্রামের এক চাষি জানান, গত ২৫ বছর ধরে তিনি শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ করছেন। গত বছর বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষ করে লাভ পেয়েছেন শীতকালীন পেঁয়াজের তুলনায় অনেক বেশি।
মাটি: দোঁয়াশ মাটি বা বেলে দোঁয়াশ মাটি হলেই এই চাষ করা যেতে পারে। শর্ত একটাই জল জমবে না এমন উঁচু জমি হতে হবে।
সার: পেঁয়াজ চাষ করতে ইউরিয়া, সিঙ্গল সুপার ফসফেট ও মিউরেট অফ পটাশ সারের প্রয়োজন। চারা রোপনের ২১ দিন ও ৪০ দিন পর অর্ধেক ইউরিয়া সম পরিমাণে ভাগ করে দিতে হবে। প্রয়োজন মতো অনুখাদ্য জমিতে দিতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.