নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: চিংড়ির মীন ধরার পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) জেলার নদীগুলিতে এবার এসে পড়েছে পর্যাপ্ত দেশীয় নোনা ট্যাংরার চারাপোনা। আর সেটাই যেন এখন করোনা পরিস্থিতির মুখে নতুন করে কর্মসংস্থানের দিশা দেখাচ্ছে প্রতিমা, মালতি, আয়েশা, শ্রাবণীদের। কাজেই বাড়তি কিছু উপার্জনের আশায় এখন দিনরাত এক হয়ে গিয়েছে তাঁদের।
জেলার মাছের ভেড়িতে চিংড়ি কিংবা চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে মীনের যোগান দিতে রূপনারায়ণ নদী ভরসা হয়ে উঠেছিল। এই নদীর জোয়ার ভাটার সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে প্রতিবছরের মতো এবছরও তমলুক, কোলাঘাট সংলগ্ন রূপনারায়ণের তীরে বড় আকারের একটি ত্রিকোণ জাল কাঁধে নিয়ে চিংড়ির মীন ধরার হিড়িক পড়েছিল বাসিন্দাদের মধ্যে। যেখান থেকে প্রতিদিন গড়ে এই চিংড়ির মীন ধরে মাথাপিছু প্রায় হাজার থেকে দেড় টাকা পর্যন্ত উপার্জন হচ্ছিল। এখন আবার সেই রূপনারায়ণেই এই চিংড়ি মীনের পাশাপাশি পর্যাপ্ত নোনা ট্যাংরার চারাপোনা মেলায় বাড়তি উপার্জনের আশা তৈরি হয়েছে।
শুধু যে রূপনারায়ণ তা কিন্তু নয়। হলদি, কেলেঘাইয়ের পাশাপাশি জেলার অন্যান্য ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ছোট বড় নদী এবং খালগুলিতে এই নোনা ট্যাংরা মিলছে। ৫ গ্রাম ওজনের এই ট্যাংরার পোনা খোলা বাজারের দেদার বিকোচ্ছে কেজি প্রতি ১০০ টাকা দরে। অর্থাৎ খরচও কম। ফলে এই ট্যাংরার চাষেও নতুন করে বেশ খানিকটা উন্মাদনা তৈরি হয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।
উল্লেখ্য, ট্যাংরার ক্ষেত্রে বাংলাদেশি গুলশা ট্যাংরার খ্যাতি থাকলেও দেশীয় এই নোনা ট্যাংরা স্বাদে কোনও অংশেই কম কিছু নয়। ফলে পর্যাপ্ত জোগানের অভাবে দিন দিন এই ট্যাংরার দর ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। এ বিষয়ে জেলা মৎস্য অধিকর্তা (নোনা জল) বিশ্বজিৎ বিশ্বাস জানিয়েছেন, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর বিগত কয়েক মাস ধরে স্বাভাবিক ভাবেই জেলার নদী কিংবা খাল গুলিতে পর্যাপ্ত নোনা ট্যাংরার উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। যেটা অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধিতে অত্যন্ত খুশির খবর। একদিকে চাষের জমিতে রাসায়নিকের কম ব্যবহার এবং দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের থাকায় এটা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.