ধীমান রায়, কাটোয়া: করোনা (Coronavirus) আবহে বদলে গিয়েছে পৃথিবী। ‘নিউ নর্মাল’ জীবনের প্রভাব পড়েছে আমন ধান রোয়ার কাজেও। এবার আর কৃষিশ্রমিকরা নন। তাঁদের পরিবর্তে ধান রোয়ার কাজ করছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। হু হু করে চলছে কাজ। পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন ব্লকেই আমন চাষে রোয়ানোর কাজ একেবারে গুটিয়ে ফেলেছেন বহু কৃষক। কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য বছরে এই সময় যে পরিমাণ জমি রোয়ানো হয়ে যায় তার থেকে কিছু বেশি পরিমাণ জমি এবছর রোয়ানো হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চাষের কাজের গতি আশ্বস্ত করেছে কৃষি দপ্তরের কর্তাদেরও। পূর্ব বর্ধমান জেলা উপ কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এবছর ধান রোয়ানোর কাজে সেচের জলের কোনও সমস্যা নেই। কৃষি শ্রমিকদের ঘাটতি নেই। তাই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবেই বলে আশা করছি।”
কাটোয়া, মঙ্গলকোট, ভাতার, মন্তেশ্বর, কেতুগ্রাম, খণ্ডঘোষ, গলসি, মেমারি প্রভৃতি ব্লক এলাকায় হাজারে হাজারে পরিযায়ী শ্রমিক এখন রোয়ানোর কাজে নেমে পড়েছেন। অন্যান্যবার দেখা গিয়েছে এই সময়ে বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ পুরুলিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ থেকে ধান রোয়ায় দক্ষ শ্রমিকরা জেলায় আসেন। এবার করোনা সংক্রমণের কারণে ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা জেলায় আসেননি। সেই ঘাটতি পূরণ করছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জেলায় ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছিল। এবার লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার হেক্টর করা হয়েছে। গত বছর বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৭ হাজার ৮০০ হেক্টর। এবার তা বেড়ে হয়েছে ৩৮ হাজার ৬০০ হেক্টর। এবার সেচের জলের ঘাটতি নেই।ডিভিসি থেকে সেচখালগুলিতে জল ছাড়ার আগেই বৃষ্টির জলে জেলায় ধান রোয়ার সিংহভাগ কাজই প্রায় শেষ। আবার গত বছরের তুলনায় এবছর কৃষিশ্রমিদের মজুরিও বেড়েছে। গত বছর শ্রমিকদের গড় মজুরি ছিল দিনে ২৫০ টাকা। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। ফলে খুশি ভিনরাজ্যের কাজহারা পরিযায়ী শ্রমিকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.