শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: তিস্তার দরাজ বুকে ফসল ফলিয়ে সবুজ বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছিলেন নদীর পাড়ের কৃষকেরা। আলু, কপি-সহ শীতের শাকসবজির মাঝে এবার উঁকি দিল ফুল। জলপাইগুড়ির তিস্তা নদীর পাড়ে গাঁদা ফুল চাষ করে লক্ষ্মীলাভের নতুন পথ খুঁজে দিলেন নদিয়ার ফুল চাষিরা। তাঁদের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে এবার তিস্তার চর জমিতে ফুল চাষে উৎসাহিত হয়ে পড়ছেন এলাকার বাকি কৃষকেরাও। তাতে আগামী কয়েক বছরে ফুল চাষের জমির পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
১৯৬৮ সালে ভয়াবহ বন্যার পর বাঁধ দিয়ে তিস্তা নদীকে নিয়ন্ত্রণে আনে সরকার। এরপর তৈরি হয় গজলডোবা ব্যারেজ। বাঁধ আর ব্যারেজের সাঁড়াশি চাপে অনেকটাই ছোট হয়ে আসে নদী। বর্ষা ফুরোলেই জেগে ওঠে দীর্ঘ চর। সেই চর জমিতে তখন আবাদ করেন স্থানীয় কৃষকরা। ধান,পাট,শীতের সবজির পাশাপাশি মরশুমে প্রথম আলু তুলে জলপাইগুড়ি জেলায় আলাদা পরিচিতি পেয়ে যান তিস্তা পাড়ের কৃষকরা। এবার নদিয়ার বেথুয়ার বাসিন্দা কান্তিলাল মণ্ডলের হাত ধরে আবাদ তালিকায় যুক্ত হল ফুল। গত বছর নদিয়া থেকে পরিবার নিয়ে জলপাইগুড়ির খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সারদা পল্লি গ্রাম সংলগ্ন চরে এসে জমি ভাড়া নিয়ে গাঁদা ফুল চাষ শুরু করেন কান্তিলালবাবু।
জানান, এক বিঘা গাঁদা ফুল চাষে খরচ পড়ে পঁচিশ হাজার টাকা। তাতে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে প্রায় দুই লক্ষ টাকা উপার্জন করে ছিলেন তিনি। পরিবার নিয়ে নিজেই চাষ করেন। নিজেই বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন। এই বছর আরও উপার্জনের আশায় ফুল চাষের জমির পরিমান আরও বাড়িয়েছেন। আর তাঁকে দেখে উৎসাহিত হয়ে আশপাশে আরও কয়েকজন কৃষক ফুল চাষ শুরু করেছেন।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য কুসুম মণ্ডল জানান, সকলেই লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় বাজারেই ফুল বিক্রি করছেন। আর তাদের দেখে উৎসাহিত হয়ে আরও অনেকেই ফুল চাষের পরিকল্পনা করছেন। কান্তিলাল মন্ডলের দাবি এক বিঘা আলু চাষ করতে অনেক খরচ। সেই তুলনায় ফুল চাষে খরচ কম।চাহিদা থাকায় দাম ও রয়েছে। সেই কারনে তার দেখাদেখি অনেকেই এগিয়ে আসছেন। তিস্তা পাড়ের ফুল চাষের এই উৎসাহ নজর এড়ায়নি জলপাইগুড়ি উদ্যান ও পালন বিভাগের। ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অলোক কুমার মণ্ডল জানান, ফুল অত্যন্ত লাভদায়ক চাষ।পাশাপাশি জলপাইগুড়ি র জমিতে গ্যাডিওলাস এবং অর্কিড চাষেরও ভবিষ্যৎ রয়েছে। এব্যাপারে কৃষকদের উৎসাহিত করে চলেছেন তারা।
ছবি: সুবীর এস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.