Advertisement
Advertisement
maxican grass

মেক্সিকান ঘাস দিশা দেখাচ্ছে আয়ের, খাস কলকাতায় বিঘার পর বিঘা জমিতে হচ্ছে চাষ

জেনে নিন চাষের পদ্ধতি।

Many farmer of Rajarhat started maxican grass cultivation | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:November 2, 2021 9:04 pm
  • Updated:November 2, 2021 9:04 pm  

কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: বিঘার পর বিঘা জমি জুড়ে সবুজ ঘাস। তবে এ ঘাস গরু খাবে না। ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না ছাগল। নিরাপত্তা এতটাই, দেখে মনে হবে হিংসুটে দৈত্য পাহারা দিচ্ছে একর একর ঘাস-বাগান! ব্যাপারটা কী?

এই ঘাস দিয়ে তৈরি হয় কার্পেট। ভারতবর্ষ তো বটেই, বিদেশেও এর চাহিদা বেশ ভালরকমের। ছাদে বা বাড়ির বাগানে এই কার্পেটের মতো ঘাস বিছিয়ে দিলেই হল। এরপর রোদ-জল পেলে দিব্যি বেঁচেবর্তে সবুজ ছড়াবে ঘাসের কার্পেট। উত্তর ২৪ পরগনায় নিউটাউন লাগোয়া রাজারহাট পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ জমিতে এর চাষ হয় বছরভর। কয়েক হাজার কৃষকের রুটিরুজির সংস্থান এই ঘাষ চাষ করে, বিক্রি করে।

Advertisement

রাজারহাট ব্লকের চাঁদপুর, পাথরঘাটা, বিষ্ণপুর ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অধিকাংশ মাঠে গেলে চোখে পড়বে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ঘাস। কৃষকরা মেক্সিকান ঘাস (Mexican Grass), সিলেকশান ঘাসের চাষ করছেন। আর মোটা টাকা ঘরে আনছেন। মুনাফার টানে অন্য যে কোনও ফসল, সবজি ছেড়ে কেবল ঘাস চাষেই এখন মন দিয়েছেন রাজারহাটের চাষিরা। এক বিঘা জমিতে সিলেকশান ঘাস চাষ করতে হাজার দুয়েক টাকার মতো মাটি, পাঁচ হাজার টাকার প্লাস্টিক, ছ’হাজার টাকার সার এবং সাত হাজার টাকার মত শ্রম খরচ হয়। সবমিলিয়ে বিশ হাজার টাকার মতো খরচ। দু’সপ্তাহের মধ্যেই সেই ঘাস পূর্ণ আকার নেয়। খোলা বাজারে কমপক্ষে পঞ্চাশ হাজার টাকায় বিক্রি হয়, জানিয়েছেন চাঁদপুরের এক কৃষক।

[আরও পড়ুন: নদীতে বেড়েছে ট্যাংরা, বাড়তি উপার্জনের আশায় পূর্ব মেদিনীপুরের মৎস্যজীবীরা]

ঘাসচাষিরা আড়াই বাই চার ফুট অর্থাৎ ১০ ফুটের ছোট ছোট কার্পেট তৈরি করেন। সেগুলিই রোল করে বড় বান্ডিল করে তা গাড়ি বোঝাই হয়ে ভিন রাজ্যে চলে যায়। বিক্রি হয় চড়া দামে। মাঠ থেকে যে কার্পেট সরাসরি তিন থেকে চার টাকা বর্গফুট দরে পাইকারি বিক্রি হয়। রিটেলে তার দাম দশ টাকা বর্গফুট। রাজারহাটের এক নামকরা নার্সারির মালিক জানিয়েছেন, “ঘাস চাষে কখনও লোকসান হয় না। এর লাভের অঙ্ক এবং বিশ্ব জুড়ে চাহিদা দুটোই উর্দ্ধমুখী। তাই এই অঞ্চলে একজন কৃষক অন্যকে দেখে ঘাস চাষ শুরু করেন।” এই প্রবনতার ফলে এখন নিজেদের জমিতে নার্সারি তৈরি করে হাজার কয়েক চাষি ঘাস বুনতে শুরু করেছেন।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে নিউটাউনে বিশ্ববাংলা সরণির ডিভাইডারগুলি মেক্সিকান ঘাস ও সিলেকশান ঘাসের কার্পেটে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। হিডকোর এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, সহজে নষ্ট হয় না, অনেকটা আগাছার মত, রাফ ইউস করা যায়। অথচ দেখতেও সুন্দর। তাই ইকো পার্ক-সহ নিউটাউনের অনেক জায়গা সাজাতে এর ব্যবহার হয়েছে। এভাবে রাজারহাটের কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাও। বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার মধ্যেও সিলেকশান গ্রাসের চাহিদা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকদের একাংশ। এক বেসরকারি সংস্থার কর্তা জানিয়েছেন, কোরিয়ান গ্রাস বা মেক্সিকান গ্রাস বেশ শক্ত। কিন্তু সিলেকশান গ্রাস খুব নরম আর দৃষ্টিনন্দন। অফিস সাজাতে রাজারহাট থেকে সিলেকশান গ্রাস নিয়ে আসা হয়েছে।

এই ঘাস চাষের প্রক্রিয়াকে আরও বিজ্ঞানসম্মত ও আধুনিক করতে সরকারকে উদ্যোগী হতে অনুরোধ জানিয়েছেন রাজারহাটের ঘাষ চাষিরা। পরিকাঠামো এবং আর্থিক সহায়তার দাবি জানিয়েছেন নার্সারির মালিকরা। পরিকাঠামোর উন্নয়ন, প্রশিক্ষন দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যান পালন দফতরের পদক্ষেপ দাবি করেছেন।

[আরও পড়ুন: কালোবাজারি বন্ধের উদ্যোগ, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া করা যাবে না পাটের ব্যবসা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement