সব্যসাচী ভট্টাচার্য: কারও নাম এলান ফ্রেসকা, আবার কারও নাম সুইট চার্লি। লাল টুকটুকে রং। স্বাদেও মিষ্টি। জৈব পদ্ধতিতে শিলিগুড়ির কাছে মাটিগাড়ার পতিরাম জোত-ই শুরু হয়েছে স্ট্রবেরির চাষ। শুধু পতিরাম জোত-ই নয়, উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় স্ট্রবেরির চাষ নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। অনেক জায়গায় এর চাষ শুরুও হয়ে গিয়েছে। আর এতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে উত্তরববঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সেন্টার ফর ফ্লোরিকালচার অ্যান্ড এগ্রি বিজেনেস ম্যানেজমেন্ট।
সাধারণভাবে উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ায় স্ট্রবেরির চারা পোতার কাজ শুরু হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে। এপ্রিল-মে মাস পর্যন্ত স্ট্রবেরির ফলন হয়। উত্তরবঙ্গের আমবাড়ি, লাটাগুড়ি, ফালাকাটা, হলদিবাড়ি, তুফানগঞ্জ, মেখলিগঞ্জ ও রায়গঞ্জ এমনকী দক্ষিণবঙ্গের মুর্শিদাবাদেও স্ট্রবেরি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এক বিঘার সামান্য কিছু বেশি জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করেছিলেন সুকুমার মল্লিক। সার হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে তৈরি জীব অমৃত। যার মধ্যে রয়েছে গোবর, ভেলিগুড়, খেসারির বেসন, গোচনা, জল ও বিশুদ্ধ মাটি। তিন দিন রেখে এই সার জমিতে দেওয়ায় ফলন অত্যন্ত উন্নত হয়েছে। গাছের জন্য বেড তৈরি করে তা মলচিং ফিল্ম দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। এটা সরকার অনুমোদিত এক রকমের মোটা পলিথিন শিট। যা এই চাষের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এই শিটের মাঝে মাঝে ফুটো করে তাতে স্ট্রবেরির চারা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে একদিকে যেমন বেশি জল দেওয়ার দরকার পরে না, তেমন-ই আগাছাও জন্মায় না। ফল হলে তা পড়ে গিয়ে নোংরা হয়ে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে।
এতেই মরশুমের শেষে ভালই উৎপাদন হয়েছে স্ট্রবেরি। সম্পূর্ন রাসায়নিক সার বর্জন করে জৈব সারে চাষ হওয়ায় স্ট্রবেরির গুণগতমান বেড়েছে৷ ফলনও অনেক বেড়েছে বলে দাবি তাঁর। শিলিগুড়ি মহকুমা ও উত্তরবঙ্গের অন্যত্র স্ট্রবেরি চাষের সাফল্য দেখে অনুপ্রানিত জাপানের প্রতিনিধিরাও। আগামিদিনে তাঁরা উত্তরবঙ্গে ছোট আকারে কোল্ড স্টোরেজ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.