বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মাধ্যমে পলিথিন ব্যবহার করে রজনীগন্ধা চাষে উৎপাদিত ফসল ৫০-৬০% বৃদ্ধি করা যেতে পারে এবং ৩০% জল ও সারের খরচ কমানো যেতে পারে। লিখছেন বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ তাপস কুমার চৌধুরি।
ইদানীংকালে রজনীগন্ধা চাষ(Rajanigandha Cultivation) করতে গিয়ে চাষিভাইদের অনেকগুলি সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আগাছা দমন এবং এর জন্য অনেক চাষি দিশাহারা। এর চাষ আগামিদিনে করবেন কি করবেন না। কারণ রজনীগন্ধা ফুলগাছটি হল একধরনের একবীজপত্রী ঘাসের মতো এবং এর মধ্যে অন্যান্য ঘাস জন্মালে তাকে দমন করা খুব কষ্টসাধ্য কাজ। তাছাড়া বর্তমান দিনে মাঠে কাজ করার মজুরের সংখ্যা কমে যাওয়ার জন্য নিড়ানি দিয়ে ঘাস মারা খুব ব্যয়বহুল এবং এখানে দেখা যাচ্ছে মোট চাষের খরচের প্রায় ৪০% আগাছা দমনের জন্য খরচ হচ্ছে আর সবসময় দিনমজুর পাওয়াও যায় না, যাঁর ফলে গাছের ফলন ভীষণভাবে কমে যাচ্ছে।
রজনী গন্ধা মাঠে আগাছা দমনের ওষুধ প্রয়োগ করা যায় না। এই সব সমস্যা মাথায় রেখে বিগত কয়েকবছর ধরে বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়(Bidhan Chandra Krishi Viswavidyalaya) গবেষণার মাধ্যমে পলিথিন ব্যবহার করে রজনীগন্ধা চাষে উৎপাদিত ফসল ৫০-৬০% বৃদ্ধি করা যেতে পারে এবং ৩০% জল ও সারের খরচ কমানো যেতে পারে, শুধু তাই নয় প্রায় ৪০% আগাছা দমনের খরচও কমানো যেতে পারে (১০,০০০ প্রতি বিঘাতে পলিমাচিং করে)।
মাঘ মাসে মাটিকে চষে নেওয়ার পর ১.২ মিটার চওড়া ও ৬ ইঞ্চি উঁচু বেড বানাতে হবে এবং ওই বেডগুলিকে ভাল করে সমতল করার পর ৪০ গেজের কালো পলিথিন দিয়ে মুড়ে ফেলতে হবে। এরপর ২ ইঞ্চি ব্যাসের প্লাস্টিক পাইপ দিয়ে পলিথিনের উপর চাপ দিয়ে ছেঁদা করতে হবে এইভাবে যে, গাছ থেকে গাছ ও লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব যথাক্রমে ২০ ও ৩০ সেন্টিমিটার থাকে।
পাইপের মাথা দিয়ে পলিথিন ছেঁদা করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, গর্ত যেন ২ ইঞ্চি গভীর হয়। পলিথিন বিছানোর আগে মাটিতে(Soil) সার প্রয়োগ করতে হবে (গোবর সার ২০০০ কেজি + সরষের খোল ৫০ কেজি + হাড়ের গুঁড়ো বা সিংকুচি ৫০ কেজি + নিমখোল ৫০ কেজি + ১০-২৬-২৬ সারটি ৫০ কেজি + ৫ কেজি প্রতি বিঘাতে)। চাপান সার হিসাবে ১০-২৬-২৬ ১০ কেজি + ইউরিয়া ১০ কেজি + সরষের খোল ১০ কেজি + ট্রাসেল-২ ১ কেজি প্রতি বিঘাতে প্রতি একমাস অন্তর দুইটি বেডের মাঝখানে প্রয়োগ করে ভাসিয়ে জল দিতে হবে। শীতকালে এই চাপান সারটি দেখেশুনে প্রয়োগ করতে হবে গাছের বৃদ্ধির উপর নজর রেখে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.