Advertisement
Advertisement
Oyster Cultivation

সারা দেশে ব্যাপক চাহিদা, ঝিনুক চাষে হতে পারেন বিপুল অর্থের মালিক

উচ্চমানের খাদ্যগুণ থাকায় সারা পৃথিবীর মানুষের নজর পড়েছে এই ঝিনুক চাষে।

Here is the process of Oyster cultivation
Published by: Sayani Sen
  • Posted:August 7, 2024 10:04 pm
  • Updated:August 7, 2024 10:06 pm  

বিভিন্ন দেশে ঝিনুকের খাবার জনপ্রিয়। খুবই দামী খাবার। জনপ্রিয় টেবিল ফুড। প্রচণ্ড চাহিদা। তার কারণ, ঝিনুকের মাংসের উৎকৃষ্ট খাদ্যগুণ। সারা পৃথিবীতে ঝিনুকের ব্যাপক চাহিদা। তার ফলে ঝিনুক চাষে ভাল আয়ের সুযোগ। লিখেছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অন্তরা মহাপাত্র এবং বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন বরিষ্ঠ গবেষক ড. পরিতোষ বিশ্বাস। পড়ুন প্রথম পর্ব।

১ লক্ষ ৬৪ হাজার বছর আগে ডাইনোমোর বা মানুষের পূর্বপুরুষ হোমিনিড্রা যখন পৃথিবীতে আসে, তার আগেই ঝিনুকেরা পৃথিবীতে এসেছিল। যিশুখ্রিষ্টের জন্মের আগেই ইউরোপের রোমানরা খাবারের জন্য ঝিনুক চাষের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিল। তার পর এশিয়ার জাপানে অগভীর সমুদ্রের নোনা জলে (যেখানে তাপমাত্রা: ২০-৩৪ ডিগ্রি, লবণাক্ততা: ১৬-৩৬ পিপিটি এবং পিএইচ: ৬-৯) বা খাঁড়ির জলে ঝিনুকের চাষ বাড়ে। বর্তমানে জাপান, কোরিয়া, ফিলিপিন্স, ফ্রান্স, ব্রিটেন, ইটালি, অ্যামেরিকা, প্রভৃতি দেশে ঝিনুকের খাবার জনপ্রিয়। খুবই দামী খাবার। জনপ্রিয় টেবিল ফুড। প্রচণ্ড চাহিদা।

Advertisement

তার কারণ, ঝিনুকের মাংসের উৎকৃষ্ট খাদ্যগুণ। ঝিনুকের প্রতি ২৪৮ গ্রাম মাংসে প্রোটিন ১৪.২০ গ্রাম, ফ্যাট ৪.২৪ গ্রাম, ফাইবার শূন্য গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৬.৭৫ গ্রাম, সোডিয়াম ৫২৩ মিলি গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৪৬ মিলি গ্রাম, জিঙ্ক ৯৭.৫০ মিলি গ্রাম, লোহা ১১.৪০ মিলি গ্রাম, পটাসিয়াম ৩৮৭ মিলি গ্রাম, ফসফরাস ২৪১ মিলি গ্রাম, তামা ৭.০৯ মিলি গ্রাম, ভিটামিন এ ৩২.২০ এমসিজি, ভিটামিন বি ১২-২১.৭০ এমসিজি এবং সেলেনিয়াম ৪৮.৯ এমসিজি।

উচ্চমানের খাদ্যগুণ থাকায় সারা পৃথিবীর মানুষের নজর পড়েছে এই ঝিনুক চাষে। চিকিৎসকরা নানা রকমের অসুখের জন্য যেমন: চোখের, ব্লাড প্রেসার, হার্টের, ভায়াবেটিস, লিভার, রাতকানা, চর্মরোগ, বাতের ব্যথা এবং নানাবিধ জটিল অসুখের পথ্য হিসাবে ঝিনুকের, গুগলির বা গেঁড়ির মাংস খেতে বলেন। পুরুষদের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও এর মাংস খেতে বলা হয়। এছাড়াও মানুষের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবার জন্যও এই মাংস খাওয়র পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ এই মাংসে উচ্চ পরিমাণে জিঙ্ক, প্রোটিন, ভিটামিন এবং অন্যান্য খনিজ খাদ্যগুণ বেশি।

[আরও পড়ুন: শুধু বসালেই তো হল না, জেনে নিন আনারস গাছের পরিচর্যার উপায়]

সারা পৃথিবীতে ঝিনুকের ব্যাপক চাহিদা। তার ফলে, ঝিনুক চাষে লক্ষ্মীলাভ। ভারত সরকারের (IMARC) হিসাবে, এই চাষ ভারতবর্ষে শতকরা গুণিতকের হিসাবে ৫০০ ভাগ হারে বাড়ছে। গড়ে প্রতিবছর শতকরা ২০ ভাগ হিসাবে লাভ বেড়েই চলেছে। ভারত সরকারের (MPEDA) হিসাবে ২০২০-২১ সালে ১৪২২ মেট্রিক টন ঝিনুক বিদেশে রপ্তানি করে ১৫৩.৬৪ কোটি টাকা ভারত সরকারের আয় হয়েছে। মার্কিন ডলার হিসাবে ২০ মিলিয়ন ডলার। এই চাষে বেকার ছেলেদের কর্মসংস্থানে অশেষ সুযোগ আছে। ২০২৩ সালে ঝিনুকের চাহিদা ৭.৩০ মিলিয়ন টনে পৌঁছে গেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের (CAGR) হিসাবে, ঝিনুক চাষের বৃদ্ধির হার কমপক্ষে শতকরা ২ ভাগ ধরলে, ২০৩২ সালের মধ্যে ঝিনুক চাষের ফলন ৮.৭০ মিলিয়ন টনে পৌঁছে যাবে।

ঝিনুক হল নোনা জলের ‘বাইভাল্ভ মোলাস্ক’ গোত্রের প্রাণী। অগভীর সমুদ্রে, উপসাগর, খাঁড়ি, মোহনা, লেগুন বা নোনা জলের মাছের ভেরিতে বা নদীতে, যেখানে জোয়ার-ভাঁটা হয়, এমন জায়গায় ঝিনুকেরা বাস করে। ঝিনুকের তিন প্রকোষ্ঠের হৃৎপিণ্ড আছে। যার সাহায্যে, তাদের সারা শরীরে বর্ণহীন রক্ত, পাম্প করে; যেমন, মাছেরা ফুলকা দিয়ে শ্বাস নেয়, ঠিক তেমন। বন্য ঝিনুক প্রায় ২৫-৩০ বছর বাঁচতে পারে। তবে মানুষের খাবারের জন্য চাষের ঝিনুক ৫-৬ বছর বাঁচে।

চাষের ঝিনুকের বয়স ১২-২৪ মাসের মধ্যে হলে ওজন ১০০-১২০ গ্রাম এবং লম্বায় ৩-৪ ইঞ্চির মতো হবে। নভেম্বর থেকে এপ্রিলের ভিতর ফসল তোলার প্রকৃত সময়। তবে বয়স বেশি হলে ঝিনুকের মাংসের সুস্বাদু গন্ধ কমে যায় এবং ঝিনুকের মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। প্রতি মৌসম সময়ে, একটি প্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রী-ঝিনুক ৫০-১০০ মিলিয়ন ডিম পাড়ে।

[আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ঘাটতি ৫০ শতাংশ, আমন চাষে দুশ্চিন্তা, দাম বাড়বে চালের?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement