Advertisement
Advertisement
শসা

খুব সহজে বাড়িতেই ফলান শসা, জেনে নিন চাষের পদ্ধতি

শসা চাষ করে প্রচুর অর্থলাভ করেন কৃষকরা৷

Here are some tips to cultivates easy-care vegetable cucumber
Published by: Sayani Sen
  • Posted:August 22, 2019 7:25 pm
  • Updated:August 22, 2019 7:31 pm  

চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: শসা একটি মরশুমি চাষ। মাচায় ঝোলা শসার বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। লাউ প্রজাতির এই ফসলটি খুবই উপকারী। এখন সারা বছরই বাজারে শসা পাওয়া যায়। তাই কান্দির কৃষকদের একটি বড় অংশ এ সময় ধান চাষের পাশাপাশি শসা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। মোটা আর্থিক লাভও করছেন মুর্শিদাবাদের কান্দি ব্লকের কৃষকদের শসা চাষের জন্য কৃষি দপ্তর থেকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে নানা সরকারি সহায়তাও।

[আরও পড়ুন: একই জমিতে ফলান আপেল-ড্রাগন, জেনে নিন চাষের পদ্ধতি]

মাটি: জলনিকাশি যুক্ত দোআঁশ মাটি শসা চাষের পক্ষে খুবই উপকারী। এই মাটিতে শসা চাষের জন্য প্রচার রাসায়নিক কিংবা জৈব সার থাকে। যা ধান তোলার পর অব্যবহৃত অবস্থায় চাষের মাঠে পড়ে থেকে নষ্ট হয়।
জাত: বাজারে বিভিন্ন জাতের শসার বীজ পাওয়া যায়। এর মধ্যে কান্দি এলাকায় মূলত দু’টি জাতের চাষ বেশি হয়। মাচা শসা ও জমির শসা। আর হাইব্রিড প্রজাতির শসাও এখন কান্দি ব্লকে চাষ হচ্ছে। তবে তা খুবই কম।
বীজ বোনার সময়: শসা চাষ মূলত গ্রীষ্মকালের ফসল। ধান চাষের পরেই সেই জমিতেই শসার চাষ করা হয়। ধান তুলে নেওয়ার পরেই শসার বীজ ছড়িয়ে দিয়ে থান তৈরি করে এই চাষ করা হয়। বীজ থেকে চারা বের হওয়ার পর মূলত মাটি আলগা করা এবং ঘাস পরিষ্কার করা হয় । ছোট ছোট বাঁশ ও কঞ্চি দিয়ে মাচা এই চাষের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: চায়ের উপত্যকায় আয়ের নয়া দিশা কফি চাষ, কৃষকদের উৎসাহিত করছে জিটিএ]

সার প্রয়োগ: সত্যি কথা বলতে কি শসা চাষের জন্য মূলত তেমন খুব একটা সারের কোনও প্রয়োজন হয় না। ধান চাষের পর জমিতে যে রাসায়নিক ও জৈবিক সার পড়ে থাকে মূলত ওই সার দিয়েই শসার ফলন সম্ভব। এছাড়া, একান্ত প্রয়োজনে কম-বেশি জৈবিক সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। ছড়ানো বীজ থেকে শসার চারা জন্মানোর ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে কিছু জৈবিক সার দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া, কিছু সার মাটির সঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে প্রয়োগ করা হয়। মাটিতে অনুখাদ্য তিন থেকে চারটি ফসলের জন্য একবার প্রয়োগ করলেই যথেষ্ট। প্রয়োজনে দেড় মাসের মাথায় কিছুটা রাসায়নিক সার দেওয়া যেতে পারে।
পোকামাকড়: শসা গাছে ফুল ফোটার পর মূলত পোকামাকড়ের তাণ্ডব বেশি হয়। ফল ও পাতা ছিদ্রকারী পোকার জন্য কিছু কীটনাশক স্প্রে করা যেতে পারে। বৈশাখ, জৈষ্ঠ্য মাসের প্রখর রোদের তাপ শসা চাষের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। এই রোদের তাপের ফলে গাছের পাতায় পোকার প্রাদুর্ভাব বহুলাংশে কমে যায়। এছাড়া, আরও কিছু পোকা যাদের খালি চোখে দেখা যায় না, সেগুলি গাছের ফুল ও পাতায় বসে রস চুষে খায়। শুষ্ক ও গরম আবহাওয়াতে এদের আক্রমণ সব থেকে বেশি ঘটে। এই পোকার সংক্রমণ রুখতে দৈনিক বিকেলে শসা গ্রামে পরিস্কার জল স্প্রে করা যায়।

Cucumber
শশা গাছ দেখভালে ব্যস্ত কৃষক

রোগ: মাচার শসা চাষের জন্য মূলত রোগের তেমন প্রাদুর্ভাব দেখা যায় না। চাষের জন্য মূলত যেটি প্রয়োজন গাছের গোড়ায় যেন কোনওভাবেই জল না দাঁড়ায়। চাষের উপযুক্ত সময় বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাস। রোদের তাপ প্রখর হলে এবং মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলে শসা চাষ খুব ভাল হয়। প্রখর রোদ ও বৃষ্টির ফলে শসা গাছের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। এছাড়া, এখন বছরভর হাইব্রিড শশা চাষ করা সম্ভব।

[আরও পড়ুন: পাট চাষে হতে পারে বিপুল লক্ষ্মীলাভ, জেনে নিন পদ্ধতি]

ফলন: শসা গাছের ফলন মূলত নির্ভর করে আবহাওয়ার উপর। চলতি বছর কান্দিতে শসার চাষ ভালই হয়েছে। কারণ, প্রচন্ড রোদের তাপের সঙ্গে মাঝে মাঝে বৃষ্টি শসা চাষের পক্ষে উপকারী। মাচার শসা চাষে মূলত দু’মাস সময় থাকে। এই শসার দামও তুলনামুলক বেশ বেশি। তবে সব সময় নজর রাখতে হবে শসা যেন মাচা থেকে ঝুলে থাকে। গাছ থেকে কেউ যেন খাওয়ার জন্য কাঁচা শসা তুলে না নিয়ে যান। তবে কালবৈশাখীর ঝড় বৃষ্টি হলে শসা চাষে কোনও ক্ষতি নেই। জল ফেলে ফলন পুষ্ট হয়। তবে বড় গাছ যেন শসা চাষের জমিতে না পড়ে সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখা জরুরি।  

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement