মালদহ জেলা উদ্যান পালন দপ্তরের উপ-অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলে আমগাছের পরিচর্যা নিয়ে কথা বললেন বাবুল হক।
আমগাছে মুকুল আসতে এখনও বেশ কিছুটা দেরি আছে। শীতের পর মৃদু উষ্ণ আবহাওয়া আমগাছে মুকুল গজানোর পক্ষে অত্যন্ত অনুকূল। কিন্তু ঠিক এই মুহূর্তে আমগাছের কিছু পরিচর্যা দরকার। আমের ভাল ও পর্যাপ্ত ফলন পেতে হলে শুধু মুকুল নয়, গাছেরও পরিচর্যা করতে হবে। শীতের এই সময় আমগাছের ডালে আশ্রয় নেওয়া পরগাছা কেটে ফেলুন। কারণ, এই পরগাছা আমগাছের ডাল থেকে রস শুষে নেয়। ফলে গাছ পর্যাপ্ত জল পায় না। এছাড়া গাছের ছায়া বরাবর মাটি কেটে উর্বর করে রাখতে পারেন। মৃদু জৈব সারও এ সময় প্রয়োগ করা যেতে পারে।
আমের জেলা হিসাবে মালদহের নামডাক জগৎ জোড়া। জেলার অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল এই আম। আম থেকে যাঁরা মোটা টাকা আয় করতে ইচ্ছুক তাঁরা আবহাওয়ার উপর ভরসা না রেখে এখনই আমবাগানের যত্ন নেওয়া শুরু করে দিন। বাংলার উৎপাদিত আমের অধিকাংশই মালদহ জেলা থেকে উৎপাদন হয়। সঠিক পরিচর্যা, রোগ সংক্রমণ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ দমন করতে পারলে ভাল ফলন মিলবেই। আম গাছের ফলধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ফলন বাড়ানোর জন্য তাই এখন থেকেই ঠিকমতো পরিচর্চা করা প্রয়োজন।
পরগাছা দমন: আমগাছে একাধিক জাতের আগাছা জন্মাতে দেখা যায়। সেই আগাছা আমগাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। পরগাছায় শিকড়ের মতো এক প্রকার হস্টোরিয়া হয়, যা গাছের মধ্যে প্রবেশ করে রস শোষণ করে এবং আমগাছকে দুর্বল করে দেয়। পরগাছা বেশি হলে গাছের পাতার আকারও ছোট হয় এবং ফ্যাকাসে হয়। একইসঙ্গে অনেক সময় গাছও মারা যায়। তাই আমের ভাল ফলন পেতে হলে অবশ্যই পরগাছা কেটে ফেলতে হবে।
উর্বরতা: আমগাছতলায় মাটির উর্বরতা বাড়াতে হবে। গাছের বৃদ্ধি ও ফল উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। জমির উপর স্তরে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান থাকে, তাই আমগাছের জমির উপরে ২-৩ মিটার অংশে জল সংরক্ষণ স্তর হিসাবে ধরে নিয়ে প্রয়োজন মতো সেচের ব্যবস্থা করে রাখতে হবে।
ডাল কেটে কলম: বাগানের কোনও গাছের আমের গুণাগুণ খারাপ হলে সেই গাছকে কেটে ফেলতে হবে না। কলমের মাধ্যমে উন্নতি সাধন করা দরকার। বয়স্ক গাছের গাছের ক্ষেত্রে ২-৩টি ডাল কেটে দিলে সেখান থেকে নতুন শাখা বের হয়। তারপর নতুন শাখায় কলম করে নিতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে আম বাগানের বয়স বেশি হলে ফল ধারণ ক্ষমতা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে যায়। এ ক্ষেত্রে পুরনো গাছ কেটে না ফেলে ডালপালা ছেঁটে ফেলতে হবে। সেখানে নতুন শাখা বের হবে।
জল স্প্রে: শীতের শেষ লগ্নে অল্প বৃষ্টি আমগাছে মুকুল গজানোর পক্ষে উপযোগী। তা না হলে এখনই কীটনাশক স্প্রে করা থেকে বিরত থাকুন। বরং আমগাছে উঠে উপর থেকে প্রায় সমস্ত জালপালা ও পাতায় লাগতে পারে এমনভাবে স্বাভাবিক তাপমাত্রার জল স্প্রে করা শ্রেয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.