Advertisement
Advertisement

Breaking News

Fish

জুনপুটে বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণে ‘অভয় পুকুর’, মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে লাভের আশা

রাজ্য সরকারের জীববৈচিত্র্য পর্ষদের সহযোগিতায় এই পুকুর গড়ে তোলা হয়েছে।

Fisheries department take special initiatives to preserve fish

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sayani Sen
  • Posted:December 25, 2024 10:49 pm
  • Updated:December 25, 2024 10:49 pm  

রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: বিলুপ্তপ্রায় মাছকে বাঁচিয়ে সংরক্ষণ করতে কাঁথির জুনপুট এলাকায় মৎস্য দপ্তরের জলাশয়কে ঘিরে ‘অভয় পুকুর’ বা ফিশ স্যাংচুয়ারি গড়ে তুলেছে মৎস্যদপ্তর। বন্যজন্তু সংরক্ষণ, তাদের প্রাকৃতিক ও সহজাত জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখতে সংরক্ষিত বনাঞ্চলকে অভয়ারণ্য বলা হয়। সেই অভয়ারণ্যের আদলেই বিভিন্ন ধরনের দেশীয় মাছ সংরক্ষণের জন্য তৈরি হয়েছে ‘অভয় পুকুর’। রাজ্য সরকারের জীববৈচিত্র্য পর্ষদের সহযোগিতায় এই পুকুর গড়ে তোলা হয়েছে।

জুনপুটে ফিশারি প্রজেক্টের ক্যাম্পাসে দেড় বিঘা করে দুটি পুকুর নেওয়া হয়েছে। মোট ৩৩ ধরনের দেশি প্রজাতির মাছ এসব জলাশয়ে বড় করা হবে এবং সংরক্ষণ করা হবে। সেখানে পুঁটি, মৌরলা, দেশি কই, ল্যাটা, শিঙি, চাঁদা, ট্যাংরা, পাঁকাল, ন্যাদোস প্রভৃতি মাছের তিন হাজার করে চারা ছাড়া হয়েছে। আগে এই সমস্ত মাছ খাল-বিলে পাওয়া যেত। দূষণ-সহ নানা পারিপার্শ্বিক কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে বহু দেশীয় মাছ। মাছগুলি এখন বাজারে খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। তাই দেশীয় মাছকে বাঁচিয়ে রাখতে এমন পরিকল্পনা নিয়েছে মৎস্য দপ্তর।

Advertisement

জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের জুনপুট ছাড়াও দক্ষিণ ২৪পরগনার হেনরি আইল্যান্ড, আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট, বাঁকুড়ার ওন্দা, পূর্ব বর্ধমানের যমুনাদিঘি এবং মালদহের বড় সাগরদিঘি এলাকায় ‘অভয় পুকুর’ তৈরি করা হয়েছে। তার মধ্যে জুনপুট হল অন্যতম। দপ্তর সূত্রে খবর, হারিয়ে যেতে বসা মাছগুলির সংরক্ষণ, প্রজনন ও সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ। প্রকল্প রূপায়ণে খরচ হচ্ছে ১৮ লক্ষ টাকা। ধাপে ধাপে এই অর্থ দেবে মৎস্যদপ্তর। উৎপাদিত মাছ বড় হলে তা আবার মৎস্যচাষিদের দেওয়া হবে চাষ করার জন্যে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ছোটমাছ হারিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে প্রধান কারণ, তাদের আবাসস্থল ও প্রজননস্থল নষ্ট হয়ে যাওয়া। যথেচ্ছ রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলেও ছোট মাছ কমে গিয়েছে।

কেমন হয় অভয় পুকুর? দূষণহীন পুকুরে উপযুক্ত গাছপালা তৈরি করতে হবে। সেখানে অন্য কোনও মাছ চাষ করা যাবে না। শুধুমাত্র সংরক্ষণের জন্যই ব্যবহার করতে হবে। জলাশয়ের চারদিক ঘিরে রাখতে হবে। ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ জলজ গাছ থাকবে। শ্যাওলা, হাইড্রেলা, পানা, পাতিঘাস, কুলেখাড়া, হিঞ্চে, শুশনির মতো জলজ গাছের উপস্থিতি পুকুরে নিশ্চিত করতে হবে। মাছের খাবার হিসেবে ঘরোয়া খাদ্য যেমন, ভাত, কুঁড়ো দিতে হবে। কংক্রিটের ঘাটের বদলে খেজুর, তালের গুঁড়ি দিয়ে ঘাট তৈরি করতে হবে। বলতে গেলে ৩০-৪০ বছর আগে গ্রাম-বাংলার পুকুরঘাট যেভাবে ছিল, সেরকমই। যেখানে ছোট মাছ নির্ভয়ে থাকতে পারবে।

তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, দেশীয় ছোট মাছ বর্ষাকালে বংশবিস্তারের সময় ডাঙায় উঠে আসে। তাই ‘অভয় পুকুরের’ চারপাশ জাল দিয়ে ঘিরে দিতে হবে। ডাঙার পরিবেশ কীটনাশক ও রাসায়ণিক সার মুক্ত হতে হবে। চারদিকের দূষিত জল কোনওভাবেই সংরক্ষিত পুকুরে পড়া চলবে না। ছোট মাছ বিপনণের বাজার গড়ে তুলতে হবে। তবেই ছোটমাছ আবার ফিরিয়ে আনা যাবে। জুনপুট ফিশ টেকনোলজিক্যাল স্টেশনের সহ মৎস্য-অধিকর্তা নীলোৎপল কয়াল বলেন, “অন্যান্য জায়গার মতো ‘অভয় পুকুরের’ পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। আমরা দপ্তরের নিয়ম-নির্দেশিকা মেনে কাজ করছি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement