Advertisement
Advertisement

Breaking News

Jalpaiguri

ঝড়-শিলাবৃষ্টিতে উত্তরের চা বাগান ও ফসলে ব্যাপক ক্ষতি, মাথায় হাত কৃষকদের

ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে প্রশাসনের তরফে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে।

Farming affected due to storm in Jalpaiguri, farmers in trouble
Published by: Sayani Sen
  • Posted:April 12, 2024 4:02 pm
  • Updated:April 12, 2024 4:02 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ঝড়, শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত উত্তরের পাহাড়-সমতলের চা ও সবজি বলয়ের একাংশ। ডুয়ার্সে ঝড়ে উড়েছে শ্রমিক বসতি এলাকার দুই শতাধিক বাড়ির টিনের ছাউনি। শিল পড়ে টিন ফুটো হয়েছে বেশিরভাগ বাড়ির। প্রায় তিনশো হেক্টর চা বাগান শিলাবৃষ্টিতে তছনছ হয়েছে এখানে। দার্জিলিং পাহাড়েও শতাধিক চা বাগানে ফার্স্ট ফ্ল্যাসের পাতা নষ্ট হয়েছে। দার্জিলিং পাহাড়ের বিজনবাড়ি, সোনাদা, ডুয়ার্সের নাগরাকাটা, বানারহাট, ময়নাগুড়ি, কালচিনি এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমির ভুট্টা, ফুলকপি, বেগুনের মতো ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে প্রশাসনের তরফে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক বসতি এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়। ওইদিন দুপুরেও দার্জিলিং-কালিম্পং পাহাড়ে বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। সেখানে রাতে ঝড়, শিলাবৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। সমতলে বিকেলের পর শুরু হয় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি। শুক্রবার সমতলে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়, শিলাবৃষ্টির ‘হলুদ’ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, “দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং এবং আলিপুরদুয়ারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। জেলাগুলোতে ‘হলুদ’ সতর্কতা জারি হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত পাহাড়ের দার্জিলিং শহর, জলাপাহাড়, সোনাদা, বিজনবাড়ি, আপার রেলিং, ঘুম, টাইগারহিল, সুখিয়াপোখরি, সীমানা এলাকায় ভারী শিলাবৃষ্টি হয়। তারই জেরে বিজনবাড়ি, সোনাদা, সুখিয়াপোখরি এলাকায় স্কোয়াশ, ফুলকপি, ব্রোকোলি সহ বিভিন্ন সবজি খেত তছনছ হয়েছে। পাহাড়ে তামসং, গোল্ডেন ভ্যালির মতো কয়েকটি চা বাগান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নুরবং চা বাগানের মালিক সতীশ মিত্রুকা বলেন, “পাহাড়ের অন্তত পনেরোটি চা বাগান শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ডকুমেন্ট পাঠানোর ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় ফিচার আনছে WhatsApp! জেনে নিন খুঁটিনাটি]

এদিকে, ডুয়ার্সে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নাগরাকাটার আংরাভাসা-১ এবং ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা। বানারহাট ব্লকের মোগলকাটা চা বাগানে শিল পড়ে চা গাছের নতুন পাতা ঝরে গাছ ন্যাড়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৩৫ হেক্টর জমির চা গাছ। ঝড়ের তাণ্ডবে কলাবাড়ি চা বাগানের শ্রমিক বসতি এলাকার প্রচুর কাচা বাড়ি ধসে মাটিতে মিশেছে।আংরাভাসা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কলাবাড়ি চা বাগান ও খেরকাটা গ্রাম। কলাবাড়ি বাগানের চার্চ লাইনের মুনি মাঝি, লোকনাথ লাইনের মঙ্গল ওরাওঁ, বিছ লাইনের কাঞ্চন ওরাওঁদের মতো শ্রমিকদের বাড়ির টিনের ছাউনি উড়েছে। কলাবাড়ি চা বাগানের ম্যানেজার কল্লোল রায় জানান, বাগানের তিনটি বাড়ি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে এমন বাড়ির সংখ্যা আন্তত পঞ্চাশটি। এদিকে বানারহাট ব্লকের মোগলকাটা চা বাগানে ২৩৫ হেক্টার এলাকার চা গাছ নষ্ট হয়েছে।

চা বাগানের ম্যানেজার আনন্দ লস্কর জানান, ২০১২ সালেও বাগান শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই শতাধিক বাড়ি। নাগরাকাটার ভিডিও পঙ্কজ কোনার বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাণ সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে।” নাগরাকাটা ব্লকের পশ্চিম আংরাভাসার উত্তর ধুমপাড়া, তোতাপাড়া, কলাবাড়ি এলাকায় পঞ্চাশটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে প্রচুর গাছ। এদিকে ময়নাগুড়ি ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে কয়েকশো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্যাঙ্কান্দি ও বাগজান এলাকায়। খাগড়াবাড়ি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ব্যাঙ্কান্দি ও বাগজান এলাকায় কয়েকশো বাড়ির টিনের চাল ফুটো হয়ে৷ জালের মতো চেহারা নিয়েছে। এখানেও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

[আরও পড়ুন: নতুন বছরে চড়চড়িয়ে বাড়বে গরম, পয়লা বৈশাখের আনন্দ মাটি করবে বৃষ্টি?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement