Advertisement
Advertisement
Malda

মাল্টা লেবু চাষে মেতেছেন আমের জেলার চাষিরা, আশা দ্বিগুণ লক্ষ্মীলাভের!

বিদেশি প্রজাতির মাল্টা ফলিয়ে ফি বছরই দারুণ লাভ।

Farmers of Malda cultivate Malta lemons

ছবি- সংগৃহীত

Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:December 16, 2024 2:41 pm
  • Updated:December 16, 2024 2:41 pm  

বাবুল হক, মালদহ: আমের জেলায় মাল্টা ফলের চাষ! ধীরে ধীরে নজর কাড়ছে চাষিদের। আমবাগানের ফাঁকা জায়গায় মাল্টা লেবু চাষ করে এই শীতেও কার্যত বাজিমাত করলেন ইংলিশবাজারের অমৃতি এলাকার কৃষক সুপ্রতিম সাহা। তিনি জানান, এবারও লক্ষ্মীলাভ ভালোই হবে। আমচাষ যা উপার্জন হয় তার চেয়ে বেশি আয় হবে মাল্টা চাষে। ফলনও ভালো হয়েছে। বছর তিনেক আগে আমের জেলায় মাল্টা চাষ শুরু করেন সুপ্রতিম। ফি বছরই দারুণ লাভ। আমবাগানের ফাঁকা জমিতে মাল্টা ফলিয়ে এখন আমচাষিদেরও দিশা দেখাচ্ছেন অমৃতির কৃষক। 

সুপ্রতিম সাহার দাবি, যে বাগানে আম চাষ করে লাভ হত প্রায় ৫০ হাজার টাকা, সেখানে এই বিদেশি প্রজাতির মাল্টা ফলিয়ে লাভ অন্তত দেড় থেকে দুলক্ষ টাকা। মালদহ জেলায় তিনিই এখন একমাত্র চাষি, যিনি তাঁর আট বিঘা জমিতে মাল্টা ফলাচ্ছেন। তাঁর এলাকার অন্যান্য চাষিরা তাঁর কাছে এসে মাল্টা চাষ সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেছেন। ইদানিং উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে মাল্টা লেবুর চাষ শুরু করেছেন কিছু কৃষক। উত্তরের শহরগুলির বাজারে ইদানিং বিকোতেও দেখা যাচ্ছে। এই মাল্টা ফল দেখতে অনেকটা কমলালেবুর মতোই। কিন্তু আকারে ছোট। অনেকেই আবার ভুল করে নাগপুরের কমলা বলে ফেলেন। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ রসালো মাল্টা আরবীয় জাতের ফল। স্পেন, গ্রিস-সহ বিভিন্ন দেশে চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশেও চাষ হয়।

Advertisement

মালদহের উদ্যানপালন দপ্তরের উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক জানান, ‘‘আমের জেলা বলে খ্যাত এই মালদহের মাটিই যেন অন্যরকম। এই মাটিতে মাল্টা ফলের চাষ করেও সাফল্য মিলছে।’’ সুপ্রতিম সাহার কথায়, আমবাগান পরিচর্যায় খরচ অনেকটা বেশি। আমগাছের পরিচর্যা বেশি করতে হয়। সেই তুলনায় মাল্টা চাষে খরচ অনেক কম হচ্ছে। গাছের পরিচর্যারও তেমন প্রয়োজন হয় না। বছর তিনেক আগে আট বিঘা জমিতে তিনি শুরু করেন মাল্টা চাষ। তিন বছর পর গাছে ফল হচ্ছে। আগের মরশুমে মাল্টা চাষ করে দেড় লক্ষ টাকা রোজগার করেন তিনি। এবারও তাঁর বাগানে গাছে গাছে শুধু মাল্টা ফল। জানুয়ারি থেকেই এই ফল পেড়ে বিক্রি করবেন। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে মাল্টা কেনার জন্য বরাত দিয়ে গিয়েছেন। দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা লাভ হতে পারে এবার।

জেলার উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে খবর, মালদহে বছর পাঁচেক আগে জেলায় প্রথম মাল্টা ফলের চাষ শুরু করেন এক কৃষি বিজ্ঞানী ড. শান্তনু ঝা। বিধানচন্দ্র কৃষি বিদ্যালয়ের অধ্যাপক শান্তনুবাবু ইংলিশবাজার ব্লকের শোভানগর গ্রামে তাঁর নিজের নয় বিঘা জমিতে ২০১৯ সালে মাল্টা ফলের চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেন। তার আগে পশ্চিমবঙ্গে এই ফলের চাষ হয়নি। রাজ্যে প্রথম মালদহে মাল্টা ফলের চাষ করে সফলতা অর্জন করেন ওই কৃষি বিজ্ঞানী অধ্যাপক শান্তনু ঝা। তারপর চাষ শুরু করেছেন সুপ্রতিম সাহা। জেলার উদ্যানপালন দপ্তরের উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক জানিয়েছেন, অত্যন্ত কম খরচে এই ফলের চাষ করা সম্ভব। আরব জাতের এই ফল বর্তমানে বাংলাদেশে খুব উৎপাদন হয়। সেই ফলের চাষ মালদহে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই জেলায় চারা গাছ লাগিয়ে সেই চাষে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। এই ফলের চাষ লাভজনক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement