Advertisement
Advertisement
কালোজিরে

বাড়ির অল্প জায়গায় করুন কালোজিরে চাষ, জেনে নিন পদ্ধতি

কালোজিরে চাষ করে প্রচুর লক্ষ্মীলাভ সম্ভব।

Farmers cutivates black cumin for extra benefit
Published by: Sayani Sen
  • Posted:October 2, 2019 6:59 pm
  • Updated:October 2, 2019 7:03 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রান্নার অন্যতম উপাদান মশলা। এখন মশলা চাষ করে শীতকালে ভাল আয় করার সুযোগ রয়েছে। বাঙালির হেঁশেলে মশলার অন্যতম উপাদান কালোজিরে। এর নিজস্ব গন্ধ খাবারের স্বাদ আনতে পারে। সুবাস মন ভরায়। শুধু খাবারের মশলা হিসেবে নয়, কালোজিরের গন্ধে পোকামাকড় দূরে থাকে। জামাকাপড় সংরক্ষণে তাই অনেকে এটি ব্যবহার করেন। আবার সর্দিজ্বর সারাতেও কালোজিরে কাজে দেয়। মৌমাছি, বোলতা, বিছে কামড় দিলে ক্ষতস্থানে কালোজিরে বেঁটে লাগালে উপশম দেয়। কালোজিরে চাষ করে ভাল আয়েরও সুযোগ রয়েছে।

[আরও পড়ুন: বিপুল লক্ষ্মীলাভে ভরসা মাছ চাষ, চারা বিলি পঞ্চায়েত সমিতির]

মূলত শীতকালীন ফসল এটি। অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত কালোজিরের বীজ বোনার উপযুক্ত সময়। ভাল করে চাষ দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। মাটি সমান করে নিতে হবে। আল দিয়ে ১.৫ মিটার বাই ৫ মিটার মাপের প্লট করে নিতে হবে। দুইটি প্লটের মাঝে ৩০ থেকে ৪০ সেমি নালা রাখতে হবে সে বা নিকাশির জন্য। প্রতি একরে ৩ কেজি বীজের প্রয়োজন। বীজ বোনার আগের দিন জলে ভিজিয়ে নিয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। তাতে অঙ্কুরোদগম তাড়াতাড়ি হয়। বীজ বোনার আগে কেজি প্রতি ৩ গ্রাম হিসেবে এগ্রোসান জি-এন বা সেরেসান দিয়ে বীজ শোধন করে নিতে হবে। উন্নত জাত হিসেবে এনএস-৪৪, এনএস-৩২ প্রভৃতি চাষ করা যেতে পারে।

জমি তৈরির সময় প্রতি একরে ৬-৮ টন গোবর সার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। এছাড়া জমি তৈরির সময় ১০ কেজি ইউরিয়া, ৪০ কেজি সুপার ফসফেট ও ১৬ কেজি মিউরেট অফ পটাশ প্রতি একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। বীজ বোনার ৩০-৪০ দিন পর অর্থাৎ প্রথমবার আগাছা দমনের পর ১০ কেজি ইউরিয়া চাপান সার হিসেবে দিতে হবে। এই সময় গাছ ৫ সেমি লম্বা হয়। গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৭-৮ সেমি রেখে বাকি চারা তুলে দিতে হবে। ৫০-৬০ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বার নিড়ানি দিয়ে আগাছা সাফ করতে হবে। বীজ বোনার ৩-৪ দিনের মধ্যে হালকা সেচ দিতে হয়। প্রথম নিড়ানির পর দ্বিতীয় সেচ ও গাছে ফুল আসার মুখে অর্থাৎ ৮০-৮৫ দিনের মাথায় সেচ দিতে হবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বিপুল আয়ের নয়া দিশা লেমন গ্রাস, চাষের উদ্যোগ জেলা প্রশাসনের]

কাটুই পোকা গাছের প্রচণ্ড ক্ষতি করতে পারে। চাষের সময় মাটিতে সার প্রয়োগ করলে উপকার মেলে। ফল ছিদ্রকারী পোকা ফল আসার সময় ক্ষতি করে। পোকার লার্ভা বা শুককীট গাছের ক্ষতি করে। বাড়ন্ত ফলের গা ফুটো করে দেয়। ফলের নরম অংশ খেয়ে ফেলে। পোকা দেখা দিলে গাছে প্রতি লিটারে ৩-৪ গ্রাম হিসেবে অথবা নুভাক্রন প্রতি লিটারে ১.৫ মিলি হিসেবে ৭-১০ দিন অন্তর দুইবার স্প্রে করতে হবে। গাছের যে কোনও অবস্থায় ছত্রাকজনিত ঢলে পড়া রোগ দেখা দিতে পারে। রোগ লাগা গাছ আচমকা শুকিয়ে মারা যায়। রোগ দমনে বীজ বোনার আগে ক্যাপটান বা ব্যাভিসটিন প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে দুই গ্রাম পরিমাণ মিশিয়ে শোধন করে নিতে হবে। ধসা রোগের আক্রমণে গাছের পাতায় গাঢ় রঙের দাগ দেখা দেয়। শেষে গাছের পাতা ও কান্ড শুকিয়ে কুঁকড়ে যায়। মেঘলা ও ভেজা আবহাওয়ায় এই রোগের প্রকোপ বেশি। আক্রান্ত গাছে ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি লিটারে দুই গ্রাম হিসেবে স্প্রে করতে হবে। ১০-১২ দিনের মাথায় আবার স্প্রে করতে হবে।

গাছ ও ফলের রঙ হলদে হতে শুরু করলে গোড়া-সহ গাছ তুলে নিতে হবে।গাছের ফলগুলি ভিতর দিকে রেখে গাদা করে ৭ থেকে ১০ দিন জাঁক দিতে হবে।পরে গাছ ছড়িয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকনো গাছ পিটিয়ে বা মাড়াই করে কালোজিরে সংগ্রহ করে নিতে হবে। প্রতি একরে ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি বীজ পাওয়া সম্ভব। তার জন্য উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করতে হবে। সতর্কতা নিতে হবে ও সঠিক নজরদারি রাখতে হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement