স্টাফ রিপোর্টার, বাঁকুড়া: ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone Mocha) আতঙ্কে তাড়াহুড়ো করে বোরো ধান কেটে চরম বিপাকে বাঁকুড়ার (Bankura) চাষিরা। ধানের গুণমান কম হওয়ায় আড়তে বিক্রি হচ্ছে না সেই ধান। পাশাপাশি কুইন্টাল প্রতি ধানের দাম নেমে ঠেকেছে তলানিতে। মেশিনে কাটা ধানের চাহিদা আরও কম। একদিকে চাহিদা কম আর অন্যদিকে দাম কম এই দুই জোড়া ফলায় চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। চাষিদের দাবি, এবার ফলন ভাল হয়েছে ঠিকই। কিন্তু যে হারে খরচ হয়েছে, তাতে ধানের দাম না উঠলে সেভাবে লাভের মুখ দেখা সম্ভব হবে না।
কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর, ভূগর্ভস্থ জলস্তর নিচে নেমে যাওয়ায় জলের যোগানের অভাবে এবার প্রায় ২০ শতাংশ কম জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। তবে রোগ পোকার আক্রমণ কম থাকায় চাষিরা অনেকটা নিশ্চিন্ত ছিলেন। মাঝে একবার শিলাবৃষ্টি হলেও ধানের সেভাবে ক্ষতি করতে পারেনি। ফলে এবার মোটা লাভের আশায় ছিলেন চাষিরা। কিন্তু ধান ওঠার মুখে ঘুর্ণিঝড়ের আতঙ্কে চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। কৃষি দপ্তর সূত্রে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, ৬০-৭০ শতাংশ ধান পাকলেই ঘরে তোলার। চাষিরা আরও তাড়াহুড়ো করে ঘরে ধান তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। যার জেরে বহু চাষি কার্যত অপুষ্ট ধান ঘরে তুলে ফেলেছেন। সেই ধান কিনতে চাইছেন না আড়তদাররা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক আড়তদার বলেন, ‘‘প্রায় কুড়ি শতাংশ ধান কাঁচা। ওই ধানের চাল কালো হয়ে যাবে। ওই ধান রাইস মিল নিতে চাইছে না।’’ মাঠ থেকে আনা ঝাড়ানো ধান এখন রোদে শুকোচ্ছেন চাষিরা। অন্যদিকে হারভেস্টিং মেশিনে ঝাড়ানো ধানের থেকেও কার্যত মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন আড়তদার। ধান চাষি কৃষ্ণগোপাল খাঁ বলেন, ‘‘দুর্যোগের ভয়ে খড়ের আশা ছেড়ে হারভেস্টিং মেশিনে ধান ঝাড়িয়েছি। কিন্তু সেই ধান বিক্রি হচ্ছে না। ধান বিক্রি না হওয়ায় খরচের টাকাও কাউকে দিতে পারছি না।’’ ধানের দাম নিয়েও চরম অস্বস্তিতে রয়েছেন বোরো চাষিরা। খোলা বাজারে চালের দাম কমেনি। কিন্তু মাত্র দু’মাসে ধানের দাম কুইন্টাল প্রতি প্রায় পাঁচশো টাকা নিচে নেমেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.