বাবুল হক, মালদহ: একশো টাকায় এক কেজি বেগুন! তা কিনতেও কার্পণ্য করছেন না কেউই। আসলে পুরাতন মালদহের (Maldah) নবাবগঞ্জের ‘নবাবি বেগুন’ বলে কথা। আকারে অনেক বড়। দারুণ সুস্বাদু। মিষ্টি বেগুন। এক-একটি ওজনে দেড় থেকে দু’কেজির বেশি। একটা সময়ে নবাবরা কৃষকদের দিয়ে তাঁদের জমিতে এই বেগুন চাষ করাতেন। সেই থেকেই এই বড় বেগুন নবাবগঞ্জের বেগুন নামেই পরিচিত। স্থানীয়রা আবার এই বড় বেগুনের আলাদা নামও দিয়েছেন। অনেকেই বলেন, এটি ‘বালিয়া’ বেগুন।
বাজারে সাধারণত দেশি বেগুন মিলছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। কিন্তু ‘বালিয়া বেগুন’? ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। আর এতেই মুখে চওড়া হাসি চাষিদের। শীতের শুরুতেই জমি থেকে এই বালিয়া বেগুন (Brinjal)তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এবারেও রেকর্ড ফলন হবে, বলছেন চাষিরাই। চাষিদের দাবি, মালদহ জেলাজুড়েই এই বেগুনের বেশ কদর রয়েছে। হালকা সবুজ রঙ। দেখতে অনেকটা সাদাটে। ইংলিশবাজার শহরের মকদমপুর বাজারের এক সবজি বিক্রেতা উদয় মণ্ডল বলেন, “সাধারণ বেগুনের চেয়ে তিন-চারগুন দাম নবাবগঞ্জের বেগুনের। সুস্বাদু বলেই মানুষ কিনছেন।’’
মালদহের উদ্যানপালন দপ্তরের উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক জানিয়েছেন, এ রাজ্যে শুধুমাত্র মালদহ জেলাতেই নবাবগঞ্জ জাতের বেগুন চাষ হয়। এই জাতের বেগুনের বীজ বাজারে পাওয়া যায় না। চাষিরা (Farmers) নিজেদের উদ্যোগেই বীজ তৈরি করেন। পরের বছর ফের সেই বীজ জমিতে রোপন করে নবাবগঞ্জের বেগুন চাষ করেন। মালদহ জেলার প্রায় ১৬০ হেক্টর জমিতে নবাবগঞ্জের বেগুন চাষ হয়। ওল্ড মালদহের নবাবগঞ্জের পাশে মহানন্দা নদী টপকে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এই বেগুনের চাষ হচ্ছে।
এছাড়াও ডাঙাপাড়া, বেলাহার ও সাঞ্জাইল এলাকায় এই বেগুনের চাষ খুব বেশি হয়। রতুয়ার মহারাজপুর ও গাজোলের পাণ্ডুয়া ও বৈরগাছি অঞ্চলেও নবাবগঞ্জ জাতের বেগুন চাষ হয়ে থাকে। গাঙ্গেয় পলিমাটিতেই চাষ ভাল হয়। চলতি সপ্তাহ থেকে জমি থেকে বেগুন তোলার কাজ শুরু হয়েছে। অক্টোবর মাসে এই বেগুনের গাছের চারা লাগানো হয়। ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই গাছে ফলন চলে এসেছে। চাঁচোল-২ নম্বর ব্লকের মালতীপুর গ্রামের চাষি রহিমুল শেখ বলেন, ‘‘জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের সঠিক পরামর্শ অনুযায়ী আমরা এই চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছি। পাইকাররা নির্দিষ্ট দাম দিয়ে নবাবগঞ্জের বেগুন কিনে নিয়ে যেতে শুরু করেছেন।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.