দেবব্রত দাস, খাতড়া: আশঙ্কাই সত্যি হল। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি মরশুমে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হল না বাঁকুড়া জেলায়। এবার আমন ও আউশ মিলিয়ে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টর। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাঁকুড়া জেলায় ধান চাষ হয়েছে প্রায় তিন লক্ষ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬০ হাজার কম। বৃষ্টির অভাবেই কিছু এলাকায় চাষিরা এবার ধান চাষ করতে পারেননি বলে কৃষিদপ্তরের দাবি। তার জেরেই এবার পূরণ হল না লক্ষ্যমাত্রা।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ায় ২০২১ সালে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। ২০২২ সালে বাঁকুড়া জেলায় প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। এবার আমন ও আউশ মিলিয়ে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল কমবেশি ৩ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টর। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে জুলাই মাস পর্যন্ত জেলায় অর্ধেকের বেশি জমিতে ধানের চারা রোপণ করা যায়নি। আগস্ট মাসে অবশ্য পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। আগস্টের শেষ সপ্তাহে মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধার থেকে সেচখালে জল ছাড়া হয়। তার ফলে একেবারে শেষ মুহূর্তে কিছু এলাকায় জমিতে ধানের চারা রোপণ করেন চাষিরা। তবে তাতেও লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশ কিছুটা দূরেই রয়েছে ধান চাষ। কৃষিদপ্তরের বাঁকুড়ার ডেপুটি ডিরেক্টর নারায়ণচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “জুন ও জুলাই মাসে ভারী বৃষ্টি সেভাবে না হওয়ায় ধান চাষ দেরিতে শুরু হয়েছে। আগস্ট মাসে সেই ঘাটতি অবশ্য ছিল না। কিন্তু অনেক এলাকায় বৃষ্টির অভাবে বীজতলা হয়নি। তাই চাষিরা ধান চারা রোপণ করতে পারেননি। তাই লক্ষ্যমাত্রার থেকে প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর কম জমিতে এবার ধান চাষ হয়েছে।”
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির অভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাঁকুড়া সদর ও খাতড়া মহকুমার চাষিরা। তুলনায় বিষ্ণুপুর মহকুমায় ধান চাষ দেরিতে হলেও হয়েছে। খাতড়া মহকুমার রানিবাঁধ, সারেঙ্গা, রাইপুর, ইন্দপুর, হিড়বাঁধ, সিমলাপাল ব্লক এলাকায় ধান চাষ গতবারের তুলনায় অনেকটাই কম হয়েছে। তবে আগস্টের শেষ সপ্তাহে কংসাবতী জলাধার থেকে সেচখালে জল ছাড়ায় দক্ষিণ বাঁকুড়ার কিছু এলাকায় চাষিরা ধান চাষ করেছেন। তাতেও অবশ্য লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এরই মধ্যে কৃষিদপ্তর অবশ্য ফসল বিমার সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছে। ফসল বিমার জন্য চাষিদের নাম নথিভুক্তিকরণের শেষ দিন ছিল ৩১ আগস্ট। তা বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.