Advertisement
Advertisement

Breaking News

Lemon

হেক্টর প্রতি লেবুচাষে হতে পারে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়! কী বলছেন গবেষকরা

সঠিক পরিচর্যা ও যত্ন নিলে ভালো ফলনও পাওয়া যায়। লিখছেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগ তত্ত্ব বিভাগের গবেষক ঋত্বিক সাহু ও বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি জীব রসায়ন বিভাগের গবেষক পার্থ মণ্ডল।

Details of lemon cultivation

সংগৃহীত ছবি।

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:November 21, 2024 1:53 pm
  • Updated:November 21, 2024 1:53 pm  

লেবুর বহুবিধ গুণ রয়েছে। বাজারে লেবুর চাহিদা এবং তার জোগান অনুযায়ী লেবুর মূল্য যথেষ্টই রয়েছে। লেবুচাষে অচিরেই কৃষক লাভের মুখ দেখতে পাবেন। সঠিক পরিচর্যা ও যত্ন নিলে ভালো ফলনও পাওয়া যায়। প্রতি বছরে হেক্টর প্রতি ৮০ হাজার থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। লিখেছেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগ তত্ত্ব বিভাগের গবেষক ঋত্বিক সাহু ও বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি জীব রসায়ন বিভাগের গবেষক পার্থ মণ্ডল

প্রথম পর্ব

Advertisement

লেবু ভারতের অন্যতম ও সমাদৃত ফল। এটি রুটেসি পরিবারের অধীনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফল। মনে করা হয় বেশিরভাগ লেবুর জাতের উৎপত্তি ক্রান্তীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে। ভারত, চীন ও এই দুই দেশের মধ্যবর্তী অঞ্চল বিশেষ করে দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে। লেবু তার চমৎকার স্বাদ এবং পুষ্টিগুণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এটি ছোট চিরহরিৎ গাছের একটি প্রজাতি। ভারতে এই ফলের উৎপাদন প্রায় ৩৫ লক্ষ ১৬ হাজার ৭২০ টন। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের উৎপাদন প্রায় ৯৪ হাজার ৪২০ টন।

লেবুর রসে পাঁচ শতাংশ অম্ল থাকে যার মধ্যে বেশিরভাগটাই সাইট্রিক অ্যাসিড এবং রসের পিএইচ ২ থেকে ৩ হয়ে থাকে। তাই লেবুর স্বাদ আম্লিক হয়। লেবুর ছাল বাদে লেবুতে শতকরা ১০ গ্রাম শর্করা, ০.৩ গ্রাম ফ্যাট, ১.১ গ্রাম প্রোটিন, ০.০৪ মিলিগ্রাম থায়ামিন ০.০২ মিলিগ্রাম রাইবোফ্ল্যাভিন, ০.০২ মিলিগ্রাম নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম, লোহা, পটাশিয়াম ইত্যাদি খনিজ বর্তমান। লেবুর বহিঃত্বকে ৬ শতাংশ এসেনসিয়াল তৈল থাকে যার মধ্যে ৫ শতাংশ সিট্রাল এবং ৯০% সিট্রোনেলাল ও লিমোনেলাল থাকে। এছাড়া আলফা-টেরপিনোল, জেরানাইল অ্যাসিটেট এবং লিনাইল বর্তমান। প্রত্যহ নির্ধারিত পরিমাণ লেবুর রস পান করলে কিডনি বা বৃক্কের সমস্যা থেকে সমাধান মেলে। বর্তমান যুগে মানুষ স্থূলতা নিয়ে খুব চিন্তিত। উপযুক্ত পরিমাণে লেবু খেলে স্থূলতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বিষাক্ত কীটের কামড়ে লেবুর রস প্রয়োগ করলে সুরাহা মেলে।
লেবুর মধ্যে থাকা লিমোলেড ক্যানসার প্রতিকারের সহায়তা করে। ত্বকের স্বাস্থ্য পরিচর্যাতে লেবু অনন্য। স্কার্ভি নামক মুখের রোগ নিরাময়ে লেবু ব্যবহার করা হয়। লেবুর শরবত, আচার, জেলি ইত্যাদি প্রস্তুতিতে বহুলভাবে ব্যবহার করা হয়। লেবুতে লিমলয়েড থাকার কারণে এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা পেপটিক আলসার নিরাময়ে সহায়তা করে। চুলের খুশকি দূর করতেও লেবু ব্যবহার করা হয়।

লেবুর জাত
লেবুর অনেক জাত আছে। তার মধ্যে পাতি (রসরাজ), কাগজি (বিক্রম, প্রমালিনি), গন্ধরাজ (পন্থ লেমন-১) মোসাম্বি (নাগপুর), বাতাবি (কৃষ্ণনগর-১,২), মালটা (বারি-১) উল্লেখযোগ্য। এগুলি সাধারণত সমভূমিতে চাষ হয়। এছাড়াও লেবুর আর একটি জাত কমলা পার্বত্য এলাকাতে চাষ হয়ে থাকে।

উৎপাদন পদ্ধতি
মাটি: লেবু হালকা দোঁয়াশ ও নিষ্কাশন সম্পন্ন মধ্যম আম্লিক মাটিতে ভালো হয়। জমি তৈরি চারা রোপন করার ১৫ থেকে ২০ দিন পূর্বে ২.৫ x ২.৫ বা ৩.৫ x ৩.৫ মিটার দূরত্বে (বাতাবি ৬.৫ x ৬.৫ মিটার) ৬০ x ৬০ x ৬০ সেন্টিমিটার মাপের গর্ত করতে হবে। গর্তের উপরের মাটির সঙ্গে ১০-১৫ কেজি জৈব সার, ২০০ গ্রাম টিএসপি এবং ২০০ গ্রাম এমওপি সার ভালোভাবে মিশিয়ে গর্তভরাট করে তাতে জল দিতে হবে। এই হিসেবে প্রতি হেক্টর জমিতে ১১১১-১৬০০ চারা দরকার হয়।
রোপণ পদ্ধতি
লেবুর চারা সারি বা বর্গাকার প্রণালীতে রোপত করলে বাগানের পরিচর্যা এবং ফল সংগ্রহ সহজ হয়। পাহাড়ি ঢালু জমিতে আড়াআড়ি ভাবে সারিবদ্ধ ভাবে চারা রোপণ করলে ভূমিক্ষয় কম হয়। চারা রোপনের সময়মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত চারা লাগানোর উত্তম সময়‌ তবে যদি জল সেচের সুবিধা থাকে তাহলে সারা বছরই চারা লাগানো যায়।
চারা রোপণ ও পরিচর্যা
জমি তৈরি করার ১৫ থেকে ২০ দিন পর চারা বা কলম রোপণ করা হয়। চারা গর্তের ঠিক মাঝখানে সোজাভাবে রোপণ করতে হয় এবং মাটি হাত দিয়ে চেপে ভালোভাবে বসিয়ে দিতে হয়। তার পর চারাটি খুঁটির সাথে বেঁধে দিতে হবে এবং চারার গোড়ায় জল দিতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিটি চারায় পৃথকভাবে বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
সার প্রয়োগ
ভালো ফলন পেতে হলে নিয়মিতভাবে সময় মতো সার প্রয়োগ করতে হবে। লেবুতে বছরে তিনবার (আষাঢ়, আশ্বিন ও ফাল্গুন) সার প্রয়োগ করা হয়। প্রতি গাছে ১০ কেজি জৈব সার, ২০০ গ্রাম নাইট্রোজেন (৪৪৫ গ্রাম ইউরিয়া), ৬৫ গ্রাম ফসফরাস (৪০৫ গ্রাম সিঙ্গেল সুপার ফসফেট), ১৩৫ গ্রাম পটাশিয়াম (২২৫ গ্রাম মিউরেট অফ পটাশ) প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া ৫০ গ্রাম জিঙ্ক সালফেট, ৫ গ্রাম কপার সালফেট, ১০ গ্রাম বোরাক্স, ১ গ্রাম অ্যামোনিয়াম মলিবডেট গাছপ্রতি প্রয়োগ করা হয়।
সার প্রয়োগ করার পদ্ধতি
উল্লেখিত সার সমান তিন কিস্তিতে গাছের গোড়া হতে কিছু দূরে ছিটিয়ে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। পাহাড়ের ঢালে ডিবলিং পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
জলসেচ এবং নিষ্কাশন
খরা মরসুমে দুই থেকে তিনবার জল প্রয়োগ করা দরকার। তবে গাছের গোড়ায় জল জমে যাওয়া লেবু গাছের জন্য ক্ষতিকর। এইজন্য বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় যাতে জল না জমে সেজন্য নালা করে জল বার করার ব্যবস্থা করতে হবে।
আগাছানাশ এবং অঙ্গ ছাঁটাই
লেবু বাগানে নিয়মিত আগাছা নাশ করা আবশ্যক। অন্তত প্রথম তিন থেকে চার মাস নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করা অতি আবশ্যক, তবে এক্ষেত্রে কোনওরকম আগাছা নাশক ওষুধ ব্যবহার করা কাম্য নয়। গাছের গোড়ার দিকে জল শোষক শাখা বের হলেই কেটে ফেলতে হবে। এছাড়া গাছের ভিতরের দিকে যেসব ডালপালা সূর্যালোক পায় না সেইসব দুর্বল ও রোগাক্রান্ত শাখা-প্রশাখা নিয়মিত ছাঁটাই করে দিতে হবে। ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্তিক মাসের মাঝামাঝি অর্থাৎ সেপ্টেম্বর-অক্টোবর হল ছাঁটাই করার উপযুক্ত সময়। ছাঁটাই করার পর ওই স্থানে বোর্দো মিশ্রণ প্রলেপ দিতে হবে যাতে ছত্রাক আক্রমণ করতে না পারে। লেবু গাছের যদি আমরা সঠিকভাবে যত্ন নিতে পারি তাহলে তা খুব ভালো ফলন দিতে বাধ্য। এক্ষেত্রে আমাদের উচিত লেবুর ভালো জাতের চারা সংগ্রহ করা এবং তা সব সময় বিশ্বস্ত নার্সারি থেকে ক্রয় করা। বর্তমানে কৃষি কাজের গবেষণার সহায়তায় অনেক ভালো জাতের লেবু চারা পাওয়া সম্ভব যা ভালো ফলন দেওয়ার সাথে সাথে রোগ পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন হয়। আমাদের উচিত এইসব জাতের চারা গাছ ব্যবহার করা। এর সঙ্গেই সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণে সার ব্যবহার করা, সঠিক সময়ে সেচ দেওয়া, অতিরিক্ত সেচ না দেওয়া, এইসব দিকেও নজর রাখতে হবে। সার এবং জল সেচের অভাবে যেমন ফল দেরিতে আসে তেমন ফুল ধরার সময় মাটিতে অতিরিক্ত জল থাকলে ফুল ও কচি ফল ঝরে যায়। চারা লাগানোর পর প্রথম দুই থেকে তিন মাস জল দেওয়া এবং আগাছা পরিষ্কার করা ছাড়া আর তেমন কিছুই করতে হয় না। গাছ একটু বড় হলে কুড়ি দিন অন্তর সর্ষের খোল পচা জল হালকা করে গাছের গোড়ায় দিতে হবে। সাধারণত এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে লেবু গাছে ফল ধরবে। বর্ষা আসার পূর্বে সাত দিন অন্তর কয়েকবার ছত্রাক নাশক স্প্রে করলে ভালো হয়। এছাড়াও বছরে তিন থেকে চারবার কোনও ভালো কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। তবে লেবু গাছে ফুল থাকা অবস্থাতে কীটনাশক স্প্রে না করাই ভালো। যেহেতু আমাদের দেশের আবহাওয়া লেবু চাষের জন্য উপযোগী তাই আমরা যদি উপরিক্ত উৎপাদন পদ্ধতিগুলোর সঙ্গে এই ছোটখাটো টোটকা গুলি মেনে চলি আমরা আরও অধিক ফলন পেতে বাধ্য।
ফলন
সাধারণত ফলন ৩ টন প্রতি একর এবং গাছ প্রতি ফল পাতিলেবু ৬০০ থেকে ৮০০ টি, কাগজি লেবু ২০০০ থেকে ৪০০০ টি মোসাম্বি ও গন্ধরাজ ৩০০-৪০০ টি। জনপ্রিয় ও ব্যাপকভাবে উত্থিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় ফলের মধ্যে লেবুর একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। এর স্বাস্থ্যকর প্রকৃতি, বহুগুণ পুষ্টি এবং ওষধিমান একে অতি গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। তবে এই লেবুর ফলন কয়েকটি রোগ ও পোকার দ্বারা প্রায়ই প্রতিহত হয়। লেবুর ফলন ভালো পাওয়ার জন্য এগুলির উপসর্গ এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আমাদের জেনে রাখা উচিত।
রোগ
লেবুর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ হল গ্যামোসিস, স্ক্যাব, ক্যাঙ্কার ইত্যাদি। গ্যামোসিস এই রোগের উপসর্গগুলি হল, মাটির সমতলের কাছে কাণ্ডের মূল অংশে প্রথমে বড় বড় কালো দাগ দেখা যায়। প্রথম লক্ষণ হল ছালের গাঢ় দাগ যা কাঠের দিকে অগ্রসর হয়। এই ধরনের অংশের ছাল শুকিয়ে যায়, সঙ্কুচিত হয়, ফাটল ধরে এবং লম্বালম্বি ভাবে উলম্ব স্টিপে ছিঁড়ে যায়। গোড়ায় ছাল নষ্ট হয়ে যায়, ছাল শুকিয়ে যায় এবং প্রচুর পরিমাণে আঠা নির্গত হয়। মৃত্যুর আগে গাছটি সাধারণত ফুলে যায় এবং ফল পরিপক্ক হওয়ার আগেই মরে যায়। এই রোগের জন্য দায়ী জীবাণুটি হল ফাইটোফথোরা সিট্রোফথোরা নামক একটি ছত্রাক। বেশি বৃষ্টিপাতের এলাকায় এই রোগটি মারাত্মক হয়।
প্রতিকার
পর্যাপ্ত জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখা উচিত। যথেষ্ট উঁচু স্থান নির্বাচন করা উচিত গাছ লাগানোর জন্য। গাছের কাণ্ডের চারপাশে প্রায় ৪৫ সেন্টিমিটার একটি অভ্যন্তরীণ বলয়ের ব্যবস্থা করা উচিত। কাণ্ডের আঘাত এড়ানো উচিত যা কৃষিজ যন্ত্রপাতির দ্বারা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বছরে অন্তত একবার মাটির স্তর থেকে প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার উচ্চতায় বোর্দো মিশ্রণ দিয়ে পেন্টিং করা দরকার। একটি ধারাল ছুরি দিয়ে রোগাক্রান্ত অংশ কেটে বোর্দো পেস্ট দিয়ে দেওয়া উচিত এবং তারপর ০.৩% ফোসেটাইল-এল স্প্রে করলে রোগটি ছড়িয়ে পড়া কমে যায়। এছাড়া ০.২% মেটাল্যাক্সিল এবং ০.৫% ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি দিয়ে মাটি ভেজানো যেতে পারে।স্ক্যাবরোগটি পাতা, ডাল এবং ফল আক্রমণ করে। প্রাথমিক পর্যায়ে পাতায় কতগুলি ছোট অর্ধস্বচ্ছ বিন্দু দিয়ে গঠিত যা তীক্ষ্ণভাবে সংজ্ঞায়িত পুস্তুলার উচ্চতায় পরিণত হয়। এই ক্ষতগুলির সাথে সম্পর্কিত বিপরীত পৃষ্ঠটি গোলাপি থেকে লাল কেন্দ্রের সঙ্গে কটি বৃত্তাকার বিষন্নতা দেখায়। পরবর্তী পর্যায়ে পাতা প্রায়শই বিকৃত আকৃতির হয়ে যায়। ডালপালাতেও এইরকম ক্ষত তৈরি হয় এবং আক্রান্ত ডালগুলো শেষ পর্যন্ত মারা যায়। ফলের ক্ষেত্রে ক্ষতগুলি কতগুলো কর্কি অনুমান নিয়ে গঠিত। ফলের পৃষ্ঠ রুক্ষ এবং বিকৃত হয়ে যায়। এই রোগের জন্য দায়ী জীবাণুটি হল এলসিনো ফাউসেটি নামক একটি ছত্রাক। এই রোগটি নিম্ন তাপমাত্রা এবং উচ্চ আর্দ্রতার মধ্যে একটি সমস্যা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement